কামরুল হোসেন মনি : খুলনা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের খুলনায় মাদক নির্মুলে ‘ক্র্যাশ অপারেশন ’ নামক অভিযানে ৩১ বোতল হুইস্কি, বিদেশী বিয়ার ও সিসা খাওয়ার সরঞ্জামসহ পূর্ব রূপসায় অবস্থিত রিসোর্ট সেন্টারের মালিক কামরুজ্জামান কামরুল ও ম্যানেজার মোঃ বাহার উল্লাহ আটক হওয়ার পর কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন রিসোর্ট সেন্টারটি বন্ধ ঘোষনা দিয়েছেন। কোস্ট গার্ড কর্তৃপক্ষ কাছ থেকে ১০ বছরের জন্য জন্য জায়গা লীজ নিয়ে রিসোর্ট তৈরী কওে কামরুল। এদিকে কামরুল আটক হওয়ার পর থেকে রিসোর্ট সেন্টারের দীর্ঘ ৪ বছর ধরে আইনশৃঙ্খলা বর্হিভূর্ত নানা অপকর্মের বিষয়ে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। রোববার (২৩) সেপ্টেম্বর এ প্রতিবেদক সরেজমিনে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
পশ্চিম জোন কোস্ট গার্ড সূত্রে জানা যায়, লীজে উল্লেখ থাকে আইন শৃঙ্খলা বর্হিভূত কোন কার্য্যকলাপ করতে পারবে না। যদি করে থাকে তাহলে যে কোন মুহুর্তে কোস্ট গার্ড কর্তৃপক্ষ তার লীজ বাতিল করার ক্ষমতা রাখেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) খুলনা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দার একটি টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই রিসোর্ট সেন্টারে অভিযান চালান। অভিযানে রিসোর্ট সেন্টারে ৩১ বোতল হুইস্কি, একটি বিদেশী বিয়ার ও সিসা খাওয়ার সরঞ্জাম উদ্ধারসহ রিসোর্ট সেন্টারের মালিক কামরুজ্জামান কামরুল ও ম্যানেজার মোঃ বাহার উল্লাহকে আটক করেন। এ ঘটনায় উপ-পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বাদী হয়ে দুই জনের বিরুদ্ধে রপসা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৩০। কামরুল আটক হওয়ার পর থেকেই লীজের শর্ত ভঙ্গ করায় পশ্চিম জোন কোস্ট গার্ড কর্তৃপক্ষ তার রিসোর্ট সেন্টার বন্ধ ঘোষনা করে প্লাকার্ড টানিয়ে দেন। যেহেতু কামরুল এখনো জেলহাজতে থাকায় ওখানে একটি ছেলেকে পাহাড়া দেয়ার জন্য অনুমতি দেন। তবে রিসোর্ট সেন্টারটি বর্তমানে কোস্ট গার্ডের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিছেন।
পশ্চিম জোন কোস্ট গার্ড সূত্রটি আরও বলেন, রিসোর্ট সেন্টার পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে। আর লীজ বাতিলের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। যেহেতু লীজকৃত মালিক জেল-হাজত রয়েছে। তবে তাকে আর এই জায়গাতে লীজ দেয়া হবে না তিনি জানান। এ রিসোর্ট সেন্টারের আড়ালে এসব অপকর্ম লিপ্ত থাকায় কোস্ট গার্ড কর্তৃপক্ষ বিস্ময়কর প্রকাশ করেন।
সরেজমিনে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, খুলনার রূপসা উপজেলার নৈহাটী ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের মরহুম আব্দুল ওহাব বুলবুলে বাংলাদেশের পুত্র কামরুজ্জামান ওরফে কামরুল। বতর্মানে কামরুল খুলনার নগরীর ৪৫, বসুপাড়া মেইন রোডে বসাবস করতেন। তার বৈধ লাইসেন্সকৃত অস্ত্রের ঝনঝনানিতে রূপসার সাধারণ মানুষ আতংকিত ছিলো। র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত শোয়েব ও সুমনের চাঁদাবাজি ও নানা ধরণের কর্মকান্ডের যত অর্থ তারা মৃত্যুর পর উক্ত কামরুল হাতিয়ে নিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে জান। রিসোর্স সেন্টারের আড়ালে বিভিন্ন ধরণের মাদক ও অসামাজিক কার্যাকলপা করে আসছিল। এছাড়া তিলক কুদির গাছতলা সংলগ্ন হাইওয়ে রোডের পাশে মৎস্য হ্যাচারির নামে বিভিন্ন প্রকার দেশি ও বিদেশি প্রজাতির পাখি আনা নেওয়া করে থাকেন। কামরুল আটক হওয়ার পর সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এমনকি চায়ের দোকানসহ নানা প্রতিষ্ঠানে সমালোচনা ও আলোচনার ঝড় উঠেছে।