ইন্দ্রজিৎ টিকাদার, বটিয়াঘাটাঃ বটিয়াঘাটা উপজেলার জলমা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে জন্ম নিবন্ধন সনদ করার ব্যাপারে ব্যাপক অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী সচিবের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। লিখিত অভিযোগে জানা যায়, জলমা ইউনিয়নের সচিব এমদাদুল হক বিভিন্ন সময়ে ভুক্ত ভোগীদের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদান করলেও তা অন-লাইনে সার্স দিয়ে পাওয়া যায় না। এতে ভুক্তভোগী ছাত্র-ছাত্রী, কোমলমতি শিশু, চাকুরীজীবি, মুক্তিযোদ্ধারা ঐ জন্ম নিবন্ধন সনদ বিভিন্ন দপ্তরে জমা দিয়ে যাবতীয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। ঐ সকল জন্ম নিবন্ধনের অধিকাংশই অন- লাইনে সার্স দিলে পাওয়া যাচ্ছে না। সচিব নিজ¯^ আইন তৈরী করে অন লাইনে ১’শ থেকে ২’শ টাকা খরচ নিয়ে অন-লাইনে না পেলে পুনরায় জন্ম নিবন্ধন করতে বলছে। এতে সে ৫’শ থেকে ২ হাজার টাকা বা তার অধিক টাকা দাবী করছে। ভুক্তভোগীরা অতিরিক্ত টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে তাদের অকথ্য গালিগালাজ সহ নানা ধরণের হয়রানী করছে। এছাড়া সচিবের বিরুদ্ধে ওয়ারেশ কায়েম সনদপত্র, মৃত্যুকালীন সনদপত্র, ট্রেড লাইসেন্স, চৌকিদারী ট্যাক্স, বিচার শালিশীর নোটিশ ও রায়ের ক্ষেত্রে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছে। ভুক্তভোগীরা একটি ওয়ারেশ কায়েম সনদ পত্র চাইলে আইন অনুযায়ী ১৫০ টাকা নেওয়া কথা থাকলেও তিনি নানা অজুহাতে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার এবং কোন কোন ক্ষেত্রে ১ থেকে ২ লক্ষ টাকা নেওয়ার হাজারো অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদে সরকার কর্তৃক উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে ৫০টি সেবা অন-লাইনের মাধ্যমে পাওয়ার কথা থাকলেও সচিবের একনায়কতন্ত্রের কারণে সে সব সেবা থেকে এ ইউনিয়নের সাধারণ মানুষকে ইউনিয়ন পরিষদের সকল সেবা অর্থের বিনিময়ে নিতে হচ্ছে। বিশেষ করে জলমা ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দারা সচিবের কারণে বেশী বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী সচিবের অর্থ বাণিজ্য ও নানা রকম হয়রানীর হাত থেকে রেহাই পেতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর গণ স্বাক্ষরিত এক লিখিত অভিযোগ দাখিলকালে সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী অশোক মন্ডল, চয়নিকা মন্ডল, চঞ্চলা বাছাড়, সুশিলা টিকাদার সহ আরো অনেকে। এ ব্যাপারে জলমা ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য অশোক মন্ডলের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান যে, ঘটনাটি সত্য। সচিব পরিষদে বসে বিভিন্ন অনিয়ম করে চলছে। এ ব্যাপারে জলমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আশিকুজ্জামান আশিকের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষটি নিয়ে এ পর্যন্ত আমার নিকট কোন কেউ কোন অভিযোগ করেনি। তারপরও আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। অপরদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরীর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে দোষীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।