বাড়তি ভ্যাটে ইন্টারনেটের উচ্চমূল্য

প্রকাশঃ ২০১৯-০৪-০৪ - ১৩:৫৬

ঢাকা অফিস : উচ্চমুল্যের কারণে প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকা গচ্চা যাচ্ছে ইন্টারনেট গ্রাহকদের। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, অবকাঠামোগত অসুবিধা আর অতিরিক্ত ভ্যাট আরোপের কারণেই ইন্টারনেটের দাম কমছে না। তবে, গ্রাহক অসন্তুষ্টি আর ব্যবসায়ীদের ক্রমাগত দাবির মুখে, আসন্ন বাজেটে ইন্টারনেটে ভ্যাট হার কমানোর কথা ভাবছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

যাতায়াতের জন্য গাড়ি বা মোটর বাইক খোঁজা কিংবা অনলাইনে খাবারের ফরমায়েশ দেয়ার পাশাপাশি দাপ্তরিক সব গুরুত্বপুর্ণ কাজ এখন সারা হচ্ছে মুঠোফোনের ইন্টারনেট ব্যবহার করে।

বাইক রাইড শেয়ার করা এক ইন্টারনেট গ্রাহক বলেন, ‘আমরা সারাদিন রাইড শেয়ার করি এ জন্য সব সময় ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হয়। এতে, আমাদের দৈনিক খরচ হয় প্রায় ৫০ টাকা।’ এছাড়া কেউ যদি ডেটা কিনে ব্যবহার করেন তাহলে দেখা যায় মাসিক পাঁচ’শ থেকে ছয়’শ টাকা শুধুমাত্র ডেটা ব্যবহার করতেই খরচ হয়ে যাচ্ছে। তাই গ্রাহক আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী বাজেটে যেন ইন্টারনেটের ওপর আরোপিত ভ্যাটের হার কমানো হয়।

টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বিটিআরসির তথ্য মতে, দেশে এখন মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৮ কোটি ৬০ লাখ। আইএসপিসহ মোট ব্যবহারকারী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৯ কোটি ২০ লাখ।

এক জরিপ অনুযায়ী, এক জিবি ডেটা কিনতে বাংলাদেশের গ্রাহকরা খরচ করেন গড়ে প্রায় ৮৩ টাকা। যেখানে প্রতিবেশী দেশ ভারতে খরচ হয় গড়ে ১৮ রুপি করে।

এ বিষয়ে মোবাইল ফোন অপারেটররা বলছেন, নিয়ন্ত্রণমূলক অসুবিধা এবং বাড়তি ভ্যাটের কারণেই খরচ বেড়ে যাচ্ছে।

মোবাইল ফোন অপারেটর বাংলালিংক এর চিফ অব কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, ট্রান্সমিশন, ফাইবার, সুইচিং এবং বিক্রয় খরচসহ অপারেটরদের অনেক বেশি খরচ পড়ে যায়। এরমধ্যে আমাদের এখন পাঁচ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। কিন্তু আগে যেটা ছিল আমরা ১৫ শতাংশ রিবেট ট্যাক্স দিতাম। যা এখন পাচ্ছি না। এতে আমাদের খরচ আরও বেড়ে গেছে।’

ইন্টারনেট প্যাকেজের এই উচ্চ দামের মধ্যেও তুলনামুলক কম দামে সেবা দিচ্ছে ব্রডব্যান্ড সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে, এ ক্ষেত্রেও সুযোগ আছে দাম কমানোর।

এ ব্যাপারে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- আইএসপিএবি এর সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, ‘বর্তমান সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী আমরা কোনো অবকাঠামো দাঁড় করাতে পারিছিনা। শহর থেকে যখন গ্রামে ব্যান্ডউইথ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তখন কিন্তু আলাদা একটা খরচ হচ্ছে এতে ব্যয় বাড়ছে। সরকার কিন্তু ঠিকই ইউনিয়ন পর্যন্ত ইন্টারনেট ফাইবার নিয়ে যাচ্ছে কিন্তু আমরা সেই ফাইবারের কোনো সুবিধা পাচ্ছিনা। এটা যদি প্রাইভেট সেক্টরে ছেড়ে দেয়া হয় তাহলে ইন্টারনেট ব্যবসায়ীরা খুব সহজেই সবখানে ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে দিতে পারবে।’

এছাড়া, ফাইবার অপটিক এবং নেটওয়ার্কিং ডিভাইসের ওপর এখনও উচ্চ হারে ট্যাক্স এবং ভ্যাট আরোপ করা আছে বলেও জানান আইএসপিএবি এর সভাপতি আমিনুল হাকিম।

ইন্টারনেটের ভ্যাট হার কমানোর জন্য ব্যবসায়ীরা কয়েকবার আবেদন করেছেন রাজস্ব বোর্ডে। এখন, রাজস্ব বোর্ড জানাচ্ছে, আগামী অর্থবছরে আগের মত ভ্যাটে রিবেট পদ্ধতি ফিরে আসতে পারে।