পুলিশের কনস্টেবল কামরুলের বিরুদ্ধে হয়রানি ও অত্যাচারের অভিযোগ

প্রকাশঃ ২০২৪-১০-০৬ - ১৮:০২

ইউনিক ডেস্ক : নগরীর হরিণটা থানার শ্মশান ঘাট এলাকায় পুলিশের কনস্টেবল কামরুলের বিরুদ্ধে আধিপত্য বিস্তার সহ এলাকার নিরীহ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও নানান ভাবে অত্যাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে ।কামরুল পুলিশের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এলাকাবাসী একজোট হয়ে গণস্বাক্ষর দিয়ে গত ৪ ই অক্টোবর স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী, স্কুল ছাত্রীদেরকে ইভটিজিং করাসহ তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ তুলেছে স্থানীয় ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ।
খুলনা রেঞ্জের এডিশনাল ডিআইজির ড্রাইভার কামরুল সর্দারের নানা অপকর্ম আর অত্যাচারে আতঙ্কিত ও নির্যাতিত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে ছোট বয়রা, শশ্মানঘাট আল আকসা নগরের বাসিন্দারা। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী ও তাতে ফাঁসানোর হুমকীর কাছে কোণঠাসা ও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে শ্মশান ঘাটে বসবাসরত মানুষেরা। তার ভয়ে এলাকার কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। এঘটনায় হরিণটানা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ছোট বয়রা, শশ্মানঘাট, আল আকসা নগরের ভুক্তভোগী বাসিন্দারা।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, খুলনা রেঞ্জের এডিশনাল ডিআইজির ড্রাইভার কামরুল সরদার দীর্ঘদিন ধরে হরিণটানা থানা এলাকায় ছাত্র ও দিনমজুরদেরকে হয়রানি করছে। তাদের অনেকের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে থানায় নিয়ে যাচ্ছে। দিন দিন এলাকার সাধারন মানুষের উপর অত্যাচার করেই যাচ্ছে এই কামরুল পুলিশ। শুধু তাই নয়, রাস্তার পাশে সরকারি জায়গা দখল করে দীর্ঘ ৫ বছর ধরে একটি গ্যারেজ নির্মাণ করে দিন দিন অনৈতিক কার্যক্রম করে যাচ্ছেন তিনি। দিনের পর দিন তিনি তার গ্যারেজের কর্মচারীদের দিয়ে এলাকার মেয়েদেরকে উত্যক্ত করে যাচ্ছে। এমনকি এলাকার ছাত্রীদের রাস্তায় চলাচলের সময় এই কামরুল ও তার গ্যারেজের ছেলেরা মিলে ইভটিজিং করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। আনুমানিক ২ মাস আগের কথা, কামরুল পুলিশ তার গ্যারেজের কর্মচারী কালু ও প্রদীপকে দিয়ে রাত ১২টায় ওই থানা এলাকার এক ছোট বোন তমা চৌধুরীকে হুমকী-ধামকী দিয়ে তার বাসা থেকে বের করে তার গ্যারেজে নিয়ে আসে। এরপর তাকে খারাপ প্রস্তাব দিলে সে রাজী না হওয়ায় মিথ্যা অপরাধে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকী দেয়। তমা লজ্জায় একথা কাউকে বলতে না পেরে বাসায় যেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। কিন্তু তার মা বাসায় উপস্থিত হওয়ায় আত্মহত্যা করতে ব্যর্থ হয় এবং মায়ের কাছে সবকিছু খুলে বলে। পরেরদিন এলাকাবাসীরা কামরুল পুলিশের কাছে এবিষয়ে কথা বলতে গেলে তিনি বলেন, আমার বিষয়ে কথা বললে তোদের সবাইকে রাতে মামলা দিয়ে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দিবো। তার কিছুদিন পরে আবার এবিষয়ে কথা বলতে গেলে এলাকার ৩-৪ জনকে মিথ্যা মোটরসাইকেল চুরির মামলা দিয়ে পুলিশ এনে ধরিয়ে দেয়। তারপর থেকে এলাকাবাসী ভয়ে এবিষয়ে আর কিছু বলে না। তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা, তার একটি “হোটেল সরদার” নামে জিরোপয়েন্টে (আবাসিক) হোটেল এবং কফিহাউজ রয়েছে। গত ১ অক্টোবর আবারো তার গ্যারেজের কর্মচারীরা মিলে এলাকার ছোট বোন তমা চৌধুরীকে তার মায়ের সামনে বসে তাকে খারাপ ভাষায় গালি দেয় এবং তাকে ধরে ছিরে ফেলবে এধরনের হুমকী দেন। এবিষয়ে এলাকার এক ছোট ভাই সৈয়দ হাকিম (২৩) প্রতিবাদ করতে গেলে তাকে কামরুল পুলিশের কর্মচারীরা মিলে মারধর করে এবং একপর্যায়ে হাকিম জ্ঞান হারায়। এলাকার লোকজন তাকে তাৎক্ষনিক খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে, তবে তার অবস্থা আশংঙ্কাজনক। এবিষয়টি কামরুল পুলিশকে জানালে তিনি বলেন আপনাদের বিষয় আপনারা বুঝে নেন।
কামরুল কে ফোন দিলেও তিনি বলেন আমার বিরুদ্ধে আনীত যে সকল অভিযোগ এটা সত্য নয়। আমাকে হয়রানি করার জন্য এ সকল অভিযোগ তুলেছে। তিনি আরও জানান আমি এখন নড়াইল থানায় নিয়মিত ডিউটি করছি ।আমাকে নড়াইল থানায় বদলি করা হয়েছে। হরিণটানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) শেখ খায়রুল বাশার জানান, কামরুল পুলিশের বিরুদ্ধে বয়রা শশ্মানঘাটন এলাকার বাসিন্দাদের দেওয়া একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।