ফুলতলায় দুর্বৃত্তদের রোষাণলে এক রাতেই ভেঙ্গে গেল কৃষকের স্বপ্ন

প্রকাশঃ ২০২১-০৮-১১ - ২০:২৯

তাপস কুমার বিশ্বাস, ফুলতলা (খুলনা)// খুলনার বরণপাড়া গ্রামের মোঃ আকবর আলী মোল্যার পুত্র মোঃ সিরাজ মোল্যা (৩২) গত বছর বাড়ির অদূরে বিলডাকাতিয়ায় ৪ বিঘা জমিতে মৎস্য ঘের ও ঘেরের পাড়ে সবজির আবাদ শুরু করেন। এ বছর ঘেরে চারা মাছ চাষের পাশাপাশি ঘেরের তিন পাড় জুড়ে লাউ গাছ ও শসার ক্ষেত। তার স্বপ্ন ছিল সবজি বিক্রি করেই পৈত্রিক ঋণ শোধ করে ঘরের কাজে হাত দেয়া। বুধবার সকালে ঘের পাড়ে শসা তুলতে গিয়ে দেখেন ধরন্ত ৮৬ মাদা লাউ গাছ ও ৮৪ মাদা শসা গাছ মাটির এক ইঞ্চির উপর থেকে কাটা। পূর্ব রাতের কোন এক সময়ে দুর্বৃত্তরা তার স্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়েছে।

আদর্শ কৃষক সিরাজ মোল্যা ৩ ভাইয়ের মধ্যে কনিষ্ঠ। দুই বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে সবাই পৃথক হলে সিরাজ মোল্যা ৪ বিঘা জমিতে মৎস্য ঘের কেটে চারা মাছের চাষ শুরু করেন। গত বৎসর সব খরচ মিটিয়ে তার লাভ থাকে ২ লাখ টাকা। এ টাকা দিয়ে তিনি পারিবারিক ধার দেনার আংশিক পরিশোধ করেন। কিন্তু তার এ সফলতায় ঈর্ষান্বিত আপনজনেরা। এ মৌসুমে ঘেরে চারা মাছ ছাড়ার পর তিন পাড়ে লাউ ও শসার আবাদ করেন। ইতোমধ্যে শসা বিক্রি শুরু করেন। গাছে লাউ এর জালি পড়তে শুরু হয়েছে। ঘের পাড়ের সবজি দেখে কৃষক সিরাজ মোল্যাও স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। তার এবারের স্বপ্ন ছিল পারিবারিক ধার দেনা পরিশোধ করে ঘরের কাজ শুরু করা। কিন্তুঅজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা মধ্যরাতেই তার সে স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরে ধুলিষ্যাৎ করে দিল।

সিরাজ মোল্যা বলেন, বুধবার ভোরে তার বড় ভাই আলমাজ মোল্যা ও কর্মচারী জিয়া ঘের পাড়ে শসা তুলতে গিয়ে দেখেন সব শসা গাছ ও লাউ গাছ গোড়া থেকে কাটা। পূর্বের রাতের কোন এক সময় পরিকল্পিতভাবে সব গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। খবর পেয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ নাজমুস সাকিব শাহিন ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন হাওলাদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। থানা পুলিশও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

অপরদিকে উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, করোনার এই মহামারীর সময়ে কৃষকদের এমন ক্ষতি মেনে নেয়া যায় না। ক্ষতির পরিমান ২ লক্ষাধিক টাকা জানিয়ে অবিলম্বে দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল।