বিপ্লব দে, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের অর্জনগুলো জনগণের ঘরে ঘরে গিয়ে তুলে ধরতে হবে।
বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের দিনব্যাপী বর্ধিত সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নেত্রী যাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন তিনি একজন ত্যাগী ও পরীক্ষিত রাজনীতিক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা। উনি নির্বাচিত হলে নগর উন্নয়নে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা পালনে আমরা তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।
বর্ধিত সভায় সাংগঠনিক নির্দেশনা উপস্থাপন করে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, এই নির্দেশনা অনুযায়ী চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ অভিন্ন ও ঐক্যবদ্ধ থাকবে।
মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, দলকে সংগঠিত করার শক্তি অর্জনে তৃণমূলকেই গুরুত্ব দিচ্ছি এবং কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী তৃণমূল স্তর থেকে দলকে সংগঠিত করে আগামী চসিক নির্বাচনে নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করতে হবে। এক্ষেত্রে সবার মতামত এবং পরামর্শ নিয়ে আসন্ন চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে এম. রেজাউল করিম চৌধুরীকে আমাদেরকে বিজয়ী করতে হবে। নৌকা মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রের প্রতীক। এই নৌকা যার হাতে নেত্রী তুলে দিয়েছেন তাকে বিজয়ী করা ছাড়া আমাদের আর কোন বিকল্প নেই।
মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগের ঐক্যের ভিতকে আরো মজবুত করতে হবে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে এমন কোন শক্তি নেই আওয়ামী লীগের অগ্রযাত্রাকে রোধ করতে পারে।
তিনি বলেন, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা এবং নেতাকর্মীদের পারষ্পরিক মতামতের ভিত্তিতে আমরা যে শক্তি অর্জন করেছি তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে। সম্প্রতি করোনায় যাদেরকে আমরা হারিয়েছি তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারা যাতে দ্রুত আরোগ্য লাভ করে তাদের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে প্রার্থনা করছি।
মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বর্ধিত সভায় বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ, দেওয়ানবাজার ওয়ার্ড সভাপতি পেয়ার মোহাম্মদ, পশ্চিম মাদারবাড়ী ওয়ার্ড সভাপতি হাজী আলী বক্স, উত্তর পাঠানটুলী ওয়ার্ডের সভাপতি আবদুল হান্নান, দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের সভাপতি অধ্যাপক মো. ইসমাইল, জালালাবাদ ওয়ার্ডের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদ আহমদ চৌধুরী, শুলকবহর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক শেখ সরওয়ার্দী, দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. হাসান, জামালখান ওয়ার্ডের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মিথুন বড়ুয়া, চান্দগাঁও ওয়ার্ডের যুগ্ম আহ্বায়ক নিজাম উদ্দিন নিজু, সরাইপাড়া ওয়ার্ডের যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফুল হক খুশি।
সভামঞ্চে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, সুনীল কুমার সরকার, উপদেষ্টা শফর আলী, শেখ মোহাম্মদ ইছহাক, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য বদিউল আলম, নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, আহমেদুর রহমান সিদ্দিকী, হাজী মো. হোসেন, জোবাইরা নার্গিস খান, দিদারুল আলম চৌধুরী, আবদুল আহাদ, মো. আবু তাহের, জহরলাল হাজারী।
বর্ধিত সভার শুরুতে সম্প্রতি করোনাকালে যারা মৃত্যুবরণ করেছে তাদের স্মরণে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত পাঠ এবং সরকারের সাফল্য কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন মহানগর আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হাজী জহুর আহমদ।
বর্ধিত সভায় করোনায় সম্প্রতি যে সকল থানা এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক, যুগ্ম-আহ্বায়কগণ মৃত্যুবরণ করেছেন সে সকল থানা এবং ওয়ার্ড সমূহে সভাপতির মৃত্যুতে পরবর্তী ১নং সহ-সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের মৃত্যুতে ১নং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকদের এবং আহ্বায়কের মৃত্যুতে ক্রমানুসারে ১নং যুগ্ম আহ্বায়ককে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হিসেবে পদায়ন করা হয়। এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা ওয়ার্ড এবং থানায় প্রেরণ করা হবে।
চসিক নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে দলের একের অধিক প্রার্থীদের বিষয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
মহানগর আওয়ামী লীগের ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডের আওতাধীন ১২৯টি ইউনিটে সাংগঠনিক কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর সাবেক মন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মরহুম এম এ মান্নান এবং ২২ সেপ্টেম্বর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা কাজী ইনামুল হক দানুর মৃত্যুবার্ষিকী পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
একই সাথে ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে স্বাস্থ্য বিধি মেনে মুসাফিরখানা মসজিদে বিকাল ৩টায় খতমে কোরআন, বাদে আছর মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে।