রাজীব চৌধুরী , কেশবপুরঃ যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের উপ-নির্বাচনে সংসদ সদস্য হওয়ার পর মাত্র তিন বছরে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের।আরও বেড়েছে স্বর্ণালংকারের পরিমানও। এছাড়া ঋণ শোধ করেছেন ৪ কোটি টাকার অধিক।এ তথ্য উঠে এসেছে নির্বাচন কমিশনে শাহীন চাকলাদারের দাখিলকৃত একাদশ জাতীয় সংসদ উপনির্বাচন ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা পর্যালোচনায়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৬( কেশবপুর) আসনে নির্বাচিত হন সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক। তার মৃত্যুর কারণে আসনটি শূন্য হলে ২০২০ সালের ১৪ জুলাই উপ-নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার।উপনির্বাচনের সময় শাহীন চাকলাদার যে হলফনামা দাখিল করেন তাতে তার বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছিল ২ কোটি ৩০ লাখ ৫১ হাজার ৯৯০ টাকা। অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে কোন তথ্য দেয়া হয়নি। আর স্থাবর সম্পত্তি ছিলো ৯৩৮.৩৫ শতক জমি, যার মূল্য ২ কোটি ৯৪ লাখ ৫ হাজার ৬০০ টাকা। এছাড়া জাবির ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের মালিকানার শেয়ার ১৫ লাখ টাকা, ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের ১৮.৩৫ শতক জমির উপর দুটি বাড়ি, ঢাকার মহাখালী ও কলাবাগান এলাকায় মোট ১৯ বর্গফুটের দুটি ফ্লাট, যার মূল্য ২ কোটি ৭০ লাখ ৬৯ হাজার ৯৮৫ টাকা। এছাড়া তিনি ব্যাংকে ১৪ কোটি ৫২ লাখ ৫৪ হাজার ৭৯৫ টাকার ঋণ ছিলেন। আসন্ন দ্বাদশ জাাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় তার বার্ষিক আয় কমে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ২৮ লাখ ৫১ হাজার ৮৭৮ টাকা।কিন্তু বেড়েছে তার অস্থাবর সম্পত্তি। বিগত তিন বছরে শাহীন চাকলাদার বন্ড, বাস-ট্রাক, ইলেক্ট্রনিক মালামাল, আসবাব, নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার অর্জনের মধ্য দিয়ে ৪ কোটি ৬ লাখ ১১ হাজার ৫২২ টাকার মালিক হয়েছেন। এরইসাথে তার স্ত্রী একইভাবে ১ কোটি ১৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকার মালিক বনে গেছেন। হিসেবে দেখানো হয়েছে বিগত তিন বছরে শাহীন চাকলাদার ও তার স্ত্রী ৭৫ ভরি (২০+৫৫) স্বর্ণালংকারের মালিক হয়েছেন। যার বাজার মূল্য দেখানো হয়েছে ৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।
এছাড়া স্থাবর সম্পত্তিও বেড়েছে তার। ২০২০ সালে সংসদ সদস্য হওয়ার আগে তার জমির পরিমাণ ছিল ৯৩৮ দশমিক ৩৫ শতক। সেই জমির পরিমাণ বর্তমানে ৩৩১ শতক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৬৯ শতকে। যার মূল্য দেখানো হয়েছে ৪ কোটি ৪০ লাখ ৮৩ হাজার ৬শ’ টাকা। পাশাপাশি বাড়ির জমির পরিমাণ ১৮.৩৫ শতক থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮.৬১ শতকে। জমির দাম ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ৪৮ লাখ ১৫ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে।তাছাড়া ১০ শতক জমি ক্রয় করতে ৪০ লাখ টাকা বায়না দিয়েছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।এদিকে তার হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা যায় তিন বছর আগে তিনি ঋণ ছিলেন ১৪ কোটি ৫২ লাখ ৫৪ হাজার ৭৯৫ টাকা। সংসদ সদস্য হওয়ার পর সেই ঋণ পরিশোধিত হয়ে দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৬৩ লাখ ২৯ হাজার ৯৬১ টাকা।