ঢাকা অফিস : বাংলাদেশের রাজনীতিতে অতি পরিচিত মুখ মোহাম্মদ নাসিম। বর্ণাঢ্য তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর শুরু হওয়া অপরাজনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে তার অসামান্য অবদান।
অন্যায়ের প্রতিবাদে রাজপথে তাঁর কন্ঠ ছিলো বরাবরই সোচ্চার। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বিভিন্ন সময়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত, ডাক ও টেলিযোগাযোগ, স্বরাষ্ট্র এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বরের জেলহত্যাকাণ্ডে অন্যতম শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর দ্বিতীয় ছেলে মোহাম্মদ নাসিম। জন্ম ১৯৪৭ সালের ২রা এপ্রিল সিরাজগঞ্জের কাজীপুরের বাড়িতে। মা মোসাম্মৎ আমেনা খাতুন ছিলেন গৃহিনী।
মুক্তিযুদ্ধের সময় গঠিত প্রবাসী সরকারের অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর। স্বাধীনতার পর প্রথমে স্বরাষ্ট্র ও যোগাযোগ মন্ত্রী এবং পরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জাতীয় আরো তিননেতার সঙ্গে তিনিও কারাবরণ করেন এবং পরে কারা হেফাজতেই হত্যার শিকার হন। এমন এক রাজনীতিক পিতার কাছেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি পেয়েছেন মোহাম্মদ নাসিম।
তিন সন্তানের জনক মোহাম্মদ নাসিমের স্ত্রী লায়লা আরজুমান্দ। মোহাম্মদ নাসিম তখনকার জগন্নাথ কলেজ এখনকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে তিনি অসংখ্যবার জেল খেটেছেন। স্বৈরাচারী এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা ছিলো তাঁর। মোহাম্মদ নাসিম সিরাজগঞ্জ থেকে ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তিনি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। পরে তাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়।
২০১৪ থেকে ১৯ সাল পর্যন্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়া, তিনি ১৯৯১ সালে গঠিত পঞ্চম জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমান সংসদে খাদ্যমন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন মোহাম্মদ নাসিম।
১৪ দল গঠনের পর এই মহাজোটের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন নাসিম। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন।