আ: লতিফ মোড়ল, ডুমুরিয়া (খুলনা) : খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার রানাই গ্রামের রাজাকার সহযোগী ও যুদ্ধোপরাধী মামলার আসামী আঃ রাজ্জাক বিশ্বাস তার বয়স তঞ্চকতার মাধ্যমে মামলা হতে রেহাই পাওয়ার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে এলাকার খলিল জোয়ার্দ্দার নামে এক ব্যক্তি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর (প্রশাসন)বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। লিখিগ অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে উপজেলার রানাই গ্রামের মৃত এরশাদ বিশ্বাসের সেঝো ছেলে আব্দুর রাজ্জাক বিশ্বাস ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় একজন সক্রিয় রাজাকার সহযোগী হিসেবে অন্যানদের সাথে এলাকায় খুন,ধর্ষন,লুট তরাজ ও অগ্নিসংযোগের মত মানবতা বিরোধী কাজে লিপ্ত ছিলো। বর্তমান সরকার যুদ্ধোপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করলে খর্নিয়া ইউনিয়নের পাঁচপোতা গ্রামের লিয়াকত আলী গাজী বাদী হয়ে অভিযুক্ত রাজ্জাক বিশ্বাস সহ আরো ৭ জনকে আসামী করে গত ০৫ই জানুয়ারী ২০১৬ চীফ প্রসিকিউটর আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন ট্রাইবনাল,ঢাকা তে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ০২/১৬। দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালত মামলার সকল আসামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেলেও আসামী আ: রাজ্জাকের বিষয় দেখা দিয়েছে বয়সের জঠিলতা। মামলার বাদী তার এজাহারে আঃ রাজ্জাকের বয়স উল্লেখ করেছেন ৬৯ বছর। অথচ রাজ্জাকের দাবী তার বর্তমান বয়স ৫৭ বছর। যুদ্ধোকালিন তার বয়স ছিল ১১ বছর। তিনি তার বয়স প্রমানের স্বপক্ষে ২০০৬ সালে প্রনীত জাতীয় পরিচয় পত্র দেখাচ্ছেন। যাতে তার জন্ম তারিখ দেয়া রয়েছে ২৬/০২/১৯৬০ ইং। অথচ অভিযোগ কারী খলিল জোয়ার্দারের দাবী যুদ্ধোকালীন আঃ রাজ্জাকের বয়স ছিল ২০ বছর।অভিযোগের স্বপক্ষে তিনি ০৫/০৮/১৯৮৩ সালে নির্বাচন কমিশন প্রনীত ভোটার তালিকায় আঃ রাজ্জাকের বয়স ছিলো ৩২ বছর। সে অনুযায়ী তার জন্ম সাল ১৯৫১ এছাড়া তিনি রাজ্জাক বিশ্বাসের অন্য ২ সহোদর ভাইর জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য তুলে ধরে বলেন, রাজ্জাক তার চার ভাইয়ের মধ্যে সেঝো। বড় ভাই আঃ সামাদ বিশ্বাসের জন্ম সাল ১৯৪৯, ছোট ভাই মৃত আবুল কালাম বিশ্বাসের ১৯৯৬ সালের ভোটার তালিকা অনুযায়ী জন্ম সাল ১৯৫৯ ইং।ছোট ভাইয়ের চেয়ে সেঝো ভাইয়ের বয়স কি ভাবে কম হয়? এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় রানাই গ্রামের বাসিন্দা ও খর্নিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খান রহমাত আলী জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আ: রাজ্জাক তালিকাভূক্ত রাজাকার না হলেও তিনি স্থানীয় কায়েকজন কুখ্যাত রাজাকারের অন্যতম সহযোগী হিসাবে লুটতরাজ অগ্নি সংযোগ সহ বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডের অন্যতম হোতা। ওই সময় তার বয়স আনুমানিক ১৫/১৬ বছর ছিলো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন আ’লীগ নেতা জানান রাজ্জাক বিশ্বাস তার সহপাঠি ছিলো। তারা ১৯৬৯ সালে এস এস সি পরীক্ষার ব্যাচ ছিলো। রাজ্জাক বিশ্বাসের অপরাধ কর্মকান্ডের কথা তিনি স্বীকার করেন। গত ১৭/১০/২০১৭ ইং তারিখে খলিল জোয়াদ্দারের দায়েরকৃত অভিযোগটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) সজীব খান ইতোমধ্যে অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।