পাইকগাছা অফিস : পাইকগাছায় মামলায় জামিন করিয়ে দেওয়া কথা বলে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অসহায় ও হতদরিদ্র মহিলা করিমুন নেছার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে। প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে নেওয়ায় ওই টাকা ফেরৎ চাইতে গেলে অসহায় ও হতদরিদ্র মহিলা করিমুন নেছার সাথে অশালীন আচারণ করেছেন ওই আইনজীবী। এঘটনায় ভুক্তভোগী করিমুন নেছা প্রতিকার চেয়ে গত মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পাইকগাছা আইনজীবী সভাপতি/সম্পাদক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
প্রাপ্ত অভিযোগ ও ভুক্তভোগী করিমুন নেছা সুত্রে জানা যায়, উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের পুরাইকাটি গ্রামের বাসিন্দা আমেনা খাতুন ও একই ইউনিয়নের বান্দিকাটি গ্রামের বাসিন্দা করিমুন নেছার সাথে একটি তুচ্ছ ঘটনায় তাদের দু’জনের মধ্যে ভূল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হলে আমেনা খাতুন তার বিরুদ্ধে পাইকগাছা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন, যার নং সিআর ৯৩৪/২১। এ মামলায় করিমুন নেছা তার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে এ্যাড. মোহতাছিম বিল্লাহ কে নিযুক্ত করেন। মামলার আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পরে থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কথা বলে ভুক্তভোগী করিমুন নেছার কাছ থেকে টাকা নেন এ্যাড. মোহতাছিম বিল্লাহ। সর্বশেষ ঐ মামলায় ভুক্তভোগী করিমুন নেছার ওয়ারেন্ট হয়েছে বলে ভয়-ভীতি দেখিয়ে জামিন করিয়ে দেওয়া কথা বলে প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে ভুক্তভোগী করিমুন নেছার কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা নেন সু-চতুর ওই এ্যাডভোকেট। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ খবর নিয়ে ভুক্তভোগী করিমুন নেছা জানতে পারেন যে ঐ মামলায় তার নামে কোন ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়নি বরং আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মামলার শুনানি অন্তে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য গ্রাম্য আদালতে পাঠিয়েছেন আর ওখানেই তাদের মধ্যে বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়েছে। পরবর্তীতে তিনি প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে নেওয়া টাকা ফেরৎ চাইতে ওই এ্যাডভোকেটের চেম্বারে গেলে সু-চতুর সম্পূর্ণ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ভুক্তভোগী করিমুন নেছাকে আশালীন ও অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে বিভিন্ন ভয়-ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে। ঐ সময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ওই আইনজীবী তার গায়ে হাত তুলে গলা ধরে চেম্বার থেকে বের করে দেয়। এঘটনায় প্রতিকার চেয়ে গত মঙ্গলবার ভুক্তভোগী করিমুন নেছা সু-চতুর ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পাইকগাছা আইনজীবি সভাপতি/সম্পাদক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানান তিনি।
অভিযুক্ত এ্যাড.মোহতাছিম বিল্লাহ কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি নন বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন আইনজীবী জানান, এড. মোহতাছিম বিল্লাহ’র বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন শেষ নেই। বিশেষ করে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে-মেয়েদের নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহ দেওয়ায় ক্ষেত্রে সে বেশ সমালোচিত হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী করিমুন নেছার অভিযোগই শেষ নয় উপজেলার মাহমুদকাটি গ্রামের আয়রা বিবিরসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ হয়েছে। যা তদন্তাধীন রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম জানান, অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনজীবী সমিতির সভাপতি বরাবর প্রেরণ করেছি। পাইকগাছা আইনজীবী সমিতির সভাপতি পঙ্কজ কুমার ধর বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।