এম.এম.জাহিদ হাসান হৃদয় (আনোয়ারা,চট্টগ্রাম): চলতি বছরে দ্বিতীয় ধাপে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়াই গত ৫ এপ্রিল থেকে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলাসহ সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত ঢিলেঢালা লকডাউন পালন হলেও সংক্রমণ আরো বেড়ে যাওয়ায় ১৪ এপ্রিল থেকে ১৬ মে পর্যন্ত কয়েক দাপে ‘কঠোর লকডাউন’ ঘোষণা করে সরকার। করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের কারণে গত ১৫ মে চলমান বিধি-নিষেধ বা ‘লকডাউন’ আরো এক সপ্তাহ বাড়িয়ে ১৭-২৩ মে পর্যন্ত করা হয়। আর এই লগডাউনে দূরপাল্লার যানবাহনসহ দেশের সকল পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ থাকলেও এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাগরকন্যা নামে খ্যাত পারকী সমুদ্র সৈকত (ঝাউ বাগান) এর রূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে হাজার হাজার পর্যটকরা ভীড় জমিয়েছে।
রবিবার (১৬ মে) বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,আনোয়ারা উপজেলাসহ আশেপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাইক,সিএনজি, প্রাইভেট কার সহ নানা যানবাহন করে আসছেন দর্শনার্থীরা। অনেককেই দেখা যায় মাইক,সাউন্ড নিয়ে ট্রাকে করে নেচে নেচে আসতে। কেউ আসছেন পরিবার নিয়ে আবার কেউবা বন্ধুদের সাথে। এসমস্ত পর্যটকদের মধ্যে যুবক-যুবতী থেকে শুরু করে রয়েছেন শিশু ও বৃদ্ধাও।
কেউ বাইক নিয়ে ছুটছে, কেউ ঘোড়া দৌড়াচ্ছে, কেউ সাগরের সৌন্দর্য উপভোগ করছে ঘুরে, কেউ বন্ধুদের সাথে মেতেছে ফুটবলে,কেউ সময় পার করছে জুয়াড়িতে, আবার কেউ ব্যস্ত সেল্পিতে। সমস্ত পারকী বীচ জুড়ে এইসমস্ত দৃশ্যই চোখে পড়ে।
তবে,মানুষের সমাগম বাড়লেও লক্ষ্য করা যায়না স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি। পর্যটকদের অধিকাংশের মুখে মাস্ক ছিলোনা,মানা হচ্ছিল না সামাজিক দূরত্বও। এবং খোলা রয়েছে স্থায়ী-আস্থায়ী বিভিন্ন দোকানপাট। বীচের যাওয়ার পথে ছিলোনা কোনো চেকপোস্ট। বীচের বিভিন্ন স্পটে প্রশাসনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও সন্ধার আগমুহূর্তে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ছাড়া আর তেমন কোনো অভিযান চোখে পড়নি।
বীচে ঘুরতে আসা ইলিয়াস নামের এক দর্শনার্থী বলেন,বছরজুড়ে করোনা মহামারীর কারণে সব কিছু বন্ধ থাকায় তেমন কোথাও যাওয়া হয়নি। তাই পরিবারের সকলকে নিয়ে একটু ঘুরতে এসেছি।
বীচে থাকা এক দোকানীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ঈদের আগে লগডাউনের কারণে তেমন কেউ আসতো না এখানে। সারা বছর ব্যবসা হয়নি। ঈদের দিন থেকে মানুষজন আসা শুরু করছে তবে প্রতিদিন বিকেল বেলা পুলিশ এসে সব কিছু তুলে দেয়।
পারকী বীচের পর্যটক এবং অভিযানের বিষয়ে উপজেলার সহকারী (ভূমি) কমিশনার তানভীর হাসান চৌধুরী’র সাথে কথা হলে তিনি বলেন,ঈদের পর থেকে দুই দিনই আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। এবং সার্বক্ষনিক পুলিশের মাধ্যমে পর্যটকদের বীচে যেতে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।