মোদিকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হচ্ছে ঠাকুরবাড়ি

প্রকাশঃ ২০২১-০৩-১২ - ১৭:১৭

গোপালগঞ্জ : আগামী ২৭ মার্চ গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান ঠাকুরবাড়িতে যাবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি ঠাকুরবাড়ির সদস্য ও মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। নরেন্দ্র মোদি আসবেন, এ খবরে খুশি ঠাকুরবাড়ির সদস্যরা ও এলাকাবাসী। ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হচ্ছে ঠাকুরগাড়ি। চলছে উন্নয়নকাজ। ভরতীয় হাইকমিশনের প্রতিনিধিদল ঠাকুরবাড়ি পরিদর্শন করেছে। সেখানে বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে গোপালগঞ্জে প্রস্তুতি সভা করেছে জেলা প্রশাসন। জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশে আসবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর তিনি ওড়াকান্দির ঠাকুরবাড়ি পরিদর্শন করবেন। সেখানে তিনি শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ও গুরচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে পূজা-অর্চনা করে আশীর্বাদ নেবেন। মোদির সফরকে কেন্দ্র করে ঠাকুরবাড়িতে চলছে উন্নয়নকাজ। বিভিন্ন মন্দির সংস্কার করা হচ্ছে। ঠাকুরবাড়ির পাশের মাঠে তৈরি করা হচ্ছে হেলিপ্যাড। এদিকে, নরেন্দ্র মোদির ঠাকুরবাড়ি পরিবদর্শন নিয়ে হচ্ছে নানা আলোচনা। অনেকে মনে করছেন, তার এ সফর রাজনৈতিক। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোট টানতে তিনি ওড়াকান্দির ঠাকুরবাড়ি পরিদর্শনে আসছেন। স্থানীয় বাসিন্দা গোবিন্দ কীর্ত্তনিয়া ও ছবি রানী বিশ্বাস বলেন, ‘ঠাকুরবাড়ি মতুয়াদের তীর্থভূমি। প্রতি বছর মতুয়া ভক্তরা পূণ্য লাভের আশায় এ তীর্থভূমিতে আসেন। এখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী আসবেন, এতে আমরা আনন্দিত। এ সফরের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আরো ভালো হবে।’ ঠাকুরবাড়ির সদস্য অমিতাভ ঠাকুর বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী আমাদের বাড়িতে আসছেন, এটি আমাদের জন্য খুশির এবং গর্বের বিষয়। তাকে স্বাগত জানাতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ বাংলাদেশ মতুয়া মহাসংঘের সভাপতি সীমা দেবী ঠাকুর বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী আমাদের ঠাকুরবাড়িতে আসছেন, এটা মতুয়াদের কাছে গর্বের বিষয়। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও উলু ও শঙ্খধ্বনি মাধ্যমে বরণ করে নেবেন তাকে।’ কাশিয়ানী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ঠাকুরবাড়ির সদস্য সুব্রত ঠাকুর জানান, নরেন্দ্র মোদির ঠাকুরবাড়িতে আগমন উপলক্ষে ভারতীয় হাইকমিশনের নয় সদস্েযর প্রতিনিধিদল ঠাকুরবাড়ি পরিদর্শন করেছেন। এর পর থেকে পুরো ঠাকুরবাড়ি গোয়েন্দা নজরদারিতে আছে। গোপালগঞ্জ জেলা শহর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত ওড়াকান্দির ঠাকুরবাড়ি। ১২১৮ বঙ্গাব্দের ফাল্গুন মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে (১৮১১ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই মার্চ) ব্রহ্মমুহূর্তে মহাবারুণীর দিনে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার সাফলীডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন পূর্ণব্রহ্মা হরিচাঁদ ঠাকুর। যশোবন্ত ঠাকুরের পাঁচ ছেলের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। বাল্যনাম হরি হলেও ভক্তরা হরিচাঁদ নামেই তাকে ডাকতেন। ছোটবেলা থেকেই তার অলৌকিকত্ব ও লীলার জন্য বিখ্যাত হয়ে ওঠে ওড়াকান্দি। ক্রমেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ওড়াকান্দির নাম। সারা দেশের হিন্দুদের কাছে এটি পরিণত হয় তীর্থস্থানে। ৬৬ বছর বয়সে ১২৮৪ বঙ্গাব্দে মারা যান হরিচাঁদ।