বটিয়াঘাটায় রাতের অন্ধকারে খাদ্য সামগ্রী পৌছায় দিচ্ছে সাবেক ছাত্রলীগনেতা

প্রকাশঃ ২০২০-০৪-০৭ - ১৯:২৩

খুলনা অফিস : এসএম ফরিদ রানা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বটিয়াঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগ ও সভাপতি খুলনা জেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিকলীগ। একই সাথে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাহী সদস্য। দেশে মরণব্যাধি করোনা ভাইরাস সংক্রমনের পর থেকে কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত যেভাবে ছুটে চলেছে তাতেই মনে হয় বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মীরা এমনই হয়। এজন্যই বলে হাজার জনের প্রয়োজন হয়না কর্মীর মতো কর্মী একজন হলেই যথেষ্ট। আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমনই কর্মী চেয়েছিলো তার স্বপ্নে সোনার বাংলায়।
ফরিদ রানা’র ফেসবুক আইডি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বিশ্বব্যাপী মরণব্যধি করোনা ভাইরাস আমাদের দেশে ছড়িয়ে পড়ার সংবাদ পেয়ে গত ১১ মার্চ সাবেক এই ছাত্রনেতা নিজ অর্থায়নে সংক্রামক ব্যধি থেকে প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক লিফলেট তৈরীর জন্য ছাপাখানায় দেন। ১৪ মার্চ খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, জেলা পরিষদ চেযারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সাথে রূপসা উপজেলার সেনেরবাজার এলাকায় লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করেন। ১৬ মার্চ জেলা আ’লীগের লিফলেট গ্রহন করে বটিয়াঘাটার বিভিন্ন এলাকায় প্রেরণ করেন। ১৮ মার্চ নিজ অর্থায়নে জনসচেতনতার জন্য নোভেল করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক কয়েক হাজার লিফলেট তৈরী করে ছড়িয়ে দেন খুলনার বিভিন্ন প্রান্তে। নিজেই তার কয়েকজন সহযোদ্ধাদের সাথে নিয়ে শহর পেরিয়ে গ্রামগঞ্জের হাট-বাজার, ঘাট, দোকান, মোড়, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং দূর্গম জনপদে ছুটেযান লিফলেট নিয়ে, বিতরণ করেন সাধারণ মানুষের মাঝে। ১৯ মার্চ স্ব-শরীরে নিজের জন্মভুমি এলাকা বটিয়াঘাটার সুরখালী ইউনিয়নের গাওঘরা ও সুখদাড়া সাপ্তাহিক হাটে হাজার হাজার মানুষের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন। ২০ মার্চ সুরখালী ইউনিয়নের সুন্দরমহল, কোদলা, মঠবাড়ি, শুম্ভনগর গ্রাম ও জেলার দক্ষিণের জনবহুল সাপ্তাহিক বারোআড়িয়া হাটে মানুষের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন। ২১ মার্চ সকালে বটিয়াঘাটা সদরে এবং বিকালে জেলা আ’লীগের পক্ষে নগরীর রেল স্টেশনে লিফলেট বিতরণে অংশনেন। ২৩ মার্চ সকালে খুলনা জেলা যুবরেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নেতৃবৃন্দের সাথে নগরীতে রিক্সা চালকদের মাঝে মাষ্ক বিতরণ এবং বিকালে জেলা আ’লীগের পক্ষে জেলা আ’লীগের সাবেক সিনি: সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল ও অন্যন্য নেতৃবৃন্দের সাথে নগরীর জেলখানা ঘাটে জীবানুনাশক স্প্রে এবং লিফলেট বিতরণে অংশ গ্রহণ করেন। ২৪ ও ২৫ মার্চ প্রিয় জন্মভূমি গাওঘরা গ্রামের সাধারণ মানুষদের সচেতনতা সৃষ্টি ও হাত পরিষ্কার তথা হাত ধুতে উদ্বুদ্ধ করতে নিজ উদ্যোগে অর্ধশতাধিক নলকূপে সাবান বেধে দেন। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের দিনে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে “বটিয়াঘাটা নিউজ” নামে একটি বহুল প্রচারিত অনলাইন পোর্টালে লাইভ সাক্ষাৎকার প্রদান করেন। ২৭ মার্চ নিজ কাধে মেশিন নিয়ে নিজের গ্রামের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, কয়েকটি মোড় ও গায়েরহাটে জীবানুনাশক স্প্রে করেন। ২৮ মার্চ নিজ এলাকার গাওঘরা উত্তরপাড়া জামে মসজিদে নতুন ভবনের ছাদ নির্মাণের পিলারের কাজ অংশ গ্রহণ এবং অর্থ সংগ্রহ করেন। ওই দিন একজন কর্মী হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনা অনুযায়ী এলাকার একজন গরীব মানুষের বাড়িতে খাবার নিয়ে ছুটেযান, যেহেতু সে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে( সম্প্রতি ভারত ফেরত)। ২৯ ও ৩০ মার্চ খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, জেলা পরিষদ চেযারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ’র পক্ষে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে বটিয়াঘাটা উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ কাজে অংশ গ্রহণ করে। ওইদিন আবারও গাওঘরা উত্তরপাড়া জামে মসজিদে নতুন ভবনের ছাদ নির্মাণের পিলারের কাজে সম্পৃক্ত এবং অর্থ সংগ্রহ করেন। ৩১ মার্চ খুলনা জেলা যুবরেড ক্রিসেন্ট’র যুব প্রধান শেখ আল-আমিনের সহযোগীতায় কয়েকটি মসজিদে জীবানুনাশক স্প্রে করা হয়। ১ এপ্রিল সুরখালী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম বুনারাবাদ, সাংকেমারী ও বস্তোবুনায় সাধারণ মানুষের মাঝে লিফলেট বিতরণ ও গরীবদের মাঝে মাষ্ক বিতরণ করেন। এরই মধ্যে ২ এপ্রিল নিম্ম আয়ের মানুষের মাঝে যখন খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে, কিন্তু লজ্জায় বলতে পারছেন না এমন সংবাদ শুনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন রাতের আধারে এলাকার ওই সকল মানুষের মাঝে খাবার পৌছায় দিবেন। ওইদিন খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, জেলা পরিষদ চেযারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সাথে বটিয়াঘাটা ও দাকোপ উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছুটেযান খাবার দিতে। সন্ধ্যায় এলাকায় ফিরে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ, রাত ১০টার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌছায় দেন। ৩, ৪, ৫ ও ৬ এপ্রিল আবারও সুরখালী ইউনিয়নের প্রত্যান্ত গ্রাম যেখানকার মানুষ করোনার ভয়াবহতা সম্পর্কে আজও অনেক অজানা যেমন সাপা,বারোভূইয়া, ভগোবতীপুর, সুরখালী, টাকিমারী, রায়পুর, খড়িয়ালসহ বিভিন্ন স্থানে সচেতনতামূল লিফলেট ও মাষ্ক বিতরণ করেন। আর অব্যহত ভাবে রাতের আধারে এলাকার নিম্ম ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের দরজায় তার সাধ্যনুযায়ী খাদ্য সামগ্রী পৌছায় দিচ্ছেন।
একজন মুজিব আদর্শের নিবেদিত সৈনিকের এমন কর্মকান্ডে মঞ্চমূখ বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণীর মানুষ। বিশ্বাস প্রতাপ নারায়ন নামের এক ব্যক্তি তার ফেসবুক অইডিতে খুলনা জেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিকলীগের সভাপতি এসএম ফরিদ রানাকে “মানবপ্রেমী” উপাধী দিয়ে লিখেছেন বিশ্বজুড়ে মানুষ যখন গৃহবন্ধি তখন খেয়ে না খেয়ে সহযোগীদের নিয়ে সকাল-দুপুর-রাতের সীমানা ভেদ করে ছুটে চলেছে নগর-বন্দর পেরিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলের দূর্গর হাট-বাজার ও গ্রামে। শুধুমাত্র মানুষকে সচেতন করার জন্য নিজ অর্থব্যয়ে করোনা’র করণীয় প্রচার পত্র বিলি করতে। খুলনা মহানগর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক হাফেজ শামীম রিখেছেন, ভালো কাজ। অপূর্ব কুমার লিখেছেন, ভাইজান সত্যিই মন থেকে অবনত মস্তকে স্যালুট জানাই আপনাকে। রহিম রানা লিখেছেন, মহৎ কাজের জন্য আল্লাহ আরও অনেকেরে পাশে দাড়ানোর তৌফিক দান করুন। রেজাউল করিম হাওলাদার মহান এই কাজের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন। এছাড়া অনেকই প্রশংসা করেছেন বিভিন্ন শব্দ চয়নের মধ্যমে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, মানুষ হয়ে মানুষের জন্য কিছু করাটাই আমার আত্মতৃপ্তি। তাছাড়া আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সংগঠনের একজন কর্মী।