মাদারীপুরে প্রতারনায় মামলায় ব্যবসায়ীর ৪ বছরের কারাদন্ড

প্রকাশঃ ২০২৪-১০-২৩ - ১৫:০০

মাদারীপুর : মাদারীপুরে প্রতারনায় এক ব্যবসায়ীর ৪ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার দুপুরে জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতের বিচারক অভিজিৎ চৌধুরী এই রায় দেন। দন্ডপ্রাপ্ত সাইফুল ইসলাম ওরফে আকাশ খান (৩২) ডাসার উপজেলার কাজীবাকাই ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক বেপারীর ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সাগর বস্ত্রালয় নামের গার্মেন্টস-এর একটি ব্যবসা পরিচালনার জন্য মাদারীপুর পৌরসভার সরদার কলোনী এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় কর্মকারের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা দেন সাইফুল ইসলাম। যা গত ২০১৬ সালের ২৫ নভেম্বর তিনশো টাকার নন জুডিশিয়াল স্টাম্পে বিষয়টি লিখিত হয়। এক বছর শেষে পুরো দুই লাখ টাকা ফেরত দেয়ার অঙ্গিকার করে স্বাক্ষীদের উপস্থিতিতে সাইফুলের ক্রয়কৃত স্টাম্পে স্বাক্ষর দেন সাইফুল। কিন্তু টাকা নেয়ার পর থেকে বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধ করে অন্যত্র চলে যান তিনি। অনেকবার চেষ্টা করেও কোনকুলকিনারা না পেয়ে ২০২২ সালের ১৭ নভেম্বর আদালতে দ্বারস্ত হন ভুক্তভোগী। পরে সঞ্জয় কর্মকার বাদী হয়ে দন্ডবিধির ৪০৬ ও ৪২০ ধারায় প্রতারণার মামলা করেন। মামলায় একমাত্র আসামী করা হয় অভিযুক্ত সাইফুল ইসলামকে। এরপর সমন ও পরে ওয়ারেন্ট হয় আসামীর বিরুদ্ধে। দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়া, যুক্তিতর্ক ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামী সাইফুলকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক অভিজিৎ চৌধুরী ৪০৬ ধারায় দুই বছর ও ৪২০ ধারায় আরো দুই বছর কারাদন্ড দেন। মামলা দায়েরের পর আসামী সাইফুল ইসলাম পলাতক রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বাদীর নিকট থেকে দুই লাখ টাকা নিয়ে সৌদিআরব পাড়ি জমিয়েছেন সাইফুল ইসলাম। সম্প্রতি তার স্ত্রীকেও তিনি সৌদিআরব নিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে। মামলা দায়েরের পর সাইফুলের শ^শুরবাড়ি বরগুনা জেলাতে কয়েকবার বেড়াতে আসেন। পরে বেড়ানো শেষে আবার সৌদিআবর চলেও যান সাইফুল। কিন্তু অদৃশ্য কারনেই ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে ওয়ারেন্টভুক্ত এই আসামী। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, একইভাবে অনেকের সাথে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা এই ব্যবসায়ী।
মামলার বাদী সঞ্জয় কর্মকার বলেন, সরল বিশ^াসে আমি সাইফুলকে দুই লাখ টাকা দেই। কিন্তু সে বিশ^াস ভঙ্গ করেছে, আমার সাথে প্রতারনাও করেছে। তাই আদালতে মামলা দায়ের করি। আদালতের বিচারক মামলায় যে রায় দিয়েছে তাকে আমি সন্তুষ্ট।
বাদীর আইনজীবি অ্যাডভোকেট যতিন সরকার বলেন, আমার মক্কেলের সাথে প্রতারনা ও বিশ^াস ভঙ্গ করেছে তার উপযুক্ত প্রমান আদালতে দাখিল করা হয়েছে। ৪ জনের সাক্ষ্য দেয়া হয়, লিখিত কাগজপত্রও সংযুক্ত করা হয়েছে। সবকিছু বিবেচনা করে আদালত যে রায় দিয়েছে তাতে বাদী ন্যায় বিচার পেয়েছে। শিগগিরই সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে ধরে দন্ড কার্যকর করার দাবী জানাচ্ছি।
সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতের পেশকার বেল্লাল হোসেন জানান, সাইফুল ইসলাম নামে এক আসামীর সাজা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ রায় লিপিবদ্ধ শেষে থানায় পাঠানো হবে। এরপর পুলিশ আসামী ধরার ব্যাপারে আইনীপ্রক্রিয়া গ্রহণ করবেন।
মাদারীপুরের ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহামুদ উল হাসান বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী সাইফুল ইসলামকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শুনেছি প্রতারণা মামলায় তার সাজাও হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।