ফুলতলায় নিহত ব্যবসায়ী মিলন হত্যায় মামলা দায়ের আটক নেই

প্রকাশঃ ২০২৩-০১-৩১ - ২০:৩৫

ফুলতলা (খুলনা) প্রতিনিধি// খুলনার ফুলতলায় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত ব্যবসায়ী মিলন ফকির (৪৫) হত্যা ঘটনায় ফুলতলা থানায় মামলা হয়েছে। তদন্ত করবে ডিবি। গত দু’দিনেও এ ঘটনায় জড়িত কেউ আটক হয়নি। এদিকে নিহত মিলন ফকিরের লাশের ময়না তদন্ত শেষে মঙ্গলবার বিকালে জানাযা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

থানায় দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ী মিলন ফকির হত্যা ঘটনায় সোমবার রাতে তাঁর স্ত্রী রাসিদা বেগম বাদি হয়ে অজ্ঞাতদের আসামিদের করে ফুলতলা থানায় মামলা (নং-১৬) দায়ের করেন। গত ২৯ জানুয়ারি রাতে তাঁজপুর এলাকার ইউপি সদস্য ফারুক মোল্যা, লিটন ফকির ও হাবিব মোল্যার সাথে মিলন ফকির ফুলতলা থানা এলাকার ভৈরব নদীর ঘাট ইজারা নেয়ার বিষয়ে কথা বলেছিলেন। এ বিষয়ে গত কয়েকদিন ধরে স্বামীর সাথে তাঁদের আলোপ আলোচনা হয়েছিল। তারই সূত্র ধরে এ ঘটনা ঘটতে পারে এমন ধারনার কথা এজাহারে উল্লেখ করেছেন মামলার বাদি রাসিদা বেগম। তবে গত দু’দিনেও পুলিশ কিলিং মিশনে অংশ নেয়া কোন অস্ত্রধারী বা তাঁদের গডফাদারকে আটক এবং ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি। এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোঃ নিজাম উদ্দিন মোল্যা বলেন, মামলার বাদি ও সাক্ষীরা মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত লাশের জানায়া ও দাফনে ব্যস্ত ছিলেন । ফলে তাঁদের সাথে কথা বলা ও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। আজ থেকে মামলার তদন্ত ও আসামি আটকের চেষ্টা করা হবে।

এদিকে সোমবার দুপুরে মিলন ফকিরের স্ত্রী রাশেদা বেগম তার বাড়িতে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ফুলতলা উপজেলার শিকিরহাট, রানাগাতি ও কালিয়া উপজেলার পেড়োলী ঘাটের ইজারা নেয়ার জন্য মিলন দরপত্র সংগ্রহ করেন। খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে সোমবার দরপত্র জমা দেয়ার কথা ছিল। গত হাটের দিন ঘাটের বর্তমান ইজারাদার ও সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ আলমগীর হোসেন মোল্যা তাকে একটি মুরগী কিনে দেয় এবং শিকিরহাট ঘাটের দরপত্র জমা না দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান। এছাড়া গত কয়েকদিন ধরে আলমগীর মোল্যা ও ইউপি সদস্য ফারুক মোল্যা দরপত্র জমা না দেয়ার জন্য মোবাইল ফোনে অনুরোধ জানাতে থাকেন। ওসি মোঃ ইলিয়াস তালুকদার বলেন, সোমবার আলমগীর হোসেন মোল্যাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয় হয়।

নিহত ব্যবসায়ী মিলন ফকিরের লাশের ময়না তদন্ত শেষে মঙ্গলবার দুপুরে আলকা পূর্বপাড়াস্থ বাড়িতে আনা হয়। এ সময় নিহতের অবুঝ সন্তানসহ স্বজনদের আহাজারীতে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। বাদ আছর আলকা পূর্বপাড়া বাইতুল মামুর জামে মসজিদ চত্বরে জানাযা শেষে উপজেলা সরকারি গোরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।

সোমবার সকাল আনুমানিক পৌনে ৮টার দিকে মিলন ফকির ও স্কুল শিক্ষক শীতল কান্তি মন্ডল দু’জনে আইডিয়াল স্কুল মোড়ে দাড়িয়ে কথা বলছিলেন। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় জামিরাগামী লাল রঙের পালসার মোটরসাইকেল নিয়ে অজ্ঞাত দুই যুবক ওই স্থানে দাড়ায়। মোটরসাইকেল থেকে নেমে মিলনকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় তিনি দৌড়ে মা টেলিকোম এন্ড কনফেকশনারীর দোকানে প্রবেশ করে। অস্ত্রধারী যুবক সেখানে গিয়ে মিলনের মাথা ও বুকে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে ওই মোটরসাইকেল যোগে দ্রæত জামিরা অভিমুখে তারা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে ব্যবসায়ী মিলনের মৃত্যু ঘটে। এ সময় তার সাথে থাকা স্কুল শিক্ষক শীতল কান্তি মন্ডলের বাম উরুতে গুলিবিদ্ধ হন। তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।