সাঁথিয়ায় পুলিশের ভয়ে দু’গ্রাম পুরুষ শূণ্য

প্রকাশঃ ২০১৮-০২-১৭ - ১৭:২৭

সাঁথিয়া (পাবনা) সংবাদদাতাঃ পুলিশকে মারপিট করে হ্যান্ডকাফসহ মাদক ব্যবসায়ী পালানোর পর পরিত্যাক্ত অবস্থায় হারানো হ্যান্ডকাফ ফিরে পেলেও এখনও বাড়ি ছাড়া রয়েছে দুই গ্রামের পুরুষ সদস্যরা। পুলিশের আতংকে আসামীর বাবার মৃত্যু ও প্রবাসীর বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ। এপর্যন্ত পুলিশ এজাহার ভুক্ত মূল আসামীদের আটক করতে পারেনি।
সাঁথিয়া উপজেলার বহলবাড়িয়া ও পাইকপাড়া গ্রামের প্রতিটি বাড়ির পুরুষ এখন ঘর ছাড়া। থানার পুলিশ রাতে এসে এলাকার সহজ সরল ব্যক্তিদের আটক করছে এমন ভয়েই কেউ ঘরে থাকছে না বলে জানান, পাইকপাড়া গ্রামের ইব্্রাহীম (৫০), রশিদ মন্ডল (৬৫), মস্তাফা (৬০), দিপালী (৪০) ও বুলি খাতুন (৫০)। তাদের অভিযোগ পুলিশ এলাকার প্রতিটি ঘরে ঢুকে কৃষকসহ বিভিন্ন পেশার খেটে খাওয়া ব্যক্তিদের আটক করছে। পাইক পাড়া গ্রামের ৭ম শ্রেণির ছাত্র সোহাগ জানান, পুলিশ বুধবার রাতে আমাকে ডেকে তুলে চরথাপ্পর মেরে বিছানায় পানি ঢেলে রেখে যায়। এখনও আমি রাতে ঘুমের মধ্যে পুলিশের আতংকে চিৎকার করে উঠি। একই গ্রামের বিদেশ প্রবাসীর স্ত্রী রিনা খাতুন (৩৮) জানান, পুলিশ ওই রাতেই আমার বাড়ির বাইরের টিনের গেট ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে দরজা খুলতে বলেন। আমি ছোট ছেলে ও মেয়ে নিয়ে ডাকাতের ভয়ে আতংকৃত হই। পরে তারা পুলিশের পরিচয় দিলে আমি দরজা খুলি। তাদেরকে আমি বলি আমার বাড়িতে পুরুষ সদস্য নেই আপনারা কেন আমার গেট ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকলেন?
শনিবার সরেজমিনে রিনার বাড়িতে গিয়ে এসব দৃশ্য দেখা যায়। মেয়ের বিয়ের জন্য ছেলে পক্ষ আসবে জেনে বুৃহস্পতিবার গেটটি নতুন টিন দ্বারা মেরামত করা হয়েছে।
পাইক পাড়া গ্রামের প্রধান মোস্তফা জানান, মঙ্গলবার রাতে আটককৃত হাতেম, মুন্নাফ, ইউসুব ও নাসিরকে বুধবার থানায় দেখতে গেলে পুলিশ আমার নিকট আসামীদের রিমান্ড না নেবার জন্য ১৫ হাজার টাকা চায়। আমি টাকা দিতে না চাইলে এজাহারে আমার নাম ঢুকাবে বলে হুমকী দেয়।
এদিকে পাশ্ববর্তী এলাকাবাসী ও হ্যান্ডকাফ নিয়ে পালানো আসামীর আত্বীয়রা জানান ছেলেকে ধরিয়ে দেবার জন্য বাবা গফুরকে পুলিশ ভয় দেখালে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। মঙ্গলবার দুপুরে এলাকায় আবারও পুলিশ এসেছে এ কথা শুনে গফুর (৭০) হৃদরোগের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে দুপুরেই মারা যায়।
আসল অপরাধীদের আটকের নামে সাধারণ মানুষকে যেন পুলিশ হয়রানী না করে বলে পাবনা পুলিশ সুপারের নিকট দাবি করেন উপজেলার দুই গ্রামবাসী ।
সাঁথিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান ইনাম জানান, অভিযোগের বিষয় আমার জানা নেই। কেউ জড়িত থাকলে তার বির”দ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য ৪ ফেব্র”য়ারী রাতে আতাইকুলা থানার বনগ্রাম পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস,আই ওহেদ আলী ও কনষ্টেবল শামীম নিজ এলাকার বাইরে বহলবাড়ীয়া গ্রামে ইয়াবা ব্যবসায়ী আব্দুল গফুরের ছেলে আবুল হোসেনকে আটক করে। এসময় মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে মারপিট করে দাঁত ভেঙ্গে হ্যান্ডকাফসহ পালিয়ে যায়।