রাহাত রাজা, সাতক্ষীরা : জেলা কৃষি সম্প্রাসরণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলাতে ৭৩ হাজার ৮৬২ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আবাদ হয়েছে আরো বেশি। অন্যদিকে উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৩ লক্ষ ৬২৬ মেট্রিক টন। চলতি সপ্তাহে মাঠ পর্যায়ে সারের দাম কেজি প্রতি এক-থেকে দুই টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে কৃষকরা জানান। অন্যদিকে পাইকারী ব্যবসায়ীদের দাবী চলতি সপ্তাহে বস্তা প্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা সারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সরবরাহ কম থাকায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে সার ডিলারদের অভিযোগ।
জেলা খামারবাড়ি সূত্র মতে, এবছর সাতক্ষীরা সদরে বোরোর আবাদ হয়েছে ২৩ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে। যা থেকে ধানের উৎপাদন ধরা হয়েছে ৯৭ হাজার ৫১৭ মেঃ টন। কলারোয়া উপজেলাতে আবাদ হয়েছে ১২ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে। সব ঠিক থাকলে ধান উৎপান হবে ৪৮ হাজার ৭৮৫ মেঃ টন। তালাতে আবাদ হয়েছে ১৮ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদিত ধানের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ৭৩ হাজার ৭৮ মেঃ টন। দেবহাটাতে আবাদের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৩০ হেক্টর এবং ধান উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ২৫ হাজার ১৮৯ মেঃ টন। কালিগঞ্জ উপজেলাতে আবাদের লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমিতে যা থেকে উৎপাদিত ধানের পরিমান ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৭৯৬ মেঃটন। আশাশুনিতে আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে যা থেকে উৎপাদিত হবে ২৭ হাজার ৫৪৪ মেঃটন। শ্যামনগর উপজেলাতে বোরোর আবাদ হয়েছে ০১ হাজার ৩৮৬ হেক্টর জমিতে যা থেকে উৎপাদিত ধানের পরিমান ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৭১৭ মেঃটন। বোরো রোপনের আগে বীজ তলা তৈরি করে কৃষকরা। জেলা খামারবাড়ি সূত্র মতে, এবছর সাতক্ষীরা জেলাতে ৩ হাজার ৬৯৩ হেক্টর জমিতে বীজ তলা তৈরির লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জিত হয় ৪ হাজার ৫৯৫ হেক্টর জমিতে। সরবরাহ বেশি থাকায় বোরো ধানের অনেক চারা নষ্ট হয়েছে বলে কৃষকরা জানান।
সাতক্ষীরা শহরের কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, তিনি এবছর দুই বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছে। ধানের বাড়ন ও ভাল। তিনি জানান, বিঘা প্রতি তার উৎপাদন খরচ দাড়াবে ১৭ হাজার টাকা এর মধ্যে বিঘা প্রতি বীজতলা তৈরিতে খরচ হয়েছে ২ হাজার টাকা। তার এক বিঘা জমিতে ১৮ মন ধান পাবে বলে তিনি আশা করছেন।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান জানান, জনবল সংকটের কারণে সব কৃষকের কাছে পৌছানো সম্ভব হয় না। তবে জেলায় কৃষি মেলার আয়োজনসহ বিভিন্নভাবে কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে থাকে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবছর সাতক্ষীরাতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।