ইউনিক ডেস্ক : বিএনপি-জামায়াত ধ্বংস করে, আর আওয়ামী লীগ সৃষ্টির মাধ্যমে জনগণকে সেবা দেয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত জাতীয় ভূমি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন সরকারপ্রধান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভূমি অফিস পোড়ানোর ফলে অবশ্য একটা লাভ হয়েছিল, ইউনিয়ন পর্যায়ের ভূমি অফিসের দুরবস্থা প্রকাশ্যে এসেছিল। পরে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকার ভূমি অফিসগুলোর সংস্কার করে সেবার মান বৃদ্ধি করে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশে ভূমি নিয়ে সামাজিক-পারিবারিক ছাড়াও নানান সমস্যা দেখা দেয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকার গঠনের পরই সর্বোচ্চ ২৫ বিঘা পর্যন্ত ভূমির কর মওকুফ করেন। পাকিস্তান আমলে ভূমির যত সার্টিফিকেট মামলা ছিল, সব মামলা বাতিল করেন বঙ্গবন্ধু। সেই সঙ্গে ভূমিহীনরাও যেন জমি পায় গুচ্ছগ্রামের মাধ্যমে তার ব্যবস্থা করেন।’
এবছর দেশে প্রথমবারের মতো ভূমি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা তুলে ধরার পাশাপাশি ভূমিসেবা ডিজিটালাইজেশনের ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জসমূহ খুঁজে বের করে তা মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণে ২৯ থেকে ৩১ মার্চ তিন দিনব্যাপী এই জাতীয় ভূমি সম্মেলন আয়োজন করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জমির মালিকানা সংক্রান্ত সামাজিক ও পারিবারিক সমস্যার অবসান এবং ঝামেলামুক্ত সেবা নিশ্চিত করতে ভূমি ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়ে বলেন ‘ভূমির মালিকানা সুনির্দিষ্ট করার জন্য ভূমি বন্টন ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজ করতে হবে এবং এর ফলে পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যার সমাধান হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমাজে এটা খুবই সাধারণ ঘটনা যে ভাই-বোন উভয়েই একে অপরকে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করে-যার ফলে হামলা, হত্যা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
তিনি আরো বলেন, ‘যদি একটি সঠিক ভূমি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়, তাহলে সমস্যার সমাধান হবে।’ শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সকল মানুষের জমির মালিকানা রক্ষার ব্যবস্থা নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আপনি দেশে এবং বিদেশে যেখানেই থাকুন না কেন- আপনার (দেশবাসী) সম্পত্তি আপনারই থাকবে। আমরা আপনার অধিকার সুরক্ষিত ও সুরক্ষার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি।’
জমি সংক্রান্ত পরিষেবা পাওয়ার সময় জনগণকে কিছুতেই ঝামেলার সম্মুখীন করা যাবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একটি ডিজিটাল ল্যান্ড সিস্টেম তৈরি করছি বলে সমস্যাটি আর থাকবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ভূমি মন্ত্রণালয়ের গৃহীত সাতটি উদ্যোগের প্রতিটি একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
একটি আধুনিক, সময়োপযোগী ও ডিজিটাইজড ভূমি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য তার সরকারের পদক্ষেপের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার অনলাইন ভূমি নামজারি এবং কিউআর কোডসহ ডিসিআর ও ভূমি কর প্রদান ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছে। এখন যে কেউ তার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার করে অনুসন্ধান করে তার জমির অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই ব্যবস্থা চালু করার ফলে জনগণ দ্রুততম সময়ে জমি সংক্রান্ত সেবা পাচ্ছে। ভূমি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থার সম্পূর্ণ ডিজিটাইজেশন খুব শীঘ্রই সম্পন্ন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী জনগণকে ঝামেলামুক্ত ও দ্রুত ভূমি সংক্রান্ত সেবা দিতে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকতার সাথে কাজ করার আহ্বান জানান।