খুলনা : মঙ্গলবার বেলা ১১টায় খুলনা প্রেসকাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উদ্যোগে ‘নারীর জয় সবার জয়’ ক্যাম্পেইনের খুলনা সদস্যদের উদ্যোগে ‘রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি’ শীর্ষক একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে খুলনার দুই প্রধান রাজনৈতিকদলের শীর্ষ নেত্রীরা অংশ নেন। দুই পর্বে সংবাদ সম্মেলনে ব্কতব্য উপাস্থাপন করেন মহানগর আওয়ামীলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট অলোকা নন্দা ও জেলা বিএনপি’ সহ-সভাপতি এডভোকেট তসলিমা খাতুন ছন্দা।
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় রাজনৈতিক নারী নেতৃবৃন্দ আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল এবং সরকারের কাছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশমালা তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, ইতোমধ্যে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল ‘নারীর জয়ে সবার জয়’ ক্যাম্পেইনের আওতায় এডভোকেসি, প্রশিক্ষণ ও নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমে সারাদেশে ৪৩০টি জাতীয় এবং তৃণমূল কমিটিতে প্রায় ৫৪৪৯ জন নারীকে অন্তর্ভুক্ত হতে সহায়তা করেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীদের রাজনৈতিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নারী নেতাদের সাধারণ আসনে মনোনয়ন বৃদ্ধিতে কাজ করছে। ‘নারীর জয় সবার জয় ক্যাম্পেইন’ সারাদেশে নারীদের রাজনৈতিক ক্ষেেেত্র বাধা এবং বাধাসমূহ উত্তরণের জন্যে সুপারিশমালা তৈরিতে সহায়তা করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে নারী নেতারা রাজনীতির মাঠে এখনো যে সব বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন তা তুলে ধরেন। যেমন: সহকর্মীদের পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতা, দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে নারীদের সীমিত অংশগ্রহণ, বৈষম্যমূলক নীতি এবং আইন, দলের অভ্যন্তরে এবং নির্বাচন কমিশন কতৃক আরপিও ৯০এর বি ধারা বাস্তবায়নে যথাযথ তদারকির অভাব, নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নে দুর্নীতি, কালো টাকার দৌরাত্ম্য, পেশী শক্তির ব্যবহার, নারীর অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল অবস্থান, দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে না থাকা, নেতৃত্বের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সমান সুযোগের অভাব অন্যতম। এসব বাধা দূরীকরণে কতিপয় সুপারিশমালাসমূহ পেশ করেন।
সেগুলো হলো গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ২০০৯ (সংশোধিত) ধারা ৯০বি বাস্তবায়নে নির্বাচন কমিশন এবং রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনিটরিং সেল গঠন করা। রাজনৈতিক দলের মূলধারার কমিটিতে নারীর অংশগ্রহণ প্রত্যাশিত হারে বাড়ছে কি না তা নিয়মিতভাবে তদারক করা।
তৃণমূল পর্যায়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ২০০৯ ধারা ৯০বি বাস্তবায়নের অগ্রগতির উপর রাজনৈতিক দলগুলো থেকে নির্বাচন কমিশনে বাৎসরিক প্রতিবেদন পেশ করার বাধ্যবাধকতা থাকা।
নির্বাচনে সন্ত্রাস, কালো টাকা এবং পেশীশক্তির অপব্যবহার রোধ করতে নির্বাচন কমিশন কতৃক তদারকির ব্যবস্থা করা। প্রয়োজনে এলাকাভিত্তিক পর্যবেক্ষণ ক্যাম্প স্থাপন করে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
নির্বাচনী বাজেট এর বাইরে কোনও প্রার্থী অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করছে কিনা তা নির্বাচন কমিশন কতৃক মনিটর করা। আইনভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ;
নারী প্রার্থীদের জন্যে নির্বাচনে জামানতের টাকার পরিমাণ কমাতে হবে এবং নির্বাচনী ব্যয়ের সীমা কমাতে হবে।
রাজনৈতিক দলের সকল স্তরে প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ও সমন্বিত ব্যবস্থা পদ্ধতি নিশ্চিত করা এবং সাধারণ আসনে নারীদের নির্বাচনের জন্য বিশেষ পদ্ধতির ব্যবস্থা করা।
রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচন সংক্রান্ত মনোনয়ন কমিটিতে ৩৩% নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনে সাধারণ আসনে ৩৩% নারী মনোনয়ন প্রদান করা।
রাজনৈতিক দলগুলোতে নারী রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে উদ্বুদ্ধ করতে সরকার বিভিন্ন প্রণোদনার ব্যবস্থা করতে পারে যেমন অর্থ অথবা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারে। আবার আইনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলসমূহকে উদ্বুদ্ধ করতে যে দল নির্বাচনে নির্দ্দিষ্ট সংখ্যক নারী প্রার্থী মনোনয়ন দিবে তাদেরকে নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ প্রণোদনা হিসেবে প্রদান করা হবে।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন,খুলনা জেলা পরিষদেও সদস্য শোভা রানী হালদার, কেসিসি’র সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর রাবেয়া পাহিদ হাসনা হেনা,মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী অধক্ষ দেলোয়ার বেগম,জেরা পরিষদেও সদস্য জয়ন্তী রানী সরদার, রোকেয়া রহমান,নুরজাহান রুমী,মহিলাদলের সাহিদা বেগম,আনজিরা খাতুন,সেতারা সুলতানা,পূর্ণিমা হোসেন, শাহনাজ ইসলাম কাওসারী জাহান মনি,মহিলা আওয়ামীলীগের জুবি ওয়ালিয়া তুলি,জেসমিন সুলতানা,লুৎফুন্নেসা,ভিানা পারভীন প্রমুখ।