বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পিছিয়ে খুলনা সিটি, নগরবাসীর বাসীর মধ্যে সচেতনতার অভাব

প্রকাশঃ ২০২২-০৪-১৫ - ০২:০৭

ইউনিক ডেস্ক :

খুলনা মহানগরীতে দিন দিন বাড়ছে অপরিকল্পিত বর্জ্য পরিশোধন ব্যবস্থাপনা। যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে নোংরা-আবর্জনা। নোংরা ফেলার স্থানেরও নেই কোনো সু-ব্যবস্থা। সব মিলে নগরীতে তৈরি হয়েছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার এক বিশৃঙ্খল অবস্থা।

যত্রতত্র বর্জ্য ফেলার কারণে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এদিকে পরিবেশ বাচঁলে জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করা যাবে। আর জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করা গেলে দেশ বাচঁবে এবং দেশ বাচলে বাচঁবে দেশের মানুষ কিন্তু সেই পরিবেশ দূষণ যদি রোধ করা না যায় তাহলে জলবায়ু, দেশ ও দেশের মানুষ হুমকির মুখে পড়বে। বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ দূষণ পৃথিবী জুড়ে একটি অন্যতম প্রধান সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে যা সমাধান করা আজও সহজে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ঠিক তেমনি খুলনা নগরীর পরিবেশও বিভিন্ন দিক দিয়ে দূষিত হচ্ছে। যা বন্ধ বা সমাধান, কোনো আশাই পাওয়া যাচ্ছে না।

নগরীর খালিশপুর নেভীচেক পোস্ট মোড়ের পাশেই রয়েছে বড় ভাঙ্গা একটি ডাস্টবিন। যেখানে ঐ সকল বাসিন্দাসহ ভ্যান যোগে সকল নোংরা-আবর্জনা ফেলা হয় সেই ভাঙ্গা ডাস্টবিনে, যা আবার পুরাতন যশোর রোডের পাশে অবস্থিত।

সেখানকার এক দোকানদার জানান, ভাঙ্গা ছোট ডাস্টবিনে যে পরিমাণে নোংরা ফেলা হয় তাতে সৃষ্টী হয় প্রচুর দুর্গন্ধ, এই দুর্গন্ধের মধ্যে রোজা রাখা কষ্ট দায়ক হয়ে উঠেছে। এমনকি রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারীদেরও পড়তে হয় দূর্ভোগে। বাতাসে প্রায়ই রাস্তার মাঝে উড়ে আসে নোংরাগুলো এতে গাড়ি চালকদের প্রয়াত এই দুর্গন্ধ সহ্য করে চলতে হয়।

ঠিক তেমনি নিরালা কাঁচা বাজারের পাশে রয়েছে নোংরা-আবর্জনার বড় স্তুপ। রাস্তা সংস্কারের জন্য নোংরার গার্বেজ ভাঙ্গা হলেও তা আজও মেরামত করা হয়নি।

কাঁচা বাজারে বাজার করতে আসা এক ভদ্রলোক বলেন, নিরালার কাঁচা বাজারের কাছে এই স্থানটিতে তিনটি ওয়ার্ডের আবর্জনা ফেলা হয়। দিনে দু’বার পরিষ্কার করার পরও স্থানটি পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব হয়না। এমনকি গরমের ভাবসা বাতাসে আবর্জনা পচে তৈরি হওয়া প্রচন্ড দুর্গন্ধে সাধারণ মানুষই শ্বাস নিতে পারছেনা রোজাদারদের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও কষ্টের। যার দরুণ সাধারণ মানষ বিশেষ করে রোজাদারদের প্রচন্ড ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

এছাড়াও সড়ে জমিনে ঘুড়ে দেখা যায়, খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে ফুটপাতের উপর অতীতে নির্মাণ করা  ডাস্টবিন এখনও রয়ে গেছে যার কারণে পথচারিদের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ হয়ে আছে। চলতে হচ্ছে প্রধান সড়কে নেমে। আবার ডাকবাংলা সিমেট্টি রোডের উপর অপরিকল্পিত ভাবে ফেলে রাখা হয়েছে একটি বড় লোহার ডাস্টবিন যার ফলে নিঃসন্দেহে রাস্তা সরু হয়ে পড়েছে যার ফলে প্রতি নিয়ত এই রাস্তায় দেখা দেয় যানযট। খালিশপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মাঠের পাশের খাল এখন পরিষ্কারের অভাবে পরিণত হয়েছে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় যে, নগরীর অধিকাংশ রাস্তার পাশে নেই কোনো বক্স ডাস্টবিন যার ফলে পথচারী, সাধারণ মানুষকে ময়লা আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেলতে দেখা গেছে। বিশেষ করে বিদ্যুতের খুটির গোড়ায় নোংরা স্তুপ আকারে জমা থাকতে দেখা গেছে।

খুলনা সিটি কর্পোরেশনের চিফ কনজারভেন্সি ম্যানেজমেন্ট অফিসার মোঃ আব্দুল আজিজ বলেন, সর্বোপরি পাবলিককে সচেতন হতে হবে। আর খুলনা প্রেস ক্লাবের সামনে হয়তো ডাস্টবিনটা আগের সময়ের সে জন্য আমার চোখে পড়েনি। এখন বিষয়টা জানার পর খুব শীঘ্রয় আমি পদক্ষেপ নিব।

নিরালা কাঁচা বাজারের পাশে নোংরা স্তুপের বিষয়ে তিনি বলেন, আপাতত রাস্তা নির্মাণ শেষ না পর্যন্ত এখানে অস্থায়ী ভাবে কাজ চলবে। তবে আমরা এ নোংরা দিনে তিনবার ট্রাকযোগে পরিষ্কার করে থাকি। কেসিসি ইতোমধ্যেই আমাদের নিরালা দীঘির পার ও তাবলিগ মসজিদের পিছনে ময়লা ফেলানোর স্টেজ তৈরি করার জন্য জায়গা বরাদ্দ করেছে।

এছাড়া আগামী সাত থেকে আট মাসের মধ্যে নগরীর বিভিন্ন স্থানে, ফুটপাত, পার্ক, বাজার, মহল্লায় লোহার ডাস্টবিন দেওয়া হবে এবং নোংরা সংগ্রহের একটি বিশেষ ট্রাকযোগে নিয়ে যাওয়া হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে মোঃ আব্দুল আজিজ সবকিছু সময়ের মধ্যে করার আশ্বাস দেন।