সেলিম হায়দার, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরায় চলতি রবি মৌসুমে সরিষার আবাদ কমেছে। চলতি মৌসুমে ৯ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সরিষা আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমিতে। আর এজন্য অসময়ের বৃষ্টি, জলাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন কারণকে দায়ী করছে কৃষি বিভাগ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি রবি মৌসুমে ৯ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদরে ৩ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে, কলারোয়ায় ৩ হাজার ৪৭৫ হেক্টর, তালায় ৪১০ হেক্টর, দেবহাটায় ১ হাজার ১২৫ হেক্টর, কালিগঞ্জে ৪১০ হেক্টর, আশাশুনিতে ২২০ হেক্টর ও শ্যামনগরে ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
কিন্তু নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সাতক্ষীরা সদরে ২ হাজার ৮২৫ হেক্টর জমিতে, কলারোয়ায় ৩ হাজার ৩৭০ হেক্টর, তালায় ৫৬০ হেক্টর, দেবহাটায় ১ হাজার ১০০ হেক্টর, কালিগঞ্জে ৩১০ হেক্টর, আশাশুনিতে ২০০ হেক্টর ও শ্যামনগরে ৪০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আরও জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার কৃষকরা বারি-১৫, বারি-১১, বারি-৯, বিনা-৪, তরী-৭ সহ বিভিন্ন জাতের সরিষার আবাদ করেছেন।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সুদুরডাঙ্গী গ্রামের কৃষক আজগর আলী বলেন, গত বছর এক বিঘা জমিতে সরিষা বুনেছিলাম। কিন্তু এ বছর জমিতে পানি জমে থাকায় আর সরিষা লাগানো সম্ভব হয়নি। সরিষা ক্ষেতে কৃষক
দেবহাটা উপজেলার বহেরা গ্রামের কৃষক আজিজুর রহমান বলেন, গত বছর দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছিলাম। কিন্তু এ বছর আমনের শেষ সময়ে বৃষ্টি হওয়ায় ধান উঠতে দেরি হয়ে যায়। এজন্য মাত্র ১০ কাঠা জমিতে সরিষা বুনতে পেরেছি। বাকি জমি অনাবাদি পড়ে আছে।
মাহমুদপুরের কৃষক রবিউল ইসলাম জানান, তিনি তিন বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা আবাদ করেছেন। ফুলে ফুলে ভরে গেছে তার সরিষা ক্ষেত। ভালো ফলনেরও আশা করছেন তিনি।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী আব্দুল মান্নান জানান, অসময় বৃষ্টি হওয়ার কারণে অনেকেরই ক্ষেতে সরিষা নষ্ট হয়েছে। একই সঙ্গে জলাবদ্ধতার কারণে অনেক কৃষকই সরিষার আবাদ করতে পারেননি। ফলে চলতি মৌসুমে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তবে, যেটুকু হয়েছে তাতে ভালো ফলন হলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।