চট্টগ্রাম ব্যুরো:চট্টগ্রামের পটিয়ায় সেন্ট্রাল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডাক্তার সাইফুল ইসলাম ও ডাক্তার আবু ছালেকের ভুল চিকিৎসার কারণে মো. মনতাছির রহমান হৃদয় (৬) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হৃদয় পটিয়া উপজেলার হাইদগাঁও ইউনিয়নের মো. রফিকের ছেলে। এ ঘটনায় হৃদয়ের মামা মো. খোরশেদ আলম বাদী হয়ে পটিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
হৃদয়ের মা হাছিনা বেগম এ প্রতিবেদককে জানান, গত ২৫ মে পটিয়া সেন্ট্রাল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অপারেশনের জন্য ভর্তি করালে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণে হৃদয়ের মৃত্যু হয়। ডাক্তার মৃত্যুর খবরটি গোপন রেখে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের আইসিউতে ভর্তি করিয়ে ৫ দিন বাঁচিয়ে রাখার নাটক করে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় হৃদয়কে মৃত ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৫ মে দুপুর ১২টার দিকে মো. মনতাছির রহমান হৃদয় লিচু গাছ থেকে পড়ে গেলে হাত ভেঙে যায়। তার মা হাছিনা বেগম দ্রুত তাকে পটিয়া সেন্ট্রাল হসপিটালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা ডাক্তার আবু ছালেক পর্যবেক্ষণ করে ডান হাতে এক্স-রে করার পরামর্শ দেন। তার পরামর্শ মোতাবেক হৃদয়ের ডান হাতে এক্স-রে করানো হয়। উক্ত এক্স-রে রিপোর্ট সেন্টাল হসপিটালের ডাক্তার সাইফুল ইসলামকে দেখালে তিনি হৃদয়ের ডান হাতে অপারেশনের পরামর্শ দেন। এ অপারেশনের জন্য ডাক্তার সাইফুল ইসলাম ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন। হৃদয়ের ডান হাতের ব্যথায় কান্নাকাটির কষ্ট সইতে না পেরে তার মা হাছিনা বেগম দাবিকৃত টাকা অপারেশনের জন্য প্রদান করেন। ওই দিন বিকেল ৪টার দিকে ডা. সাইফুল ইসলাম হৃদয়কে অপারেশন রুমে নিয়ে যান। এ সময় রিদয়ের মা অপারেশন রুমে যেতে চাইলে ডাক্তাররা তাকে যেতে নিষেধ করেন।
ডাক্তার সাইফুল ইসলামের নির্দেশে সহকারী ডাক্তার আবু ছালেক হৃদয়কে অজ্ঞান করার জন্য ইনজেকশন পুশ করলে সাথে সাথে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। প্রায় ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট পর অপারেশন রুম থেকে বের হয়ে ডা. সাইফুল ইসলাম রোগীর অবস্থা গুরুতর বলে তাকে চট্টগ্রাম শহরের আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি করাবেন বলে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি করেন। এরপর থেকে ডাক্তার সাইফুল ইসলাম ও সহকারী ডাক্তার আবু ছালেকের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।
হৃদয়ের মামা মো. রাশেদ জানান, ৬ বছরের শিশুকে ১৬ বছর বয়সী মানুষের ইনজেকশন পুশ করা হয়। ভুল চিকিৎসার কারণে আমার ভাগ্নে হৃদয় মারা গেছে। অপরাধীদের সাথে আপস করার জন্য আমাদের চাপ দেয়া হচ্ছে। আমার ভাগ্নে হৃদয়কে যারা ভুল চিকিৎসা করে মেরে ফেলেছে তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে জানতে ডা. সাইফুল ইসলামকে মুঠোফোনে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে পটিয়া থানার ওসি রেজাউল করিম মজুমদার জানান, আমরা এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।