খুলনা : খুলনা নগরীর ফুলবাড়িগেট বালুর মাঠে মেলার নামে চলছে মাদক ও জুয়ার আসর। গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে এই মেলা শুরু হয়েছে। কিন্তু অশ্লীল ও অসামাজিক কাজের অভিযোগে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ওই মেলা বন্ধ করে দেন। কিন্তু হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে, এমন দাবি তুলে ফের মেলা শুরু হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন রাতে হাউজি, চর্কা, গুটিসহ বিভিন্ন ধরনের জুয়ার আসর বসছে। আর আগে থেকেই চলছে র্যাফেল ড্র। ২০ টাকার বিনিময়ে লাখ টাকার পুরস্কার জেতার আশ্বাস দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই প্রতারক চক্র।
অভিযোগ উঠেছে, জেলা পরিষদের সদস্য ও স্থানীয় এক যুবলীগ নেতা এই মেলার মূল উদ্যোক্তা। মেলায় মাদক ও জুয়ার আসর বসলেও এ ব্যাপারে নিস্ক্রিয় খানজাহান আলী থানা পুলিশ। উল্টো জুয়ার টাকা ও র্যাফেল ড্র পুরস্কার পুলিশি প্রহরায় পৌছে দেওয়া হচ্ছে। তামান্নার রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন করে চামেলি র্যাফেল ড্র নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে।
স্থানীয়রা জানান, সার্কাস ও মেলার জন্য অনুমতি নিয়ে গত ১৭ ডিসেম্বর এই মেলা শুরু হয়। কেএমপির পক্ষ থেকে ১৩টি শর্তে এই মেলার অনুমতি দেওয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতম ছিলো মেলায় কোনো ধরনের হাউজি, জুয়া বা র্যাফেল ড্র চালানো যাবে না। মাদকদ্রব্যের বিষয়ে ছিলো কঠোর নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে উল্টো চিত্র।
সরেজমিন ফুলবাড়িগেট মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, মেলাকে কেন্দ্র করে মাদক ও জুয়ার আসর বসেছে সেখানে। দৌলতপুর, খালিশপুরসহ আশপাশের মাদক বেচাকেনার কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে মেলা। এছাড়া সন্ধ্যার পরে সেখানে বসছে হাউজি, চর্কা, গুটিসহ বিভিন্ন ধরনের জুয়া। সবচেয়ে অবাক বিষয় হচ্ছে, জুয়ায় আসার জন্য ওই এলাকায় মাইকিং হচ্ছে। চামেলি র্যাফেল ড্রয়ের টিকিট বিক্রি হচ্ছে পুরো শহরজুড়ে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন ৭০/৮০টি ইজিবাইকে করে র্যাফেল ড্রয়ের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। ১০ টাকা মূল্যের লটারির টিকিট বিক্রির প্রথমদিনেই প্রায় ৩০/৩৫ লাখ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। পুরস্কার দেওয়া হয়েছে সর্বসাকুলে ৫ লাখ টাকার। বাকি টাকা লটারির আয়োজক ও অন্যান্য ব্যক্তিদের পকেটে ঢুকছে।
খুলনা ‘জেলা আইন-শৃঙ্খলা’ এবং ‘সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ’ কমিটির অনুষ্ঠিত মাসিক সভায় মাইকিং করে লটারি, জুয়া এবং এ ধরনের কাজ বন্ধ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছিল। তবে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি।
্এ ব্যাপারে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সিটিএসবি) মনিরা সুলতানা বলেন, কেএমপির পক্ষ থেকে মেলা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলো। তবে মেলা আয়োজকরা উচ্চ আদালত থেকে অনুমতি নিয়ে আবার শুরু করেছে।