শিক্ষা ব্যবস্থায় কোন ধরনের বৈষম্য থাকতে পারে না-ইকবাল সোবহান চৌধুরী

প্রকাশঃ ২০১৭-১০-২০ - ১০:৪৪

তাপস  বিশ্বাস : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা জনাব ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেছেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুব রহমান দেশ স্বাধীন করেছেন। তারই সুযোগ্য কন্যা বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সমাধান, শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন, প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণসহ বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত করেছেন। দেশে কোন শিক্ষা ব্যবস্থায় কোন ধরনের বৈষম্য থাকতে পারে না। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে উচ্চতর শিক্ষাব্যবস্থায় একইনীতি থাকতে হবে।

বৃহস্পতিবার দুপরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারি ফোরাম আয়োজিত শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের একদফা দাবি মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষাব্যবস্থাকে শুধু জাতীয়করণ নয়, আগামী প্রজম্মকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। বেসরকারি শিক্ষকদের মর্যাদা রক্ষায় বৈষম্যমূলক শিক্ষাব্যবস্থা দূরকরতে প্রধানমন্ত্রী কাজ করেছেন। শেখ হাসিনা সরকার শিক্ষাব্যবস্থায় অগ্রাধিকার দিয়েছেন। শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ এখন সময়ের দাবি। শিক্ষকদের যে কোন আন্দোলনের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকা প্রয়োজন । আপনারা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। আপনাদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা আছে। তাই আপনাদের এই দাবি বাস্তবায়ন হবেই। আপনাদের নিয়েই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করবেন।

বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারন সম্পাদক শিরিন আক্তার এমপি শিক্ষাব্যবস্থাকে জাতীয়করণের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেলেও মুক্তির স্বাধীনতা পায়নি। শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য রাখলে এই দেশের জনগন কখনও মুক্তি পাবে না । আমাদের শিক্ষকদের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি করে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন সম্ভব হবে না। প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করেছেন। আর বেসরকারি শিক্ষকদের জাতীয়করণ করে তাদেরকে পরিপূর্ মর্যাদা দিতে হবে। জাতির পিতার সুজলা সুফলা সোনার বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের কোন বিকল্প নেই।

বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ দেলোয়ার হোসেন মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাসদের নেত্রী ও ফেনি-১ আসনের সংসদ সদস্য শিরিন আক্তার , এ্যাড, ফজিলাতুনেচ্ছা পাপড়ি, অধ্যাপক ড. আবজাল হোসেন, জেলা প্রশাসক নুরুল আলম সেলিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দ ফজলুর রহমান, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক গোলাম সরোয়ার কবির, মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদিকা সোহেলী পারভীন ছবি ও কবি ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাহীন রেজা, সদ্যগঠিত ফেসবুক ভিত্তিক সংগঠন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী ফোরাম আয়োজিত সমাবেশে ফোরামের মহাসচিব আব্দুল খালেক, অতিরিক্তি মহাসচিব মো. হারুনুর রশিদ হাওলাদার, সংগঠনের যুগ্ম- মহাসচিব অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল ইসলাম মাসুদ, সহ-সভাপতি সাইদুল হাসান, সিনিয়র সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম, প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পার হলেও বাংলাদেশের বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারিবৃন্দ আজো স্বাধীনতার সুখ থেকে বঞ্চিত। দুঃখ- দুর্দশা, সীমাহীন বৈষম্য প্রতিনিয়ত আমাদেরকে ক্ষত-বিক্ষত করে তুলছে। অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা ও বাসস্থানের মত শিক্ষাও একটি মৌলিক অধিকার। কিন্তু শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের মূল কারিগর শিক্ষক-কর্মচারিগনকে সুবিধা বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে।

শিক্ষক নেতারা সমাবেশে বলেন, একই সিলেবাসে একই শিক্ষা অধিদপ্তরের আওয়াতাধীন হয়েও সরকারি শিক্ষকগনের তুলনায় বেসরকারি শিক্ষকগনের প্রাপ্তি অতি নগন্য। অথচ বেসরকারি শিক্ষকগনই অধিকাংশ শিক্ষাথীদের পাঠদান করে থাকেন। আমরা আর কতকাল এই বৈষম্যের যাতাকলে পৃষ্ট হবো? সাড়ে ৫ লক্ষ শিক্ষক আমার পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক কষ্টে জীবন যাপন করছি। এখন আমাদের একটাই দাবি শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ চাই।

যুগ্ম মহাসচিব জিএম শাওনের পরিচালনায় অন্যান্যের উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ প্রফুল্ল কুমার চক্রবর্তী, প্রধান শিক্ষক মনিরা পারভীণ, বিজয় কৃষ্ণ হালদার, শেখ মাহমুদুল হক, টুকুরুল ইসলাম, বিপ্লব কান্তি দাস, আমিনুল ইসলাম, আব্দুল জব্বার, সিজিএম আনিসুজ্জামান, মতিউর রহমান দুলাল প্রমুখ।