লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি : নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পানিপাড়া গ্রামে কয়েক বছর ধরে বেড়েছে পাখির আনাগোনা। বছরের বেশির ভাগ সময়ই দেশি-বিদেশি নানা জাতের পাখির দখলে থাকে পানিপাড়া গ্রামটি।
এক কিলোমিটার দূর থেকেই পাখির কিচিরমিচির শব্দ শোনা যায়। দুই চোখ যেদিকে যায় শুধু পাখি আর পাখি। এ গাছ থেকে ওই গাছে উড়ে বেড়াচ্ছে। পড়ছে লেকের পানিতেও পাখির রাজ্যকে ঘিরে পানিপাড়া গ্রামে ৫০ একর জমিতে গড়ে উঠেছে অরুণিমা রিসোর্ট (ইকোপার্ক)।
মানুষের পাশাপাশি এই রিসোর্ট পাখিদেরও অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে। গ্রামের বাঁশঝাড়, গাছগাছালির পাশাপাশি রিসোর্টের ব্যালকনি, জানালা, ঘুলঘুলিতে নির্ভয়ে, নিঃসংকোচে উড়ে বেড়ায় ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি। এখানকার লেকে বসেছে বিভিন্ন জাতের দেশি-বিদেশি পাখির মেলা।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার এবং ছায়া সুনিবিড় মনোমুগ্ধকর পরিবেশ থাকায় এখানে দেশি-বিদেশি পাখির অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া লেকের চারপাশে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার ফলজ, বনজ,ও ওষুধি গাছ। আরও রয়েছে কৃষিভিত্তিক খামার।
এসময় কথা হয় মেজর জেনারেল আব্দুর রশিদের সঙ্গে। ঢাকা থেকে স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে এসেছেন তিনি। তিনি বলেন, অরুণিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাবে এসে প্রকৃতির সঙ্গে গলফ খেলা, লেকে নৌকা চড়া ও মাছ ধরা সবকিছু মিলিয়ে একটু ভিন্ন ধরনের অনুভূতি হচ্ছে। এখানে প্রকৃতির সঙ্গে যেন নিজেকে বিলীন করে দেওয়া যাচ্ছে। আর বুক ভরে ফ্রেশ অক্সিজেন নিতে পারছি।
আরেক দর্শনার্থী নাসরিন জামান বলেন, এখানে এসে কিছু দৃশ্য দেখে আমি খুবই আনন্দিত। এই মৌসুমে এত পাখি সাধারণত কোথাও দেখা যায় না। গাছে পাখিরা এমনভাবে বসে আছে যেন মনে হচ্ছে ফুল ফুটে আছে। সে অপূর্ব একটা দৃশ্য। পরিবেশ এতো সুন্দর যে এখানে এলে প্রকৃতির সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে ফেলা যাবে।
মিলন হোসাইন নামে আরেকজন পর্যটক বলেন, এখানে ঘুরতে এসে অনেক পাখি দেখেছি। খুব ভালো লাগছে। সাধারণত শীতকালে পাখি থাকে। কিন্তু অরুণিমায় একটু ব্যতিক্রম দেখলাম। চৈত্র মাসেও এখানে পাখি দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম রিসোর্ট ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং অরুণিমা রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ ক্লাবের স্বত্বাধিকারী মো. খবির উদ্দীন বলেন, অরুণিমা রিসোর্টে বারো মাস দেশি পাখি এবং নয় মাস বিদেশি পাখি অবস্থান করে। পর্যটনের জন্য এমন পরিবেশ অত্যন্ত প্রয়োজন। উন্নয়নশীল দেশ গড়তে ট্যুরিজমের কোনো বিকল্প নেই। সরকার আরেকটু নজর দিলে বাংলাদেশের পর্যটন খাত আরও বেশি এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।