আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে হামলাকারী ব্রেন্টন টারান্টকে বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া আগামী ৫ই এপ্রিল টারান্টকে হাইকোর্টে তোলার আগ পর্যন্ত রিমান্ড দিয়েছে ক্রাইস্টচার্চের একটি ডিস্ট্রিক্ট আদালত।
ব্রেন্টন টারান্টের কাছে লাইসেন্স করা বন্দুকের পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্রও ছিলো। তবে হামলাকারীকে এখনও ধরতে পারেনি নিউজিল্যান্ড পুলিশ।
এর আগে, গতকাল দেশটির পুলিশ মসজিদে হামলাকারী ব্যক্তি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক বলে তার পরিচয় নিশ্চিত করে। তার নাম ব্রেনটন টারান্ট, বয়স ২৭ বছর।
হামলার পরপরই প্রধানমন্ত্রী জ্যাসিন্ডা একে সন্ত্রাসী হামলা বলে আখ্যা দেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হামলাকারীর নাম প্রকাশ করে জানিয়েছেন, হামলাকারী একজন কট্টর ডানপন্থি। তিনি আরও বলেন, এই দিনটি নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে কলঙ্কময় দিনগুলোর একটি।
শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদে জুমার নামাজে বসা মুসলিমদের ওপর হামলা চালায় ওই বন্দুকধারী। পরে কাছাকাছি শহরতলি লিনউডের মসজিদেও হামলা চালানো হয়। তবে দ্বিতীয় মসজিদে হামলাকারী একই ব্যক্তি কি না, তা এখনো নিশ্চিত করা হয়নি।
ওই হামলায় ৬ বাংলাদেশিসহ ৪৯ জন নিহত হয়। আহত হয় ৩৯ জন। এদের মধ্যে অন্তত ১১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান নিউজিল্যান্ড সফররত বাংলাদেশ দলের কয়েকজন ক্রিকেটোর।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারী একাধিক ছিলেন। হামলায় জড়িত সন্দেহে এক নারীসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। একটি গাড়িতে স্থাপন করা বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ।
এদিকে, ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার পর পর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে যায়। এতে দেখা গেছে, ভিডিও গেমের মতো একজন বন্দুকধারী স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি করছে। হামলার ভিডিও দেখে ধারণা করা হচ্ছে, বন্দুকধারী হামলার আগে পুরো ঘটনাটি ভিডিও করার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। হয়তো তার মাথায় ভিডিও ক্যামেরা বসানো ছিল। একটি ওয়েবসাইট জানায়, হামলাকারী নিজেই হামলার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে লাইভ করেছেন।
ক্রাইস্টচার্চে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অবস্থানকারী হোটেলটির খুব কাছে দুটি মসজিদে এই বন্দুক হামলায় তিন বাংলাদেশিসহ অন্তত ৪৯ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। তবে নিরাপদে আছেন বাংলাদেশের জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা।
এই ঘটনায় সেন্ট্রাল ক্রাইস্টচার্চে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া, হামলার ঘটনায় জড়িত এক নারীসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। এই হামলাকে সন্ত্রাসী হামলা বলে অভিহিত করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। তবে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন জানিয়েছে, হামলাকারী তাদের নিরাপত্তা নজরদারির তালিকায় ছিল না।
নিরাপত্তার খাতিরে ক্রাইস্টচার্চের সব মসজিদ, হাসপাতাল ও স্কুল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অধিবাসিদের ঘরের বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এ এফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্কট মরিসন বলেন, ক্রইস্টাচার্চে একজন উগ্র মনোভাবের ডানপন্থি উন্মত্ত জঙ্গি হামলা চালিয়েছেন। হামলাকারী অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেয়া নাগরিক। তবে এর বেশি কোনও তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।