বেনাপোল, যশোরঃ যে সড়কটির কারনে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলে এতো কর্মযজ্ঞ। যার বুক চিরে প্রতিদিন হাজার হাজার কোটি টাকার মালামাল আমদানি-রফতানি করা হচ্ছে। বেনাপোল কাস্টমস হাউজ, বন্দরসহ বিভিন্ন ভাবে সরকারি কোষাগারে প্রতিদিন জমা পড়ছে ৫/৬ কোটি টাকা। সেই সড়কটির প্রতি কারও নজর নেই। অযত্ম-অবহেলা যা বর্তমানে যান চলাচল দুরে থাক মানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যে কোন সময় বন্ধ হয়ে যেত পারে এই সড়কটি। দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল কাস্টমস অফিস ও বন্দরের পাশ দিয়ে ছোট আঁচড়া মোড় থেকে বন্দরের রেল পথ পর্যন্ত মাত্র আধা কিলোমিটার সড়কটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় যে কোন সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে সাধারন ব্যবসায়ী, ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ীসহ মোটর শ্রমিক নেতৃবৃন্দ আশংকা প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশলী অধিদপ্তরের (এলজিইডি) এ সড়কটি বছরের পর বছর সংস্কার বিহীন থাকায় জনসাধারনকে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। সড়কটি এলজিইডির হলেও পৌর সভার মধ্যে পড়ায় কে কাজ করবে এ নিয়েও রয়েছে মতানৈক্য। সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ভারত থেকে দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে আমদানিকৃত হাজার হাজার টন মালামাল এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে শত শত ট্রাক যোগে পাঠানো হচ্ছে। অপরদিকে ভারত থেকে পণ্য নিয়ে আসা ভারতীয় ট্রাক বন্দরে প্রবেশে এ সড়কটি ব্যবহার করে থাকে। এছাড়া বেনাপোল বন্দরের টার্মিনালের অধিকাংশ যানবাহন এই সড়কে চলাচল করছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই সড়কটি নির্মাণ করার পরপরই বিভিন্ন স্থানে পিচ, খোয়া উঠে গেলেও এলজিইডি ও পৌর সভা কর্তৃপক্ষ তা মেরামত করার কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। বর্তমানে সড়কের অধিকাংশ স্থানে পিচ খোয়া উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে সড়কটি মৃত্যুর ফাঁদে পরিনত হয়েছে। এর ফলে প্রতিদিন ট্রাক উল্টে যাচ্ছে সড়কের পাশে। বিকল হয়ে পণ্যবাহী ট্রাক ও বাস পড়ে থাকছে সড়কের ওপরেই। ফলে ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্য গন্তব্যে পৌছাতে দেরি হচ্ছে। আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে যানবাহনের মালিকরা। এ সড়কটি দিয়ে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক এবং আভ্যন্তরিন ভারি যানবাহন চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সেই সাথে এলাকার সাধারন মানুষ চলাচলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় বেহাল দশা সৃস্টি হয়েছে। এ সড়কে এলাকাবাসী পায়ে হেটেও চলাচল করতে পারছে না। প্রতিদিন ৪ থেকে ৫শ’ পণ্যবাহী ট্রাক এই সড়কটি দিয়ে চলাচল করে। এ ছাড়া ছোট আঁচড়া, খড়িডাঙ্গাসহ পুটখালি ও গোগা ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ, স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা এ সড়কে যাতায়াত করে থাকে। কিন্তুু সড়কটি সংস্কারে কোন পদক্ষেপ নেই। এলাকার মানুষের চলাচলে নাজেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ছোট আঁচড়া গ্রামের একটি সাজেদুর রহমান জানান, এটা সড়কতো নয় যেন কাদার ধারা। দেখলে অনেকটা তাই মনে হয়। আমরা পৌরসভার সুবিধা থেকে বঞ্চিত। অনেকের কাছে বলেছি। কোন কাজ হচ্ছে না। আমরা দ্রুত এ সড়কটি সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি। তিনি জানান, প্রতিদিন কাজে যেতে হয় এই সড়ক দিয়ে। রাস্তায় বড় বড় গর্ত হওয়ায় পায়ে হেটেও চলাচল করা যায় না। আবার কোন যানবাহন এ সড়কে যেতে চায় না। বাধ্য হয়ে হেটে কর্মস্থলে যেতে হয়। শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া আসার সময় জামা কাপড় নস্ট হয়ে যায় কাঁদা মাটিতে। ছোট বাচ্চারা পায়ে হেটে স্কুলে যেতে পারে না। এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের শার্শা উপজেলা প্রকৌশলী মো: রশিদুজ্জামান জানান, সড়কটি আমাদের ঠিক আছে। তবে নতুন আইনে পৌর সভার মধ্যে পড়ায় আমরা এখন কাজ করতে পারি না। তারপরও আমাদের এখন কোন ফান্ড নেই। আধলা ইট বা ইটের মাটি দেওয়ারও কোন ব্যবস্থা নেই। জনগণের দুভোর্গের কথা বলা হলে তিনি পৌর সভার সাথে কথা বলে বিষয়টি গুরত্বের সাথে দেখা হবে বলে জানান।