সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় স্ত্রীর দাবীতে নবম শ্রেনীর এক স্কুল ছাত্রী গত শুক্রবার থেকে তার প্রেমিক মিঠুন দাসের বাড়িতে অবস্থান করছে। বিষয়টি জানতে পেরে মিঠুনদাসসহ তার পরিবারের লোকজন ওই স্কুল ছাত্রী তাদের বাড়িতে যাওয়ার আগেই বাড়িতে তালা মেরে পালিয়েছে। এদিকে, বিয়ের ফাঁদে ফেলে নবম শ্রেণীর ওই স্কুল ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার পর তা ভিডিও করে বিভিন্ন মোবাইলে ছড়িয়ে দেওয়ারও অভিযোগও উঠেছে ওই যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানার ছোট কাশীপুর গ্রামে।
মিঠুন দাস (২৫) ওই গ্রামের মৃত্যুঞ্জয় দাসের ছেলে।
মিঠুন দাসের বাড়িতে অবস্থানকারি খুলনা শহরের সোনাডাঙার একটি কলেজিয়েট স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী শ্যামলী দাস(১৬) জানায়, তাদের একই গ্রামের মিঠুন দাস(২৫) পাটকেলঘাটা বাজারে একটি হার্ডওয়ার দোকানের কর্মচারি। দেড় বছর আগে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। স্থানীয় রাধা গোবিন্দ মন্দিরে ঠাকুরকে সাক্ষী রেখে মিঠুন তার কপালে সিঁদুর পরিয়ে দিয়ে স্ত্রীর মর্যাদা দেয়। বিষয়টি মিঠুন তার কাকাতো বোন টুম্পাকে বলে তাদের বাড়িতেই শারীরিক সম্পর্ক করতো। খুলনার ছাত্রীনিবাসে গেলে মোবাইলে তাদের কথাবার্তা হতো। করোনার কারণে তিন মাস আগে সে বাড়ি আসে। এরপরও বিভিন্ন স্থানে তাদের শারীরিক সম্পর্ক চলতো। সম্প্রতি সে মিঠুনকে স্ত্রী হিসেবে বাড়িতে তোলার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল। এতে মিঠুন তাদের অন্তঃরঙ্গ ভিডিও চিত্র সে নিজে ও বন্ধুদের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। বাধ্য হয়ে বিষয়টি সে তার বাবা ও মাকে অবহিত করে। বিষয়টি তার বাবা মিঠুনের বাবা ও মাকে জানায়।
স্কুল ছাত্রীর বাবা অনিল দাস জানান, তার মেয়ে শ্যামলীকে পুত্রবধু হিসেবে মেনে নিতে রাজী না হওয়ায় তারা বিষয়টি স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিদের অবহিত করেন। বিষয়টি নিয়ে গত ২২ আগষ্ট শুক্রবার সন্ধ্যায় স্থানীয় রাধাগোবিন্দ মন্দিরে মিঠুনের পরিবারকে ডাকেন এলাকাবাসী। মিঠুনের বোন ইউএনডিপি’র কর্মচারি চম্পা দাস বাড়িতে না থাকায় তারা এক সপ্তাহের সময় চান। গত ২৪ আগষ্ট তার (অনিল) বাড়িতে ও আর এক দফা বসাবাসি হয়। মিঠুনের পরিবার বিষয়টি মেনে নিতে রাজী না হওয়ায় গত ২৬ আগষ্ট বুধবার সন্ধ্যায় শ্যামলী নিজ বাড়িতে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যারও চেষ্টা করে। কোন উপায় না পেয়ে শ্যামলী স্ত্রীর দাবীতে তার প্রেমিক বাড়িতে অবস্থান করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। বিষয়টি জানতে পেরে ২৭ আগষ্ট বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে তালা লাগিয়ে মিঠুন দাস ও তার বাবা মৃত্যুঞ্জয় দাসসহ পরিবারের সদস্যরা অন্যত্র পালিয়ে যায়। এরপর ২৮ আগষ্ট শুক্রবার থেকে স্ত্রীর দাবিতে মিঠুনদের বাড়ির বারান্দায় অবস্থান করছে শ্রামলী দাস। বিষয়টি ট্রিপল নাইনে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন।
তবে মিঠুন দাসের প্রতিবেশী বিশ্বজিৎ দাস, সঞ্জয় দাসসহ কয়েকজন জানান, মিঠুন স্ত্রী হিসেবে শ্যামলীকে মেনে নিতে চাইলেও আপত্তি করছে তার বোন চম্পা ও বাবা মৃত্যুঞ্জয়। ফলে পরিস্থিতি পরপর জটিল হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মিঠুন দাসের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) জেল¬াল হোসেন জানান, ট্রিপল নাইনে ফোন করায় ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ কোন লিখিত অভিযোগ না দেওয়ায় পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিতে পারছেননা। স্থানীয় একটি মহল ভিকটিম পরিবারকে থানায় আসতে বাধা দিচ্ছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।