সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সংগঠন। ক্রমান্বয়ে শক্তি হারাচ্ছে দলটি। সম্প্রতি জেলার শ্যামনগর, কালীগঞ্জ ও আশাশুনি উপজেলায় সম্মেলন ও কমিটি ঘোষণা নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। সাতক্ষীরা পৌরসভা ও সদর উপজেলা কমিটি নিয়ে ঘোষিত হয়েছে নানা সিদ্ধান্ত। সাতক্ষীরা দেবহাটায় বিএনপির উপজেলা শাখার সম্মেলন ঘিরে দু’গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করেছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং বিশৃঙ্খলা এড়াতে সম্মেলনস্থল ও আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সম্মেলনস্থলসহ আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আদেশে ওই এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিএনপির দু’গ্রুপের শীর্ষ নেতাদের সংঘাতে না জড়ানোর ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারির এ আদেশ বহাল থাকবে। এর আগে সাতক্ষীরার শ্যামনগর, কালীগঞ্জ ও আশাশুনি উপজেলায় বিএনপি নেতাকর্মীরা দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হলে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। সাম্প্রতিক সময়ে আধিপত্য বিস্তার ও ক্ষমতা দখলে মরিয়া হয়ে ওঠা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে দিশেহারা হয়ে পড়েছে দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এ ব্যাপারে বর্তমান বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতারা বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় নির্দেশনা ও জেলার শীর্ষ নেতাদের পরামর্শক্রমে সংগঠনকে গতিশীল করতে ইতোমধ্যেই যুগ্ম আহবায়কদের সমন্বয়ে একে একে উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড শাখার নতুন কমিটি অনুমোদন করেছেন বিএনপি।
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা বাস্তবায়নে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্তদের বাদ দিয়ে এসব ইউনিটের নতুন নেতৃত্বে দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতাকর্মীদের স্থান দেওয়ার জন্য বার বার নির্দেশনা দিচ্ছেন।বিএনপি নেতারা অভিযোগ করে বলেন, একসময় যেসব নেতা বিএনপি থেকে দূরে সরে আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থেকেছেন, আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষকতায় অবৈধ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন, স্বেচ্ছায় বিএনপির রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছেন; তারাই আবার ৫ আগস্টের পর রাজনীতির মাঠে আর্বিভুত হয়ে নানা ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছেন। আধিপত্য বিস্তারের জন্য এসব বিতর্কিত এবং চাঁদাবাজ, দখলবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে দলীয় কোন্দল সৃষ্টির জন্য বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকে দায়ী করেন তারা।
সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাড. সৈয়দ ইফতেখার আলী বলেন, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপির সম্মেলনকে ঘিরে দু’গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেয়ায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে প্রশাসনের ১৪৪ ধারা জারির বিষয়টি আমরা জেনেছি। দু’পক্ষের সাথে আলোচনা করে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে।