সুুব্র ঢালী, রামপাল (বাগেরহাট) প্রতিনিধিঃ বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার পেড়িখালী গ্রামে নিজের পুত্র সন্তানের সাথে দেখা করতে গিয়ে সাবেক স্বামীর ছুরিকাঘাতে মোঃ জাবির হোসাইন (৮) এর মা খাদিজা বেগম (২৬) নিহত । পেড়িখালী -মোংলা মেইন সড়কের পেড়িখালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন দাউদ হোসেনের বাড়ির সামনে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় স্থাণীয়রা ওই যুবতীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। খবর পেয়ে রামপাল থানা পুলিশ তাৎক্ষনিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে ঘাতক সাবেক স্বামী জাকিরকে ধরতে অভিযান শুরু করে। নিহতের স্বজন, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পেড়িখালী গ্রামের আঃ হানিফের পুত্র জাকির শেখ (৩৫) এগারো বছর পূর্বে উপজেলার ভাগা গ্রামের গোলাম শেখের কন্যাকে বিয়ে করে। বিয়ের পরপরই যৌতুকলোভী স্বামী জাকির, শ্বাশুরী তাছলিমা বেগম ও দেবর বোরহান শেখ যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করে আসছিল। খাদিজা নির্যাতন সহ্য করে একমাত্র পুত্র সন্তান মোঃ জাবির হোসাইন (৮) কে অবলম্বন করে সংসার করে আসছিল। খাদিজার পিতা গোলাম আলী মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে অনেক টাকা জামাই জাকিরকে দেন। বারবার যৌতুকের খাই মেটাতে তার মেয়েকে নির্যাতন করার ঘটনায় ইতিমধ্যে পাঁচবার শালিস বৈঠক করেন। সর্বশেষ দুই বছর পূর্বে গোলাম আলী তার মেয়েকে ডিভোর্স করিয়ে বাড়িতে বাড়িতে নিয়ে যান। মাঝে মাঝে সাবেক স্বামীর কাছে থাকা পুত্র জাবিরকে পেড়িখালী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখতে যেতেন তার কন্যা। বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় খাদিজা পুত্র জাবিরের জন্য একটি ছাতা, ২ কেজি পেয়ারা, ২ প্যাকেট চিপস্ ও ১০ টি টাকা দিয়ে ফেরার পথে দেখা হয় ঘাতক জাকিরের সাথে। জাকির তার সাবেক স্ত্রীকে গালিগালাজ করে বলে, বলেছিনা আমার ছেলেকে তুই দেখতে আসবি না। কথা কাঁটাকাঁটির এক পর্যায়ে জাকিরের কাছে থাকা ছুরি দিয়ে গলার বাম পাশেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। এতে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হলে খাদিজাকে লাথি মেরে সড়কের পাশে থাকা পুকুরে ফেলে দেয়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ লাশের সুরতহাল তৈরী করে বাগেরহাট মর্গে প্রেরণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল এবং রামপাল থানায় কোন মামলা দায়ের হয়নি। রামপাল থানার ওসি মোঃ বেলায়েত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ঘাতক জাকিরকে ধরার জোর চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। ঘাতক জাকিরসহ এ ঘটনার সাথে অন্য কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।