ইউনিক ডেস্ক : ১৬৯ কোম্পানির ফের ফ্লোর প্রাইস (শেয়ার দর কমার সর্বনিম্নসীমা) নির্ধারণ করায় খরা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে দেশের পুঁজিবাজার। বিদায়ী সপ্তাহে (৫-৯ মার্চ) সূচকের উত্থান হয়েছে পুঁজিবাজারে। একই সঙ্গে লেনদেন চাঙ্গাভাব দেখা গেছে। বিদায়ী সপ্তাহে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৮০০ কোটি টাকা। এরমধ্যে দেশের প্রধান পুঁজিবাজা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ৭৯১ কোটি টাকা এবং অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ১৯ কোটি টাকার লেনদেন বেড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ১৬৯ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ায় বাজারে সূচকের পতন শুরু হয়। একটি কারসাজি চক্র মনে করেছিল ফ্লোর প্রাইস উঠে গেলে শেয়ারের দাম পড়ে যাবে এবং সেই সুযোগটাকে তারা কাজে লাগাবেন। কিন্তু বিএসইসি পুনরায় ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরছে।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গত বছরের ২১ ডিসেম্বর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১৬৯ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করে কমিশন। ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর অসাধু চক্র বাজারে সক্রিয় হয়। বাজারে সূচকের সঙ্গে লেনদেনও কমতে থাকে। তবে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা চিন্তা করে আবারো ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরছে এবং লেনদেনও গতি বাড়ছে।
সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। আগামী মার্চ মাস থেকে দেশের পুঁজিবাজারে অনেক সুখবর আসা শুরু হবে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রাইমারি মার্কেটে এবং বন্ড মার্কেটে আমরা ভালো করছি। মার্চ থেকে মে জুনের মধ্যে ব্যাংকগুলোর ডিভিডেন্ড চলে আসবে। ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের হাজার হাজার কোটি টাকার সক্ষমতা বেড়ে যাবে। ঠিক কত হাজার কোটি টাকা বাড়বে এর সংখ্যাটা না বলতে পারলেও এটা অনেক বড় হবে। মার্চে অনেক সুখবর আসা শুরু হবে। ’
বাজার বিশ্লেষণে দেথা গেছে, বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দুই হাজার ৫৮৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিলে এক ৭৯৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৭৯১ কোটি ৪ লাখ টাকা বা ৪৪ দশমিক ১০ শতাংশ।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪৬.৪৩ পয়েন্ট বা ০.৭৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৬০.১৮ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫.০৪ পয়েন্ট বা ০.৩৭ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১১.৬৮ পয়েন্ট বা ০.৪৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৬২.৩৩ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ২২৬.৯৭ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৬৩ হাজার ১১৫ কোটি টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৭ লাখ ৬৫ হাজার ৫৯১ কোটি টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন দুই হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা বেড়েছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৮৩টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৩৫টির, কমেছে ২৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২৫টির শেয়ার ও ইউনিট দর।