অভিযোগ তদন্তে এএসপি হেড কোয়ার্টার
কে এইচ মনি, খুলনা : ‘খুলনা জেলা সদর কোর্টের পুলিশ ইন্সপেক্টর এর মুন্সী প্রভাষের বিরুদ্ধে উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ’ শীর্ষক শিরোনামে গত ৭ জানুয়ারি বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত প্রভাষ চন্দ্র মল্লিক বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মহলে তদবির শুরু করেছেন।
তদন্তকারী পুলিশের হেডকোয়ার্টার সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এএসপি) ওয়াসিম ফিরোজ সোমবার সন্ধ্যায় বলেন, প্রভাষের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের ও সাসপেন্ড করা হতে পারে। ৭ জানুয়ারি কোর্টে গিয়ে এ বিষয়ে কয়েকজনের সাথে কথা হয়েছে। এখনো তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এসপি ছুটিতে রয়েছেন। তিনি আসলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রভাষ চন্দ্র মল্লিক মুন্সী পদে বহাল থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান থাকায় বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যার কারণে প্রভাষ বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
খুলনা জেলা সদরের কোর্ট পরিদর্শক মোঃ মেজবাহ উদ্দিন সোমবার বলেন, প্রভাষের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে এএসপি পদমর্যাদার অফিসার তদন্ত শুরু করেছেন। ওই তদন্তকারী কর্মকর্তা আমার কাছে এ বিষয়ে এখনো কোন জিজ্ঞাসাবাদ করেননি।
এদিকে গত ডিসেম্বরের শেষের (বৃহস্পতিবার) দিকে খুলনা জেলা সদর কোর্টের পুলিশ ইন্সপেক্টর এর মুন্সী প্রভাষ চন্দ্র মল্লিক জিআরও শাখায় উৎকোচ নেওয়ার সময় একটি ভিডিও চিত্র এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে। তাতে দেখা গেছে, তিনি চুক্তি অনুযায়ী উৎকোচের টাকা কালেকশন করছেন। মুন্সী প্রভাষ চন্দ্র মল্লিকের বিরুদ্ধে উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মহলে তদবির অব্যাহত রয়েছে প্রভাষের। যে সব উপজেলা থানার জিআরও’র কাছ থেকে প্রভাষ উৎকোচ আদায় করতেন এ বিষয়ে মুখ না খোলার জন্য চাপ দিচ্ছেন। এছাড়া যারা উৎকোচ দিতেন তারাও আতঙ্কে রয়েছে। প্রভাষের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ ইতোমধ্যেই একটি গোয়েন্দা সংস্থার কাছে রয়েছে। বিষয়টি তারা ঊর্ধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন।
উল্লেখ্য, খুলনা জেলা সদর কোর্টের পুলিশ ইন্সপেক্টর এর মুন্সী প্রভাষ চন্দ্র মল্লিক (কং নং-১০৫১) এর বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজের অজুহাত দেখিয়ে জেলা, থানার জিআরও’র কাছ থেকে উৎকোচ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই স্থানে ৮-৯ বছর থাকার সুবাদে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করাসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছেন। কিন্তু সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর একই স্থানে বেশিদিন চাকরি করার সুযোগ নেই। প্রভাষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলার জিআরও এর কাছ থেকে উৎকোচ নেওয়ার বিষয়ে তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে। গত ৭ জানুয়ারি এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়।