ফুলতলা সরকারি মহিলা কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে সরকারিকরণ থেকে বঞ্চিত ৮ শিক্ষক কর্মচারী

প্রকাশঃ ২০২৪-০৯-০১ - ১৮:৪৮

ফুলতলা (খুলনা) প্রতিনিধি// সরকারি ফুলতলা মহিলা কলেজ অধ্যক্ষের গাফিলতি ও ষড়যন্ত্রের কারণে ৮ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক -কর্মচারীৃন্দ প্রতিকার এবং অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবিতে উচ্চ আদালতে রিট ও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রেরণ করেছেন।

প্রদত্ত স্মারকরলিপিতে জানা যায়, সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে লিপি খানম ১৯৯৪ সালের ২৫ অক্টোবর শর্ত সাপেক্ষে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। পরের বছর ইনফরমেশন সাইন্স ডিপ্লোমা সার্টিফিকেট অর্জন করায় ১৯৯৭ সালের ১ মার্চ তিনি এমপিওভুক্ত (ইনডেক্স নং-৪১৭৭৫৭) হন। তখন থেকেই তিনি সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে বেতনভাতা ভোগ করতে থাকেন। এদিকে ২০১১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর বিধি বর্হিভ‚তভাবে সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে কলেজ জিবির প্রভাবশালী সদস্যের আপন ভাইঝি লিলা শারমিনকে নিয়োগ দেয়া হয়। ২০১৭ সালের ১ মার্চ তিনিও এমপিওভুক্ত (ইনডেক্স নং-) হন। উল্লেখ থাকে যে, পদ শুন্য বা সৃষ্ট পদ না থাকলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ ষড়যন্ত্রমুলকভাবে লিপি খানমকে ভ‚য়া রেজুলেশনের মাধ্যমে প্রভাষক (গ্রন্থাগারিক) পদে পদায়ন করে। একদিকে লিপি খানমের কাম্য যোগ্যতা ছিল না, অন্যদিকে কলেজে উক্ত পদও ছিলনা। ফলে একই পদে (সহকারী গ্রন্থাগারিক) দুই জনই বিধি বর্হিভ‚তভাবে এমপিওভুক্ত ও বেতন ভাতাদি উত্তোলন করে আসছে। তবে সাংসারিক কারণে লিলা শারমিনের অবস্থান ঢাকায় থাকার করণে বছরের অধিকাংশ সময় তিনি কলেজে উপস্থিত না থেকেও বছরের পর বছর বেতন ভাতাদি উত্তোলন করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

গত ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট কলেজটি সরকারি করণের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি হলে কলেজ কর্তৃপক্ষ ৫৬ টি পদ সৃজন করে সংস্থাপন মন্ত্রনালয়ে প্রেরণ করা হয়। তবে অধ্যক্ষসহ কলেজ কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ন গাফিলতি ও যড়যন্ত্রের কারণে কলেজের প্রভাষক হাবিবুর রহমান, ডালিয়া গাইন, সাঈদুর রহমান, রেশমা খাতুন, শাহীনুর ইসলাম, সহকারী গ্রন্থাগারিক লিপি খানম এবং অফিস সহকারী সিরাজুল ইসলামকে আত্মীকরণ থেকে বাদ দেয়া হয়েছে বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কওছার আলী জমাদ্দার কলেজ প্রতিষ্ঠাকালিন সদস্য থাকলেও তারই কন্যা হওয়ায় তাকে আত্তীকরণের তালিকায় নাম পাঠানো হয়নি বলে লিপি খানমের অভিযোগ। ফলে ভুক্তভোগী শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ এর প্রতিকার এবং অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে উচ্চ আদালতে রিট (নং-৯১৩০, ৯১৩১, ৯১৩২, ৯৬২০, ৯৯০০, তারিখ-১৪/০৮/২৪) করা হয়।

এ ব্যাপারে কলেজ অধ্যক্ষ সমীর কুমার ব্রহ্ম লিলা শারমীনের অনুপস্থিতির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, চলতি বছরে তিনি একদিনও কর্মস্থলে না আসায় তার বেতন কর্তন করা হয়েছে। গতমাসের ৬ তারিখে তিনি চাকুরি থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন। প্রভাষক হাবিবুর রহমান ও ডালিয়া গাইনের কাম্য যোগ্যতা না থাকায় বাদ পড়েছেন, রেশমা খাতুনের এনটিআরসি এর সার্টিফিকেট না থাকায় সঠিক নিয়মে যোগদান হয়নি। শাহিনুর ইসলাম ও লিপন মোহন্ত অন্যাত্র চাকুরী করায় এবং সাঈদুর রহমানের নামে আদালতে মামলা থাকায় তালিকা প্রেরণ সম্ভব হয়নি। লিপি খানমের কাম্য যোগ্যতা না থাকায় গ্রন্থগারিক পদে আত্মীকরণের আওতায় আসেনি। অফিস সহকারী সিরাজুল ইসলাম প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে ব্যর্থ হওয়ায় আত্মীকরণ থেকে বাদ পড়েছেন।