বটিয়াঘাটা : দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চুইঝাল এখন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলের ভোজন রসিকদের কাছে প্রিয় ও পছন্দের একটি মসলা জাতীয় ফসল। খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচীর মাধ্যমে উপজেলার সাচিবুনিয়া ও ঝড়ভাঙ্গা গ্রামে আধুনিক ও বানিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করা হচ্ছে চুইঝালের। উপজেলার গ্রামদুটি এখন মানুষের কাছে চুই গ্রাম নামে পরিচিতি পাচ্ছে। সাচিবুনিয়া গ্রামের প্রায় একশত এবং ঝড়ভাঙ্গা গ্রামের অর্ধ শতাধিক পরিবার চাষ করেছে কয়েকশত চুইঝাল গাছ। গ্রামদুটির দেখাদেখি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামেও বানিজ্যিকভাবে চুইঝাল চাষ শুরু হয়েছে। চুই লতা জাতীয় গাছ, এর কান্ড লতানো প্রকৃতির, ধুসর বর্ণের, পাতা পান পাতার আকৃতির সবুজ বর্ণের। রসালো ঝাল স্বাদেও চুইঝাল এর কান্ড মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মাংসের সঙ্গে এর ব্যবহার বেশী। চুই লতা জাতীয় গাছ বলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আম, জাম, নারকেল, সুপারি ইত্যাদি গাছের গোড়ায় এটি রোপন করা হয়। রোপনের এক বছর পর থেকেই চুই খাওয়ার উপযুক্ত হয়, তবে কয়েক বছর বয়সী চুইয়ের স্বাদ বেশী ভালো। চুইঝাল স্থানীয় খুলনা, যশোরের বাজার ছাড়াও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক চাহিদা সম্পন্ন একটি ফসল। সাচিবুনিয়া গ্রামের সফল চুইঝাল চাষি শচিন মন্ডল বলেন, ছোট বেলা থেকেই বাগানে চুইঝাল গাছ দেখেছি, খেয়েছি। প্রায় বছরখানেক আগে উপজেলা কৃষি অফিসের অফিসার জীবানন্দ দা এর পরামর্শে চুই চাষ করতে শুরু করি। এখন আমার প্রায় একশটি চুইঝাল ঝাড় আছে। সামান্য কিছু বিক্রি করেছি, ৪-৫ মাস পর ৩৫-৪০ হাজার টাকার চুইঝাল বিক্রি করতে পারবো। সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জীবানন্দ রায় বলেন, চুইঝাল একটি উপকারী এবং বানিজ্যিক ফসল। খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। পতিত জমি ব্যবহার করে অল্প সময়ের মধ্যে কৃষকদের অধিক মুনাফার জন্য আমরা চুইঝাল চাষের পরামর্শ দিচ্ছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রুবায়েত আরা বলেন, চুইঝাল অপ্রচলিত অর্থকারী ফসল। এটি যে অল্প সময়ের মধ্যে অধিক আয়ের একটি বিষয় হতে পারে, সে বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করছে।