এম শরীফ আহমেদ, ভোলা থেকেঃ অবশেষে ভোলা- বরিশাল সেতুসহ ১০টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছেন মন্ত্রীসভা। ভোলা বরিশাল সড়কে কালাবদর ও তেঁতুলিয়া নদীর উপর এবং পটুয়াখালী-আমতলী-বরগুনা সড়কে কারখানা নদীর উপর এবং ঢাকা বিভাগের আড়াইহাজার-বাঞ্চারামপুর সড়কে মেঘনা নদীর উপর সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনার লক্ষ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ জন্য ব্যয় হবে ৩৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ভারতের স্টুপ কনসালট্যান্ট প্রাইভেট লিমিটেড ও বাংলাদেশের একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করবে।
বুধবার (১২ জুলাই) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এই প্রকল্পসহ এক হাজার ১০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে এ বৈঠকে কমিটির সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ১১ তলা ভবনের বিদ্যুৎ ও অন্যান্য সেবামূলক কাজের জন্য পাঁচ কোটি ৬২ লাখ ৪৩ হাজার টাকার অতিরিক্ত ব্যয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের আওতায় মূল নদী শাসন কাজ সংলগ্ন উজানে মাওয়া পুরনো ফেরিঘাট থেকে কান্দিপাড়া-যশোলদিয়া বরাবর ১ হাজার ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের নদীতীর রক্ষামূলক কাজ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়নে অতিরিক্ত ২৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’
এছাড়া, বৈঠকে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ‘পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণের মাধ্যমে ১৫ লাখ গ্রাহক সংযোগ’ শীর্ষক প্রকল্পের একটি সাব-প্যাকেজের আওতায় ৫৭ হাজার ৭১০টি এসপিসি পোল ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মেসার্স পাশা পোল লিমিটেড নামের একটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এসব পোল সরবরাহ করবে। এজন্য ব্যয় হবে ৬৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ‘পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণ এবং বিআরইবির সদর দফতরের ভৌত সুবিধাদি উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আরেকটি প্যাকেজে ২৪ হাজার ৭০৮টি এসপিসি পোল ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ জন্য ব্যয় হবে ৪৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।’ তিনি বলেন, ‘সরকারি খাতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ‘বিদ্যুৎ রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন ফান্ড’ এর মাধ্যমে ‘কনভারশন অব সিলেট ১৫০ মেগাওয়াট জিটি টু ২২৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি’ শীর্ষক প্রকল্প টার্নকি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সাংহাই চায়না লিমিটেড। প্রকল্পে ব্যয় হবে ৭৬৩ কোটি ৯০ টাকা।’
এছাড়াও বৈঠকে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানির ‘আনোয়ারা-ফৌজদারহাট ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের ৩০ কিলোমিটার গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দুই প্যাকেজের এই কাজে ব্যয় হবে ৪৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা। একই প্রকল্পের ‘মহেশখালী-আনোয়ারা ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের ৭৯ কিলোমিটার গ্যাস সঞ্চালন সমান্তরাল পাইপলাইন নির্মাণের আরেকটি প্রস্তাবও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক পোসকো দাইউ প্রকল্প দু’টি বাস্তবায়ন করবে।
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ‘পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণ রাজশাহী-রংপুর বিভাগীয় কার্যক্রম-২ (সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সাত হাজার ৬৫০ কিলোমিটার কন্ডাক্টর, এসিএসআর, বেয়ার ক্রয় সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবও অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানান অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান। এ জন্য ব্যয় হবে ৫০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। মেসার্স বিবিএস কেবলস এসব পণ্য সরবরাহ করবে।