বাগেরহাট : ভারতের আগ্রার তাজমহলের আদলে গড়ে তোলা বাগেরহাট চন্দ্রমহল ইকোপার্কে প্রতিনিয়ত বাড়ছে দর্শনার্থীর ভিড়। বাগেরহাট সদর উপজেলার রনজিতপুর এলাকায় অবস্থিত “চন্দ্রমহল ইকোপার্ক” এখন বিনোদন প্রেমীদের অন্যতম আকর্ষনে পরিনত হয়েছে। নতুন-নতুন সব রাইডে শিশুদের পাশাপাশি আগ্রহ বাড়ছে বড়দেরও। তাই শীতের আমাজে পরিবার নিয়ে ছুটি কাটাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে থেকে অনেকেই আসচ্ছেন মসজিদের শহর বাগেরহাটে। বাগেরহাট ঘুড়তে আসা এসব পর্যটকরা বিশ^ ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ ও সুন্দরবন দেখার পাশাপাশি মুগ্ধ হচ্ছেন চন্দ্রমহল ইকোপার্ক দেখেও।
২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থী ভিড় করছেন পার্কটিতে। চন্দ্রমহল ইকোপার্কটি সৃষ্টির মধ্যে সৃজনশীলতা রয়েছে।এর মাধ্যমে শুধু বিনোদনই নয়, ইতিহাস ঐতিহ্য জানারও সুযোগ রয়েছে। বিশ^ ঐতিহ্য সুন্দরবন, ষাটগম্বুজ মসজিদ, খানজাহান (রহ:) এর মাজারের পাশাপাশি চন্দ্র মহলেও দর্শনার্থীরা ভ্রমণ করছেন। শতাধিক নারিকেল গাছ, বাহারী দেশি-বিদেশী ফুল-ফল, শিশুদের জন্য ট্রেন, হেলিকাপ্টারসহ আকর্ষনীয় নানা রাইড ও ইতিহাস ঐতিহ্য বিষয়ক নানা প্রতিকৃতি দিয়ে সাজানো এই নান্দনিক পার্ক দেখে মুগ্ধ হচ্ছে দর্শনার্থীরা।
পার্কটির প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ আমানুল হুদার স্ত্রী নাসিমা হুদা চন্দ্রার নামানুসারেই পার্কটির নামকরণ করা হয়েছে। প্রায় ১০ একর জমির ওপর গড়ে ওঠা এই চন্দ্রমহলের মূল আকর্ষণ ভারতের তাজমহলের আদলের তৈরী বাড়ীটি। যার চারিদিকে পানিবেষ্টিত। একপাশে বাঁশের পুল দিয়ে এখানে যেমন যাওয়া যায় তেমনি মূল প্রবেশ পথটি পানির মধ্য সুড়ঙ্গ পথ দিয়েও যাওয়া যায়। যার দু’পাশে রয়েছে দেশি-বিদেশী নানা প্রজাতির ফুল গাছ। এছাড়া বিভিন্ন ভাস্কর্যের মাধ্যমে দেশীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়েছে। এখানে বেশ কয়েকটি পুকুর রয়েছে। চন্দ্রমহলের অভ্যন্তরে প্রতিষ্ঠাতার সংগৃহীত বিভিন্ন জিনিসপত্র প্রদর্শিত হয়েছে। সেখানে গ্রাম্য মানুষের চরিত্র নিয়ে প্রতিকৃতি তৈরি করা হয়েছে। আদি আসবাবপত্র আর তৈজসপত্র ছাড়া কিছু স্থির ছবি রয়েছে সেখানে। লেকের পাড় রয়েছে নারিকেল গাছের সারি। গ্রাম পঞ্চায়েত ও মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যের পাশাপাশি রয়েছে মাস্টারদা সূর্যসেন, বেগম রোকেয়া,আতাউল গনি ওসমানী, মাদার তেরেসা, মহাত্মা গান্ধীর ভাস্কর্যও। রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলসহ কবি-সাহিত্যিকদের সংক্ষিপ্ত জীবনীও। শিশুদের খেলার জন্য রয়েছে রেলগাড়ি, মটর বাইকসহ অন্যান্য খেলনা সামগ্রী।
চন্দ্রমহলের দেখাশোনার দায়িত্বে নিয়োজিত ম্যানেজার কাবুল শেখ বলেন, করোনার কারণে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এখন আবারো পর্যটকদের আনা গোনায় জমজমাট হয়ে উঠছে পার্কটি। এছাড়া পর্যটকদের কাছে পার্কটি আরও আকর্ষনীয় করে তুলতে নতুন-নতুন সব রাইড যোগ করা হয়েছে। যার ফলে দর্শনার্থী আগমনের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পার্কটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে। পার্কটিতে জনপ্রতি প্রবেশমূল্য ৫০ টাকা।