মনিরামপুর প্রতিনিধি : যশোরের মনিরামপুরে শালিকা বিলের সরকারি খাল দখল করে বেড়িবাঁধ নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মোশাররফ হোসেন নামে এক প্রভাবশালী খাল দখলের পর বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে মৎস্যঘের করেছেন। খালের উপর বেড়িবাঁধ নির্মান করায় আশপাশের আবাদি জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। ফলে আবাদ করতে ব্যর্থ হওয়ায় শালিকা বিলপাড়ের কৃষকরা ফুসে উঠেছে। অবিলম্বে বেড়িবাঁধ অপসারনের দাবিতে এলাকাবাসী রোববার দুপুরে বিক্ষোভ প্রদর্শন শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন।
জানাযায়, উপজেলার হরিদাসকাটি ইউনিয়নের বাহাদুরপুর বিল শালিকায় চাষাবাদের জন্য সরকার খাল খনন করে। সেই থেকে ওই বিলে হাজারো কৃষক তাদের জমিতে আবাদ করে আসছে। ইতিমধ্যে বিলের শতাধিক বিঘা জমি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে লিজ নিয়ে খালের পাশে মৎস্যঘের নির্মান করেন নেহালপুর ইউনিয়নের বালিধা গ্রামের হাসমত আলীর ছেলে মোশাররফ হোসেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে মোশাররফ হোসেন খালের ৮৪ শতক খাস জমি দখলের পর বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছেন। ফলে আশপাশের জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়ায় কৃষকদের আবাদ করা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
খালপাড়ের কৃষক দেবাশিষ দত্ত জানান, খালের ওপর বেড়িবাঁধ নির্মাণ করায় আশাপাশের জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। অপর কৃষক রিপন বিশ্বাষ, নিমাই দত্ত, নিলমনি দত্ত, পরিতোষ বিশ্বাষ, সমিরন সরকারসহ অন্যান্যরা জানান, বেড়িবাঁধ নির্মান করায় তাদের জমি থেকে পানি সরতে না পেরে স্থায়ী জলাবদ্ধতার রূপ নিয়েছে। ফলে তারা এবার বোরো আবাদ করতে পারছেননা। আনন্দ বিশ্বাষ, গোপাল বিশ্বাষ জানান, তাদের জমিতে বেধে থাকা (জলাবদ্ধতা) পানি সরাতে বেড়িবাধের মাঝ থেকে কেটে দেওয়ার জন্য ঘের মালিক মোশাররফ হোসেনকে বার-বার অনুরোধ করা হলেও তিনি কর্নপাত করেননি। বরং মোশাররফ হোসেন কৃষকদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছেন। সরকারি খাল দখলের পর বেড়িবাঁধ নির্মাণের অভিযোগের সত্যত্য স্বীকার করে স্থানীয় হরিদাসকাটি ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর কবির লিটন জানান, বেড়িবাঁধ অপসারনের জন্য বলা হলেও মোশাররফ হোসেন কোন পদক্ষেপ নেননি। ফলে আবাদ করতে ব্যর্থ হওয়ায় শালিকা বিলপাড়ের কৃষকরা ফুসে উঠেছে। অবিলম্বে বেড়িবাঁধ অপসারনের দাবিতে এলাকাবাসী রোববার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পরে তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপি প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কবীর হোসেন জানান, দু-একের মধ্যে সরেজমিন গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেলে তাৎক্ষণিকভাবে বেড়িবাঁধ অপসারণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে খালের জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে ঘেরমালিক মোশাররফ হোসেন জানান, তিনি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে ঘের নির্মাণ করেছেন।