ফুলতলায় পরকিয়ার বলি কিশোরী গৃহবধু সুমী জেল হাজতে স্বামী সোহান

প্রকাশঃ ২০২০-০৩-১১ - ২২:৩৮

তাপস কুমার বিশ্বাস, ফুলতলা অফিসঃ পরকিয়ার অভিযোগে বলি হলেন কিশোরী গৃহবধু হাজেরা খাতুন ওরফে সুমী (১৬)। থানায় মামলা দায়েরের পর বুধবার বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি শেষে স্বামী সোহান মোল্যা (২৩) কে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

অভয়নগর কোটা পায়রা গ্রামের আতিয়ার শেখের পুত্র ও নিহত কিশোরী গৃহবধু সুমীর বড় ভাই সুজন শেখ বলেন, গত সাড়ে ৩মাস আগে ফুলতলার ডাউকোনা গ্রামের বাবলুর রহমান মোল্যার পুত্র ও বিএল কলেজের ডিগ্রী ২য় বর্ষের ছাত্র সোহান মোল্যার সাথে এক লাখ ১ টাকা দেনমোহরে হাজেরা খাতুন ওরফে সুমীর বিয়ে হয়। তবে এটি ছিল সুমীর দ্বিতীয় বিয়ে। এর পূর্বে স্থানীয় কোটা পায়রা ফাজিল মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সুমীর আপন ফুফাত ভাই আকদিয়া বিছালী গ্রামের মিঠুর সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। অল্প দিনের মধ্যে পারিবারিক কলহের জের ধরে তালাক হয়ে যায়। তিন মাসের ব্যবধানে সোহানের সাথে ফের বিয়ে হয়। তবে পিত্রালয়ে গিয়ে সুমী তার সাবেক স্বামীর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ অব্যাহত রাখে বলে পরিবারের অভিযোগ। এ নিয়ে সোহান ও সুমীর মধ্যে প্রায়ই মনোমালিন্য লেগেই থাকত। গত ৯ মার্চ বিকালে সুমীকে তার ভাই সুজন সাথে করে সোহানের বাড়িতে দিয়ে যায়। রাত আনুমানিক ১০টার দিকে সোহানদের ফোন পেয়ে সুমীর পরিবার এসে ঘরের বারান্দায় তার বোনের লাশ দেখতে পায়। তার গলায় আঘাত ও শ্বাসরুদ্ধ করার দাগ দেখতে পেয়ে থানায় অভিযোগ করা হয়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পায়রাগ্রামস্থ সুজনদের পারিবারিক গোরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। অপরদিকে সুজন বাদি হয়ে সোহান মোল্যাসহ অজ্ঞাত আরও ২/৩ জনকে আসামী করে ফুলতলা থানায় মামলা (নং-৫, তারিখ-১০/০৩/২০২০ইং) দায়ের করেন। পুলিশ সোহানকে আটক করে বুধবার খুলনার বিজ্ঞ অতিরিক্ত চিপ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি গ্রহনের পর তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
নিহত কিশোরী গৃহবধু সুমীর মা রাশিদা বেগম এ প্রতিনিধিকে জানান, সুমী কোটা মাদ্রাসায় ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত কিন্তু তার মেধা ভাল না থাকায় পারিবারিক ভাবে তার ফুফাতো ভাই মিঠুর সাথে গত বছর ঘরোয়া কলমা দেয়া হয়। কিন্তু তাদের মধ্যে বনিবনাদ না হওয়ায় সেখান থেকে ছাড়িয়ে আনা হয়। সোহানদের পরিবার সুমীকে দেখে তাদের আগ্রহের কারণে আমার বাবা ছাতিয়ানী গ্রামের ইমান আলী খার বাড়িতে নিয়ে পুণঃরায় বিয়ে দেয়া হয়। তবে সাবেক স্বামীর সাথে পরকিয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে রাশিদা বেগম বলেন, বিভিন্ন সময়ে সোহানের ভগ্নিপতি সুমীর কাছে ফোন করত। কিন্তু সোহানের মা তার জামাইকে কিছু না বলে একতরফা ভাবে সুমীকে দোষারোপ করত। তারই জের ধরে সোমবার রাতে সোহানই সাড়াশি (নারকেশ ছোলা কাজে ব্যবহার হয়) দিয়ে সুমীর গলা চেপে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালিয়েছে। তিনি সোহান ও তার সহযোগিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান।