পঞ্চগড়ে চলছে ‘স্বেচ্ছা লকডাউন’

প্রকাশঃ ২০২০-০৪-০৭ - ১৯:৪৭
পঞ্চগড় : দেশে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সতর্ক হয়ে পঞ্চগড় জেলা শহরের বাসিন্দারা স্বেচ্ছায় নিজেদের এলাকাকে লকডাউন ঘোষণা করছে।

মানুষজনের প্রবেশ ঠেকাতে প্রতি রাস্তার প্রবেশস্থলে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেটও দেয়া হচ্ছে। এদিকে জেলা প্রশাসন দুপুর ১ টার পর হাট বাজারে ওষুধের দোকান ছাড়া সব দোকানপাট বন্ধ ঘোষণা এবং পথ ঘাটে চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় এমনিতে শহরে মানুষের চলাচল কমে গেছে।

মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা শহরের প্রধান সড়ক থেকে বিভিন্ন এলাকার প্রবেশ পথে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেট দেয়া হয়েছে। দেশে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলা শহরের রাজনগর, বানিয়াপট্টি, তুলারডাঙ্গা, কামাতপাড়া, জালাসী, ডোকরোপাড়া, রওশনাবাগ, ইসলামবাগসহ প্রত্যেক এলাকায় প্রবেশ পথে স্থানীয়রা নিজেরাই বাঁশ বেঁধে বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বাঁশের পাশাপাশি গাড়ির টায়ার, টিন ও গাছের গুড়িও ব্যবহার করা হয়েছে। অনেকে এটিকে ‘সেলফ লকডাউন’ বলছেন। এলাকাগুলোর প্রবেশ পথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান ও পানি রাখা হয়েছে।

তবে দিন যতই যাচ্ছে ক্রমে ক্রমেই মানুষের মধ্যে করোনা নিয়ে সচেতনতার সৃষ্টি হচ্ছে। পঞ্চগড় রওশনাবাগ এলাকার আরিফ হোসেন বলেন, “দেশের করোনা পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। অথচ আমাদের এলাকার মানুষরা অবাধে চলাচল করছে এবং বাইরে থেকেই অনেক মানুষ যানবাহন নিয়ে প্রবেশ করছে। তাই আমরা এলাকার মানুষেরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে এলাকার প্রবেশ পথে এই ব্যারিকেট দিয়েছি। ব্যারিকেট দেয়ার পর থেকে মানুষজনের চলাচল অনেকটা কমে এসেছে।”

পঞ্চগড় জেলা শহরের বাসিন্দা সৌরভ হোসাইন বলেন, “প্রশাসন পঞ্চগড়কে এখনো লকডাউন ঘোষণা করেনি। তাই নিজেদের সুরক্ষায় আমরা নিজেরাই নিজেদের এলাকাগুলোকে লকডাউন করেছি। আমরা নিজেরা বাইরে না গেলেই করোনা মহামারী থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। এখনো যেহেতু আমাদের পঞ্চগড়ে করোনা প্রবেশ করেনি তাই আমাদের নিজেদের স্বার্থেই আমাদেরকে স্বেচ্ছা লকডাউনে থাকতে হবে।”

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “আমরা এখনো পঞ্চগড়কে লকডাউন ঘোষণা করিনি। তবে দুপুর ১ টার পর হাট বাজারে সকল দোকানপাট বন্ধ ও রাস্তা ঘাটে চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছি। মানুষজন নির্দেশনা মানছে কিনা তা পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্যরা দেখভাল করছে। নির্দেশনা অমান্য করলেই জরিমানা করা হচ্ছে। আমরা বার বার বলছি যে করোনা থেকে বাঁচতে হলে আমাদের ঘরে থাকতে হবে। তবে এখন আর ছাড় নয়, নির্দেশনা অমান্য করলে আমরা কঠোর হতে বাধ্য হবো।”