তুষার কান্তি সরকার : নারদ হালদার। জেলে পরিবারের সন্তান। ক্লাস ফাইভের পর আর পড়া হয়নি টাকার অভাবে। বাপ-দাদার সঙ্গে মাছ ধরতে গেছে জালের নৌকায়। দুটাকা আসলে সংসারের সাশ্রয়। পেটের খিদে যেখানে বড় লেখাপড়া সেখানে তুচ্ছ মনে হয়েছে ওদের কাছে।
যৌবনে জাল-নৌকা আর জীবনের প্রতি বিরক্ত হয়ে একদিন ঢাকা চলে আসে নারদ। বাস্তবতার আগুনে পুড়ে কয়লা হয় দেহ-মন। প্রচণ্ড পরিশ্রম আর দিনের পর দিন উপোষ থাকায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। টিবিতে আক্রান্ত হয়। মনের জোর আর বন্ধু-বান্ধবের সহযোগিতায় একসময় ভালো হয়ে ওঠে। কিন্তু শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা থেকেই যায়। আবার টাকা রোজগারের চিন্তা। অক্লান্ত পরিশ্রম। দিনের পর দিন উপোষ। আবার শরীর বিদ্রোহ করে। প্রচণ্ড অসুস্থতার পর ডাক্তাররা ওর রোগ নির্ণয় করেনPost Tuberculosis B/L Lung Bronchietasis (Damaged more than 50% B/L Lung). চলতে থাকে চিকিৎসা। বন্ধু-বান্ধবদের সহযোগিতা আর ধার-দেনা করেও রোগ থেকে মুক্তি মেলে না। বক্ষব্যাধি হাসপাতাল অনেক চেষ্টা করেও রোগ মুক্তির বার্তা ওকে শোনাতে পারেনি। ফুসফুসের ৫০% নষ্ট। শারিরীক সক্ষমতাও নেই। ধুকে ধুকে মরা ছাড়া বাংলাদেশে ওর কোনো চিকিৎসা নেই।
৩৮ বছরের হাড্ডিসার নারদ এখন রাজবাড়ি জেলার রতনদিয়া গ্রামে থাকে। মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ও। ক্ষয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে। ও জানে, সামনে ওর নিশ্চিত মৃত্যু। তবু বাঁচার স্বপ্ন ওর চোখে-মুখে। ও এখন এক মুহূর্তও অক্সিজেন ছাড়া থাকতে পারে না। চলতে পারে না। বুক ভরে নিশ্বাস নিতে পারে না। কথা বলতে প্রচণ্ড কষ্ট হয়। ঠাণ্ডা-গরমে সমস্যা হয়। কাশি দিলে গলগল করে রক্ত পড়ে। রক্ত বন্ধ করতে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকতে হয় ১০/১৫ দিন। নির্দিষ্ট ওষুধের সাথে চলে কড়া এন্টিবায়োটিক। তখন ওর মুখের দিকে তাকানো যায় না। কষ্ট হয়, প্রচণ্ড কষ্ট।
মানুষ বাঁচতে চায়। নারদেরও। তাই বাঁচার স্বপ্ন নিয়ে যোগাযোগ করতে থাকে ভারতে বিভিন্ন হাসপাতালে। একসময় সাড়া দেয় চেন্নাই এপোলো হাসপাতাল। আশ্বাস দেন তারা রোগ মুক্তির। বেঁচে থাকার মূল্য নির্ধারণ করেন সাড়ে ২৬ লাখ রুপি। মেজর দুটো অপারেশন হবে। একজনকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া, ওখানে থাকা-খাওয়া, পরবর্তী যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা… সবমিলিয়ে বাংলাদেশের ৩২ থেকে ৩৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। যে নিঃস্ব পরিবারের ৩৫ হাজার টাকা নেই সেই পরিবারটি কি করে ৩৫ লাখ টাকা জোগাড় করবে?
নারদের বেঁচে থাকার ইচ্ছে প্রবল। পরিবারের সামর্থ্য নেই। কিন্তু আমাদের আছে। বাংলাদেশের আছে। আমরা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি পদ্মাসেতুর মতো সেতুও আমরা নিজেদের টাকায় করতে পারি। আমরা নারদকেও বাঁচাতে পারব। দেশের ১৭ কোটি মানুষ যদি একটি করে টাকা দেয় তাহলে ১৭ কোটি টাকা। নারদের চিকিৎসায় এতো টাকার প্রয়োজন নেই। শুধু ৩৫ লাখ টাকা দরকার। আমরাই পারি নারদকে বাঁচিয়ে রাখতে, নারদের স্বপ্নকে সফল করতে। মাত্র ৩৫ লাখ টাকার বিনিময়ে মা ফিরে পাবে সন্তান, দাদা ফিরে পাবে ছোট ভাই, বোন ফিরে পাবে তার দাদাকে। এক জনমে এর চেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে!
নারদের পাশে আমরা দাঁড়াব। বাংলাদেশ দাঁড়াবে।
মানবতার জয় হবেই।
নারদ হালদার
সোনালি ব্যাংক, কালুখালী শাখা- এসি নম্বর-২২১৩৭০১০১২৩৮২
ডাস বাংলা ব্যাংক, কালুখালী শাখা- এসি নম্বরÑ৭০১৭৩১৭৭৪৯৬৩২
নগদ, বিকাশ, রকেট নম্বর- ০১৯৫৩১৩৭৩৩১
নগদ, বিকাশ, রকেট নম্বর- ০১৯৮৫৬৪৮৬১৪
লেখক: সম্পাদক. প্রকৃতিবার্তা