ইউনিক ডেস্ক : অর্ধ-যুগের বেশি সময় আগে রক্তক্ষয়ী এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চ্যান ওচা দেশটির পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন। সোমবার পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি আগামী মে মাসে দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
২০১৪ সালে সহিংস অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারকে হটিয়ে থাইল্যান্ডের ক্ষমতা গ্রহণ করেন দেশটির তৎকালীন সেনাপ্রধান প্রায়ুত। আগামী নির্বাচনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার বিলিওনেয়ার মেয়ে পায়েটংটার্ন শিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হেরে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে তার।
পায়েটংটার্ন শিনাওয়াত্রার নেতৃত্বে গঠিত দেশটির প্রধান বিরোধী দল ফেউ থাই আগামী নির্বাচনে জোরালো প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু থাইল্যান্ডের জান্তার তৈরি করা ২০১৭ সালের সংবিধান দলটির প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাকে কঠিন করে তুলতে পারে।
সোমবার সরকারি এক রয়্যাল গেজেটে দেশটির সংসদ বিলুপ্তির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দেশের নির্বাচন কমিশন পরবর্তীতে ভোটের তারিখ নির্ধারণ করবে। তবে আগামী ৭ অথবা ১৪ মে দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য তারিখ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১৪ সালের অভ্যুত্থানের পর দ্বিতীয় এবং ২০২০ সালে ব্যাংককে তরুণদের নেতৃত্বাধীন গণতন্ত্রপন্থী ব্যাপক বিক্ষোভের পর দেশটিতে প্রথমবারের মতো এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দেশটিতে ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় এবং মহামারি পরবর্তী ধীরগতির পুনরুদ্ধারের মাঝে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নির্বাচনের অনানুষ্ঠানিক প্রচারণা চলছে।
২০১৯ সালের বিতর্কিত এক নির্বাচনের মাধ্যমে নিজের ক্ষমতায় থাকার পথ দৃঢ় করেন প্রায়ুত। থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে দীর্ঘসময় ধরে ক্ষমতায় থাকার বিরল নজিরও সৃষ্টি করেছেন ৬৮ বছর বয়সী এই সাবেক সেনাপ্রধান।
ভোটাররা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কাকে দেখতে চান, এই বিষয়ে রোববার একটি সমীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখা যায়, প্রায়ুত মাত্র ১৫ শতাংশের কিছু বেশি জনপ্রিয়তা নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছেন। থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে পায়েটংটার্ন শিনাওয়াত্রার তুলনায় ৩৮ শতাংশ পিছিয়ে আছেন প্রায়ুত।
থাইল্যান্ডের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ২ হাজার মানুষের ওপর একটি জরিপ পরিচালনা করেছে। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তারা ফেউ থাইকে ভোট দেবেন। আর প্রায়ুতের ইউনাইটেড থাই ন্যাশন পার্টিকে ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন মাত্র ১২ শতাংশ মানুষ।