খুলনা : খুলনাসহ সারাদেশের পাটকল শ্রমিকরা ২১ দিনের টানা আন্দোলন ও ১২ দিন মিলের চাকা বন্ধ রেখে কর্মসূচি পালন করার পর আজ আরো ১ মাসের কঠোর কর্মসূচি ঘোষনা দেবেন শ্রমিক নেতারা। শ্রমিকদের নতুন করে টানা এক মাসের এ আন্দোলন অশনি সংকেতআজ বয়ে আনছে। আজ বেলা ১২ টায় ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আন্দোলনের ঘোষনা করবেন দেশের ২৬টি পাটকলের সিবিএ-নন সিবএ নেতারা। সে ক্ষেত্রে ১৫ জানুয়ারী থেকে নতুন আন্দোলন কর্মসূচি শুরু হবে বলে ঢাকা থেকে মুঠো ফোনে তেমনটি জানালেন বাংলদেশ পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ পরিষদের কার্যকারী আহবায়ক মোঃ সোহরাব হোসেন।
সোমবার সকাল ১১ টায় মুজরী কমিশন, বকেয়া মজুরী-বেতন, বন্ধ মিল চালু, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিলগুলিকে সংস্কার করা, খালিশপুর ও দৌলতপুর জুট মিলের শ্রমিকদের স্থায়ীকরন এবং মুজরী বৈষম্য দুর করাসহ ১১ দফা দাবীতে বিজেএমসির সভা কক্ষে দ্বিতীয় দিনের বৈঠক করেন ২৬ টি পাটকলের শ্রমিক নেতারা। বৈঠকে মজুরী কমিশন ঘোষনা ও সকল বকেয়া মুজরী-বেতনসহ ১১ দফা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন আব্যাহত রাখার প্রেক্ষিতে ভুখা মিছিল, লাল পতাকা মিছিল ও বিক্ষোভ, ঘেরাও, স্বারক লিপি প্রদান, রাজপথ রেলপথ অবরোধ, হরতালসহ একাধিক কর্মসূচি আজ সংবাদ সম্মেলনে ঘোষনা করবেন বলে জানান সোহরাব হোসেন।
এ ক্ষেত্রে আগামী শুক্রবার খালিশপুর জুট মিলের সামনে শ্রমিক সমাবেশের মাধ্যমে ১ মাসের টানা আন্দোলনে সক্রিয় থাকতে সকল মিল শ্রমিককে প্রস্তুত থাকার আহবান জানাবেন শ্রমিক নেতারা। সোহরাব হোসেন বলেন, ১১ দফা দাবী বিশেষ করে মজুরী কমিশন বাস্তবায়ন ও বকেয়া মজুরীর দাবীতে গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে আন্দোলনে নামে শ্রমিকরা। ২৮ ডিসেম্বর খুলনার সকল মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা। শ্রমিক আন্দোলন শুধু খুলনা নয় সারাদেশে পাটকলে একই আন্দোলন চলছে। বিজেএমসি সমাধানের জন্য কোন উদ্যোগ নেয়নি। ফলে শ্রমিকদের ক্রমশই উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সোহরাব হোসেন বলেন, শ্রমিকদের দাবী মজুরী-বেতন ছাড়া ধুকে ধুকে মরার চেয়ে মিল বন্ধ করে আন্দোলনে মৃত বরন করা ভালো।
এদিকে খুলনার ৯টি পাটকলের সিবিএ-নন সিবিএ নেতারা ঢাকায় অবস্থান করছেন। অন্যান্য নেতারা শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। সোমবার বেলা সোয়া ২টায় প্লাটিনাম জুট মিলের সামনে রেললাইনে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। খালিশপুর জুট মিলে শ্রমিকরা চাঁদা তুলে রেললাইনের উপর খিচুড়ি রান্না করে শ্রমিক পরিবারকে খাবার দিচ্ছে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয় এবং বিজেএমসি শ্রমিক আন্দোলনে অচল অবস্থা নিরসনে নিস্ক্রিয়, যার কারনে শ্রমিকরা ক্ষুদ্ধ ও হতাশ। পকেটে টাকা নেই, পেটে ভাত নেই তবুও আন্দোলনে সরব শ্রমিকরা। কি আছে শ্রমিকদের কপালে সময় বলে দেবে?