বরিশাল : বরিশাল মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের কাঁচা বাজারে শাক্ সবজির মূল্য অস্বভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারন মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় স্থানীয় প্রশাসন ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বিভিন্ন হাট-বাজারে সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করলেও আশানুরুপ ফল হচ্ছে না।
জানাযায়, বরিশাল মহানগরীর নথুল্লাবাদ বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন, হাতেম আলী চৌমাথা বাজার, বটতলা বাজার, রুপাতলী বাজার, নতুন বাজার, বাংলা বাজার, পোর্ট রোড বাজার, কাশিপুর বাজার, কাউনিয়া বাজারসহ নগরীতে ছোট বড় অর্ধশত স্থানে কাঁচা বাজার বসে। এসব বাজার গুলোকে বাজার মনিটরিং কমিটি, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বাজার নিয়ন্ত্রনে সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করেন। মাঝে মধ্যে ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে জরিমানা আদায় করা হয়। এসকল কার্যক্রম বাজার নিয়ন্ত্রে সুখবর দিচ্ছে না বরং প্রতিদিন বাজার উর্ধ্বগতি হচ্ছে।
গতকাল শনিবার নগরীর হাতেম আলী চৌমাথা বাজারে আলু কেজি ৬০ টাকা, পেঁয়াজ কেজি ১৩০ টাকা, রসুন কেজি ২২০ টাকা, সিম কেজি ২২০ টাকা, টমেটোর কেজি ২৬০ টাকা, বরবটি, ঢ়েড়স কেজি ১২০ টাকা, পোটল কেজি ১২০ টাকা, পাতা কপি কেজি ১০০ টাকা, কচু ৮০ টাকা। বেশিভাগ তরকারীর কেজি ১০০ টাকার উপরে। এদিকে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চললেও চাষের মাছে বাার সয়লাভ। আগের দিনের চেয়ে মাছের মূল্য চড়া। বটতলা বাজারের ক্রেতা মো. আমিনুল ইসলাম জানান, বাজারে এলে মাথা ঠিক থাকে না। ডিমের ডজন ১৭০ টাকায় কিনতে হলো। সবজি কেজি ১০০ টাকার উপরে। প্রতিদিনের আয় থেকে ব্যয় নির্বাহ করা অত্যান্ত কঠিন। তিনি আরও জানান, একজন শ্রমিক দৈনিক মজুরী পান ৫/৬ শত টাকা। এ টাকা দ্বারা সংসারের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বাসা ভাড়া দেওয়া যায় না। এনজিও কর্মী আলেয়া পারভীন জানান, তার স্বামীর কয়েকদিন আগে চাকরি হারিয়েছেন। তিনি মাসিক বেতন পান ২১ হাজার টাকা। ওই টাকা দিয়ে ৫ জনের সংসার চলে না। তার মাসিক ঘরভাড়া ৬ হাজার টাকা। বাচ্চার লেখাপড়া খরচ। সংসারের চাউল, ডাল এবং তরকারি কিনে প্রতিমাসে দেনা হচ্ছি। কি কবর, মাথায় কাজ করে না। অভাব-অনাটনের সংসার। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ পরিচালক অপূর্ব অধিকারী, জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সুমি রানী মিত্র গত বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা কাঁচা মরিচের আড়তে অভিযান পরিচাল করেন। এসময় বেশি দামে মরিচ বিক্রি ও রশিদ আছে কিনা যাচাই-বাছাই করা হয়।
অপূর্ব অধিকারী জানান, কাঁচা মরিচের দাম বাড়ানোর কারণে আমরা ব্যবসায়ীদের সর্তক করেছি। এছাড়া, নগরীর হাটখোলা মরিচ পট্রিতে গুড়াঁ মরিচ ও হলুদের দোকানে মূল্য তালিকা টাঙিয়ে না রাখার অপরাধে চারটি দোকানে ২১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিনভর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে সচেতনতা মুলক লিফলেট বিতরণ করে এবং পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধে প্রতিটি পণ্যের মূল্য তালিকা টাঙিয়ে রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।