যশোর অফিস : যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটিতে হাত বাড়ালেই মিলছে বিভিন্ন মাদক দ্রব্য। ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামেই মাদকের বেচাকেনা বৃদ্ধি পেলেও স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশ রয়েছে নিরব। এ নিরবতার সুযোগে মাদক কারবারিরা দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। হাতের নাগালের ফাঁড়ি পুলিশ এদের রুখতে না পারায় এলাকাবাসীর মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রয়া। এখানকার মাদক ব্যবসার পিছনে রয়েছে স্থানীয় শক্তিশালী একটি মাদক সিন্ডিকেটের কিছু প্রভাবশালী সদস্যরা। মূলত: তারাই এই মাদকের কারবার পরিচালনা করে বলে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে সাজিয়ালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বক্তব্য দিতে রাজি হননি। যশোর শহর থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার উত্তরে-পশ্চিমে চুড়ামনকাটি ইউনিয়নটি অবস্থিত। যশোর শহরতলীতে চুড়ামনকাটি বাজারটি অবস্থিত হওয়াই এখানে সর্বদাই মানুষের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মত। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্থানীয় কিছু মাদক কারবারিরা এখানে প্রকাশ্যে বিভিন্ন মাদক দ্রব্য বিক্রি শুরু করে। কিছুদিন এখানে মাদক ব্যবসা কম থাকলেও বর্তমানে মাদকের কেনাবেচা এতোটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যা নিয়ে এলাকাবাসী শংকিত। মূলত: শক্তিশালী মাদক সিন্ডিকেটের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কারণেই এখানে মাদক দ্রব্য বিক্রি এতোটা বৃদ্ধি পেয়েছে। সীমান্তবর্তী উপজেলা চৌগাছার সাথে এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল বলে মাদক কারবারিরা নিরাপদ ঘাঁটি হিসাবে বেছে নিয়েছে চুড়ামনকাটি ইউনিয়নকে।
সরেজমিন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে গিয়ে দেখা গেছে, ইয়াবা, মদ, তাড়ি, ফেন্সিডিল, গাঁজাসহ বিভিন্ন প্রকারের মাদক দ্রব্য বিক্রি হচ্ছে। ইউনিয়নের বাগডাঙ্গা গ্রামে সবচেয়ে বেশি মাদক কেনাবেচা হয়ে থাকে। বাগডাঙ্গা গ্রামসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক পয়েন্টে বিক্রি হয়ে থাকে এই মরণ নেশা মাদক দ্রব্য। স্থানীয় সাজিয়ালী ফাঁড়ি পুলিশের নাকের ডগায় এ সমস্ত মাদক দ্রব্য বিক্রি হলেও তারা থাকেন নিরবে।
ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে পোলতাডাঙ্গা গ্রামের নেশার বড়ি বিক্রি করছে মঈনুল, বাগডাঙ্গা গ্রামের গড়ে সিরাজ, গজো মশিয়ার, নিজাম, বিল্লাল, সবুজ, আরিফ, আলামিন, আশিক, মুরাদ, ছাতিয়ানতলা গ্রামের সরো, মতিচুর, চুড়ামনকাটি গ্রামের আবুল হাসানসহ একাধিক ব্যক্তি এই মাদকের ব্যবসা করছে। যারা গোটা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে এই ব্যবসা লোক দিয়ে পরিচালনা করে থাকে বলে জানা গেছে।
চুড়ামনকাটি ইউপি চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন জানান, তার ইউনিয়নে বর্তমানে মাদক ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশের নিরবতার কারণেই মাদক কারবারিরা এতোটা বেপরোয়া। তিনি চুড়ামনকাটি ইউনিয়নকে মাদক মুক্ত করতে জেলা পুলিশ সুপারের সু-দৃষ্টি কামনা করছেন।
সাজিয়ালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই সেলিম হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকেদের নিকট কোন বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।