লবণাক্ততা ব্যবস্থাপনা ও গবেষণা কেন্দ্রে বেগুন উৎপাদনে সফলতা

প্রকাশঃ ২০২৩-০২-০১ - ১৩:৩৭

ইউনিক ডেস্ক : দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার জমির বড় একটা অংশ লবণাক্ত কবলিত। আমন ধান কাটার পর মাটি শুকাতে থাকে। ফলে লবনাক্ততা বৃদ্ধি পায়। উজান থেকে নেমে আসা মিষ্টি পানির প্রবাহের সাথে এসব এলাকার মাটির লবনাক্ততার পরিমান বহুলাংশে নির্ভর করে। এই কেন্দ্র গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে চাষ করলে লবণাক্ত পরিবেশে সন্তোষজনক ফলন পাওয়া যায়। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে সারা বছর লবণাক্ত এলাকায় সবজি চাষ করা যায়। এই পদ্ধতিতে ফ্লাইং বেডে লবণাক্ততার কোন প্রভাব পড়ে না।

বটিয়াঘাটায় অবস্থিত লবণাক্ততা ব্যবস্থাপনা ও গবেষণা কেন্দ্রে চাষ করা হয়েছে ঝুলান্ত কৃষি (ফ্লাইং বেড)বারি ১২ জাতের হাইব্রিড বেগুন। প্রতিটি বেগুনের ওজন ৮০০ গ্রাম থেকে ১কেজি পর্যন্ত। যা চাষ করে ফসলতা পেয়েছে। বিভিন্ন মিশ্রণ মাটি ও সার ব্যবহার করে ফসল ফলানো হচ্ছে। যে কোন মিশ্রণের মাটি ও সার ব্যবহার করলে ফলন বেশী পাওয়া যায়।

দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের লবাণাক্তা এলাকা হতে পারে সম্ভাবনাময় একটি কৃষি ভান্ডার। কারণ বর্ষা কালে যখন সবজি চাষের জায়গা থাকেনা। তখন এই পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষকরা সারা বছর সবজি উৎপাদন করতে পারবেন। এই পদ্ধতি চাষ করলে সুকনো মৌসুমে লবণাক্ততার কোন প্রভাব না থাকায় সবজি উৎপাদন করা সম্ভাব হবে।  লবাণাক্ততা ব্যবস্থাপনা ও গবেষণা কেন্দ্র এই প্রযুক্তি নিয়ে কয়েক বছর গবেষণার পর সাফল্য লাভ করেছেন বিজ্ঞানীরা। ফ্লাইং বেডে ব্যবহৃত উপাদান হচ্ছে প্লাস্টিকের ড্রাম, বাঁশ, কনক্রিটের খুটি। এই পদ্ধতিতে লাণাক্ততার কোন প্রভাব দেখা যায় না। এক বার বেড তৈরী করতে পারলে বেশ কয়েক বছর ফসল উৎপাদনে ব্যবহার করা যায়।

বর্তমানে ঝুলন্ত বেডে বেগুন, টমেটো মরিচ ও শিমসহ বেশ কয়েক প্রকার সবজির চাষ করা হয়েছে। যার বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রথম বারের মতো বারি ১২জাতের বেগুন চাষ করা হয়েছে। অক্টোবর মাসে বেগুন চারা রোপণ করা হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিটি বেডে ২টি করে বেগুন গাছ থেকে এক মৌসুমে ১৫-২০কেজি বেগুন সংগ্রহ করা যায়। প্রতিটির ওজন ৮০০গ্রাম থেকে ১কেজি। টমেটো গাছ থেকে ৮ থেকে ১০কেজি সংগ্রহ করা সম্ভাব। এই পদ্ধতি প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া হবে।

গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানীক কর্মকর্তা আমরেন্দ্র নাথ বিশ^াস বলেন, ফ্লাইং বেড এই অঞ্চলে সম্প্রসারিত হলে শষ্যের নিবিড়তা বাড়বে। পাশাপাশি কৃষক সারা বছর পারিবারিক চাহিদা মিটানোর জন্য সবজি উৎপাদন করতে সক্ষম হবেন।