সাঁথিয়ায় নিখোঁজের তিন মাস পর যুবকের লাশ উদ্ধার : গ্রেফতার ৩

প্রকাশঃ ২০১৮-০১-২৩ - ১৯:৪০

ফারুক হোসেন,সাঁথিয়া(পাবনা) : পাবনার সাঁথিয়ায় পরকীয়ার জের ধরে নিখোঁজের প্রায় ৩ মাস পর মস্তক বিচ্ছিন্ন আবু সাঈদ (২৭) নামে এক যুবকের লাশ মঙ্গলবার উদ্ধার করেছে সাঁথিয়া থানা পুলিশ। সে উপজেলার করমজা ইউনিয়নের আটিয়া পাড়া গ্রামের মন্তাজ আলীর ছেলে। এ ঘটনায় পুলিশ ৩ ঘাতককে গ্রেফতার করেছে। এরা হলো উপজেলার বায়া গ্রামের ইকরামের ছেলে শামীম (২০) মোস্তফার ছেলে রাজিব (২৪) ও মঙ্গলগ্রাম গ্রামের মঈনুলের ছেলে ফখরুল (৪৩) ।
থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়, সাঁথিয়া উপজেলার আটিয়া পাড়া গ্রামের মন্তাজ আলীর ছেলে কাঠ মিস্ত্রী আবু স্ঈাদ গত ৩০ অক্টোবর/১৭ইং বাটালের ধার কাটাতে বাড়ি থেকে বের হয়। ছেলে বাড়িতে ফিরে না আসায় অনেক খোজাখুজির পর সাঈদের সন্ধান না পেয়ে গত ৪/১২/২০১৭ ইং তারিখে মন্তাজ আলী সাঁথিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করে। যার নং ১৪১ তাং ৪-১২-১৭ইং। থানায় দায়েরকৃত ডায়েরীর সুত্র ধরে এ এসপি সার্কেল বেড়া আশিস বিন হাসান এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে খোজ করতে থাকেন। তিনি সাঈদের মোবাইল ট্রাকিং করে সব তথ্য পেয়ে গত ২০/১/১৮ইং তারিখে রাজিবকে গ্রেফতার করে। এ ব্যাপারে মোন্তাজ আলী বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত রাজিবের স্বীকারোক্তিতে ফখরুল ও শামীমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘাতকদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে মঙ্গলবার এ এসপি আশিস বিন হাসানের নেতৃত্বে তায়জাল বাজারের পাশে ডোবা থেকে সাঈদের মস্তক ও পার্শ্ববর্তী খয়েরবাগান এলাকায় রফিকের মেহগনি বাগান থেকে সাঈদের কংকাল মৃতদেহ উদ্ধার করে। এ সময় লাশ দেখার জন্য এলাকার শত শত নারী পুরুষ ভীড় জমায়।
ঘটানার বিবরণে জানা যায়, পেশায় কাঠ মিস্ত্রি সাঈদ ফকরুলের বাড়িতে কাজ করতে যায়। এ সুযোগে ফখরুলের স্ত্রীর সাথে তার পরকিয়া গড়ে উঠে। এ পর্যায়ে ফখরুল মাদকাসক্ত মামলায় জেল হাজতে যায়। আর এ সুযোগে সাঈদ ফকরুলের বাড়িতে অবাধে যাতায়াত করতো। ফখরুল জেল হাজত থেকে বের হয়ে এসে বিষয়টি জানতে পারে। এতে ফখরুল ক্ষুব্ধ হয়ে সাঈদকে হত্যার জন্য আসামী রাজিবের সাথে আড়াই লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়। পরে রাজিব অপর আসামী শামীমকে সাথে নিয়ে সাইদকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে শামীম ও রাজিব কৌশলে সাঈদকে ইয়াবার খাওয়ার জন্য ডেকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী খয়ের বাগান এলাকায় আসে। শামীম জানায়, প্রথমে রশিদিয়ে গলায় শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর ফকরুলকে রাজিব ফোন দেয় যে সাঈদকে মেরে ফেলা হয়েছে দেখে যান। বিশ্বাস করাতে সাঈদের মস্তক কেটে নিয়ে পার্শ্বেই কলিমুদ্দিনের বাগানে গিয়ে ফখরুলকে দেখায়। আড়াই লাখ টাকায় চুক্তি হওয়া এ হত্যাকারীদের ঐদিন ১৯ হাজার টাকা দেয় এবং পুলিশের ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়। এতে শামীম ও রাজিব ক্ষুদ্ধ হয়ে সাঈদের মস্তক পাশ্ববর্তী তায়জাল বাজারের পাশে ফজরের ডোবায় ফেলে দিয়ে চলে যায়। এ লোহমর্ষক ঘটনায় এলাকায় মানুষের মনে হৃদয়বিদারক দৃশ্যর অবতরনা হয়।