পাইকগাছা পাবলিক লাইব্রেরী ও যাদুঘর নানা সমস্যায় জর্জরিত

প্রকাশঃ ২০১৭-১২-১৩ - ২২:০৬

পাইকগাছা, খুলনা : দক্ষিণ খুলনার ঐতিহ্যবাহী পাইকগাছা পাবলিক লাইব্রেরী ও যাদুঘরটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। জনবল সংকট, অবকাঠামো সংস্কার, আসবাবপত্র ও বই সংকটের কারণে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় পাঠক শূূূন্য হয়ে পড়েছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় এর কোন অভিভাবক নেই। অভিযোগ রয়েছে, লাইব্রেরীর পুকুরটিও বেহাত হতে চলেছে। পাইকগাছা উপজেলা সদরে ১৯৮৫ সালে তৎকালিন জাতীয়পার্টি সরকার পাবলিক লাইব্রেরী ও যাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেন। যার প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হয় শহীদ এম,এ গফুর মিলনায়তনের একটি কক্ষে। ১৯৮৫ সালে ৭ মার্চ প্রতিষ্ঠানের নামীয় বাতিখালী মৌজায় ৪৪৯ দাগে ৩৬ শতক জমির উপর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। যার বর্তমান ডি.পি নং- ১৬। ১৯৮৭ সালে ডিসেম্বরে তৎকালীন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ নুরুল ইসলাম ৭২-৩০ ফুটের ২ কক্ষ বিশিষ্ট পাকা ভবনের কাজ উদ্বোধন করেন। ১টি কক্ষ লাইব্রেরী ও আর ১টি যাদুঘর বা সংগ্রহ শালা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। লাইব্রেরীটি পরিচালনার জন্য ১৯৮৮ সালে কল্লোল কুমার মল্লিককে গ্রন্থাগারিক নিয়োগ দেয়া হয়। ১৯৯১ সালে জাতীয় বেতন স্কেলে বেতনভাতা পান। ১৯৯৯ সালে লাইব্রেরীটি পাইকগাছা পৌরসভা নিয়ন্ত্রণে নেয়। পৌরসভার বাজেটে লাইব্রেরীর জন্য বাজেট ঘোষণা করা হলেও বাস্তবে লাইব্রেরীর অনুকুলে কোন বরাদ্দ থাকে না। অবকাঠামো সংস্কারের অভাবে লাইব্রেরী ভবনটি ধসে ধসে পড়ছে। বর্তমানে লাইব্রেরীতে পর্যাপ্ত পরিমাণে নতুন বই সংযোজন করা হয় না এবং রয়েছে কয়েকটি ভাংগা চেয়ার, টেবিল ও আলমারী। ৫টি জাতীয়, ৩টি আঞ্চলিক দৈনিক, ১টি সাপ্তাহিক ও ১টি মাসিক পত্রিকা থাকলেয় বর্তমান রয়েছে মাত্র তিনটি। বইয়ের সংখ্যা ৫,৩৯১টি থেকে বর্তমান আছে দু-তিনশ’র মত। বর্র্তমান পাঠকের সংখ্যা প্রায় শূন্যের কুঠায়। এক সময় প্রতিদিন পাঠকের সর্বনিম্ন আগমন ছিল ১৬০/১৮০জন। আজীবন সদস্য ১৪৬, সাধারণ সদস্য ছিল ১৫৫ জন। বর্তমান কোন সদস্য আছে কিনা তাঅনেকেই জানেনা । যাদুঘর ও সংগ্রহ শালায় রয়েছে বিশ্ববরণ্যে বিজ্ঞানী পি.সি. রায়ের তৎকালীন বৃটিশ সরকার কর্তৃৃক স্যার উপাধি পাওয়ার তরবারী, তার পড়ার টেবিল, পূজায় ব্যবহৃত ২টি খড়গ, বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহা, সাহিত্যিক স্বহস্তে লেখা পত্র। রায় সাহেব ললিনী কান্ড রায় চৌধুরীর তরবারী, রায় সাহেব বিনোদবিহারী সাধুর পবিত্র গীতা, ব্যবহৃত ভৈজষপত্র। ১৫০ বছরের পুরানো তিমি মাছের কংকাল, ২০০টি দেশের মুদ্রা, মোঘল আমলের মুদ্রা, স্বাধীনতা যুদ্ধে ব্যবহৃত কামানের সেল, মংলা বন্দরে নিক্ষেপকৃত 40M M মর্টারের সেল, গুলি বাক্সসহ ইত্যাদি। বর্তমানে লাইব্রেরীর পিছনে একটি পুকুর রয়েছে। যে পুকুরটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রতি বছর ইজারা দিয়ে থাকেন। বর্তমান বছরে অন্যত্র ইজারা দেয়ায় পুকুরটি বেহাত হতে চলেছে। উক্ত পুকুরটি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পাইকগাছা-কয়রার সংসদ সদস্য আলহাজ¦ এ্যাডঃ শেখ মোঃ নুরুল হক পর্যন্ত পড়িয়েছে।