মাদক ও দেহ ব্যবসার বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষনা, কেএমপি’রভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনারের

প্রকাশঃ ২০১৯-০৪-০৮ - ১০:৩৫

কামরুল হোসেন মনি : খুলনায় মাদকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা ও অবৈধ মাদকের ব্যবহার রোধ ও আবাসিক হোটেলগুলোতে দেহ ব্যবসা বন্ধে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)’র ভারপ্রাপ্ত কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম যে কতগুলো উদ্যোগ নিয়েছেন তা খুলনাবাসীর কাছে অনুকরণীয় অনুসরণীয় হয়ে থাকবে। যে কোনো অপরাধ দমনে আপোসহীন ছিলেন এই কেএমপি কমিশনার।

৪ এপ্রিল স্বারষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে অ্যান্টি টোরোরিজমের ডিআইজি লুৎফর কবিরকে খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার হিসেবে বদলি করা হয়। এখনও তিনি এই দায়িত্ব গ্রহণ করেননি। যেই পুলিশ কর্মকর্তা আসুক না কেনো কেএমপি’র বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম অপরাধ দমনে যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তা যেনো থমকে না যায় এমনটাই প্রত্যাশা খুলনাবাসীর।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর সরদার রকিবুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি পুলিশ কমিশনারের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই খুলনা মহানগরীকে একটি ক্লিন সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন। কেএমপিতে যোগদানের পর থেকে সরদার রকিবুল ইসলাম খুলনা মহানগরীতে সন্ত্রাস, মাদক নির্মূল, গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদ্ঘাটন ও সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন। যার স্বীকৃতিসরূপ তাকে গত ২৯ জানুয়ারি ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) দেওয়া হয়েছে। গত ৪ মাসে সরদার রকিবুল ইসলাম কেএমপি ভারপ্রাপ্ত কমিশনার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তিনি নগরীর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন ও বিশেষ করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে বিশেষ সফলতা দেখান। যা ইতোমধ্যে খুলনার বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়। মাদকের বিরুদ্ধে তিনি জিহাদ ঘোষণা করেন। শুধু জিহাদ ঘোষণা কেরই ক্ষান্ত হননি, প্রতিদিন নগরীর বিভিন্ন স্থানে তিনি নিজে উপস্থিত থেকে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেন। এক্ষেত্রে তিনি জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় কাউকেই ছাড় দেওয়া হয়নি। এছাড়া কেএমপি’র সকল থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের কোন প্রকার ঘুষ গ্রহণ না করার জন্য সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। প্রতি জুম্মার দিনে তিনি মসজিদে উপস্থিত থেকে মাদক সংক্রান্ত বিষয়ক জনসচেতনতামূলক আলোচনা সভা করেন। যে কোনো অপরাধ দমনে তার এই জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করায় খুলনাবাসী সুফল ভোগ করছেন।

নগরীর গগণবাবু রোড এলাকার বাসিন্দা মোঃ জাকির হোসেন বলেন, খবরে জানতে পারলাম নতুন পুলিশ কমিশনারকে খুলনায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এই পদে যেই আসুক না কেনো বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার হিসেবে যিনি দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি খুলনাকে ক্লিন সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তা প্রশংসিত। তার এই উদ্যোগগুলো যেন থমকে না যায় এমনটি প্রত্যশা তার।

শিউলি বেগম নামে এক গৃহশিক্ষিকা বলেন, বর্তমান কেএমপি ভারপ্রাপ্ত কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই কতগুলো সুস্পষ্ট জনবান্ধব উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। যা দিয়ে জনমনে আশার সঞ্চার করেছে। এই শিক্ষিকা মনে করেন এই পুলিশ কমিশনার অপরাধ দমেন যেসব উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন সেটা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে জনমনে স্বস্তি ও শান্তি ফিরে আসবে।

জানা গেছে, বর্তমানে কেএমপি ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলামের নির্দেশনায় সরকারি হাসপাতাল, পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ অফিসসহ বিভিন্ন সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো দালালমুক্ত রাখতে কেএমপি পুলিশের বিশেষ টিম অভিযান অ্যাবহত রেখেছে। বিভিন্ন আবাসিক হোটেলগুলোতে অনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধে পুলিশের অভিযান জোরদারও করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কেএমপি’র ডিবি পুলিশের একটি টিম গত ২৬ ফেব্রুয়ারি খুলনা সদরের সুন্দরবন আবাসিক হোটেলে অভিযান চালিয়ে অসামাজিক কর্মকা-ের অভিযোগে ৪ জনকে আটক করে। এর আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি খুলনা জেনারেল হাসপাতালে ডিবি পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ৪ দালালকে আটক করে। ১৯ ফেব্রুয়ারি মহানগরের খানজাহান আলী থানা এলাকার বিআরটিএ অফিস থেকে দালাল চক্রের ৯ জন সক্রিয় সদস্যকে আটক করেন। মহানগর ডিবি পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। আটকদের কাছ থেকে বিভিন্ন চিকিৎসক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ৭২টি কার্ড উদ্ধার করা হয়। (কেএমপি) ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলামের নির্দেশে এবং প্রত্যক্ষ তদারকিতে ওই সব অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

এছাড়া কোনো এলাকায় অবৈধ ব্যবসা, অবৈধ ভূমি দখলদার, যে কোনো সেক্টরে চাঁদাবাজ এসবগুলো দমন ও বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর এই ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার।

ভবিষ্যতে এই কর্মবীর অপরাধ দমন ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবেন এই কামনা খুলনাবাসীর। সবর্জনস্বীকৃত সৎ, মেধাবী, দেশপ্রেমী, সাহসী, সদালাপী, চৌকস কেএমপি’র ভারপ্রাপ্ত কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলামের মতো প্রত্যেকেই বিবেক দিয়ে কাজ করলে জাতি সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে বাধ্য।