পাইকগাছায় ইন্দুরকাটা নদী বিলিন : দেখার কেউ নেই

প্রকাশঃ ২০১৮-০২-০৪ - ২১:০৬

পাইকগাছা : পাইকগাছার ইন্দুরকাটা নদীটি বিলিন হয়ে গেছে। দেখা কেউ নেই। অবৈধ সুবিধা গ্রহণ করেছে সরকারের অসাধু কিছু কর্মকর্তা। নদীটি দখল করে নিয়েছে ভূমি দস্যুরা। নদীর উপর তৈরি করেছে অবৈধ লীজ ঘের, ইটের ভাটা, বসত বাড়ী ও গাছপালা। পার্শ্ববর্তী বিলান জমির তুলনায় নদীটির বুক হয়েছে অনেক উঁচু। যে কারণে রাড়ুলী, লস্কর ও চাঁদখালী ইউনিয়নের পানি সরবরাহে বিঘ্ন থাকায় এলাকা প্লাবনে নিমজ্জিত হয়। জানা যায়, পাইকগাছা উপজেলার শিবসা নদীর অববাহিকা হতে পশ্চিম দিকে কপোতাক্ষ নদের সীমানা পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার ইন্দুরকাটা নদী। উক্ত নদী দিয়ে এক সময় লঞ্চ, স্টিমার সহ নৌপথে ইঞ্জিনচালিত সকল প্রকার নৌযান চলাচল করত। শিবসা নদী থেকে ইন্দুরকাটা নদীর ভিতর দিয়ে কপোতাক্ষ নদ হয়ে লঞ্চ, সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা পর্যন্ত পৌছাতো। কালের বিবর্তনে আজকের নদীটি বিলিন হতে বসেছে। সরকারী কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী উক্ত নদীটির সমস্ত জায়গায় মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ভূমিদস্যুদের নিকট বন্দোবস্ত প্রদান করেছে। উক্ত বন্দোবস্তের কাগজ হাতে নিয়ে ভূমিদস্যুরা নদীটি ভরাট করে সেখানে অবৈধভাবে মৎস্য লীজ ঘের, বাড়ি ঘর নির্মাণ করে গাছপালা রোপন করে বসবাস করছে। অপরদিকে, কপোতাক্ষ নদের রাড়–লী ইউনিয়নের কোল ঘেষে বাঁকা, কাটিপাড়া, বড়দল হয়ে সমুদ্র অভিমুখে কপোতাক্ষ নদটিও পলি জমে ভরাট হওয়ার কারণে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়েছে। অপর দিকে, ইন্দরকাটা নদীর দু’পার্শ্বে রাড়ুলী ইউনিয়নের শ্রীকন্ঠপুর এলাকা ও লস্কর, চাঁদখালী ইউনিয়নের শিববাটী, কৃষ্ণনগর এলাকার পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। কারণ হিসেবে জানা যায়, ভূমিদস্যুদের নদী ভরাটের কারণে লোকালয়ের বিলান এলাকা থেকে নদীর বুক ফেঁপে উঁচু হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করলেও লোকালয় এলাকা থেকে কোন অবস্থাতেই নদীতে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া সরকারের পল্লী ও সমবায় মন্ত্রণালয়কে ভুল বুঝিয়ে কিছু সুবিধাভোগী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও সরকারের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উক্ত বিলীন হওয়া নদী দিয়ে পানি সরবরাহের নামে কোটি কোটি টাকা খরচ পূর্বক শিববাটী হতে কাটাখালী পর্যন্ত উক্ত পার্শ্ব দিয়ে বয়ে যাওয়া ওয়াপদা রাস্তায় ৫টি কালভার্ট নির্মাণ করেছে। যা অকেজো হয়ে পড়েছে। উক্ত কালভার্ট দিয়ে এক বিন্দু পানি সরবরাহ করার কোন লক্ষণ নাই। ইন্দুরকাটা নদীর পূর্বে ধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য ভূমিদস্যুদের উচ্ছেদ পূর্বক নদীটি খননের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকার সচেতনমহল।