সুন্দরবন থেকে বিভিন্ন সরঞ্জামসহ ৮ বিষদস্যু আটক

প্রকাশঃ ২০২০-০৭-১৯ - ১৭:৫৬

খুলনা অফিস : খুলনা জেলা ডিবি পুলিশের বিশেষ অভিযানে দাকোপ থানাধীন কালাবগি সুন্দরবন এলাকা হতে ১। ০৪ টি বিভিন্ন সাইজের কাঠের তৈরী ডিঙ্গি নৌকা, ২। সর্বমোট ১২০০ ফুট মাছ ধরার জাল, ৩। মাছ মারার কীটনাশক ০৪ (চার) বোতল, ৪। বিপুল পরিমান কীটনাশক দিয়ে মারা মাছ’ সহ ০৮ জন গ্রেফতার। খুলনা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব, এস.এম শফিউল্লাহ (বিপিএম) মহোদয়ের নির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখা, খুলনার ইনচার্জ সেখ কনি মিয়া এর নেতৃত্বে এসআই (নিঃ) রাজিউল আমিন সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্স সহ দাকোপ থানাধীন সুন্দরবন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে গত ১৭/০৭/২০২০ তারিখ রাত্র ২৩.৩০ ঘটিকার সময় শ্রীনগর অবস্থান করাকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানিতে পারেন যে, দাকোপ থানাধীন কালাবগি সুন্দরবন এলাকার ভদ্রা নদীর খালের মধ্যে কিছু অসাধু ব্যাক্তি খালে কীটনাশক প্রয়োগ করে মাছ শিকার করিতেছে। উক্ত সংবাদের সত্যতা যাচাই ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করার নিমিত্তে তাৎক্ষনিকভাবে সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্স সহ ট্রলার যোগে দ্রুত রওনা হয়ে ১৮/০৭/২০২০ তারিখ ভোর অনুমান ০৪.৩০ ঘটিকার সময় দাকোপ থানাধীন কালাবগি সুন্দরবন এলাকার ভদ্রা নদীর খালের মধ্যে উপস্থিত হইলে আসামীগন পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে পালানোর চেষ্টাকালে সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সের সহায়তায় আসামি ১। মোঃ তুহিন মীর (৩২), পিতা- লুৎফর মীর, মাতা- মিনারা বেগম, ২। মোঃ সোহরাব সানা (৪০), পিতা- মৃত জিহাদ সানা, মাতা- রেবেকা বেগম, উভয় সাং- গোড়া খেজুরিয়া(ঢ্যাংমারী), (বানিয়াশান্তা ইউঃপিঃ, ৮ নং ওয়ার্ড), থানা-দাকোপ, ৩। দীপক সরকার (৫০), পিতা-মৃত রতন সরকার, মাতা-দূর্গা সরকার, সাং- গোনালী, (খর্ণিয়া ইউঃপিঃ ৪ নং ওয়ার্ড), থানা-ডুমুরিয়া, বর্তমান সাং-ঢাংমারী, (মুন্না পাটওয়ারীর বাড়ী ৬ নং ওয়ার্ড), থানা-দাকোপ, ৪। তপন সরকার ওরফে নুছুল (৩৪), পিতা- মৃত নিবাস সরকার, মাতা-উল্লাসিনী সরকার, সাং- গোনালী, (খর্ণিয়া ইউঃপিঃ ৪ নং ওয়ার্ড), থানা-ডুমুরিয়া, ৫। নিশীত মন্ডল (৩২), পিতা- কালিপদ মন্ডল, মাতা-কল্যাণী মন্ডল, সাং- ঢ্যাংমারী, ৬ নং ওয়ার্ড, থানা-দাকোপ, ৬। অলোক সরকার (৩৩), পিতা- মনিন্দ্র সরকার, মাতা- আন্না সরকার, সাং- গোনালী, (খর্ণিয়া ইউঃপিঃ ৪ নং ওয়ার্ড), থানা-ডুমুরিয়া, সর্বজেলা- খুলনা, ৭। সেলিম শেখ (২৭), পিতা-রেজাউল শেখ, মাতা-আম্বিয়া বেগম, ৮। মিরাজ মল্লিক (৫০), পিতা- নছরউদ্দীন মল্লিক, মাতা- রমেছা বেগম, সাং- হোগলডাঙ্গা, ২ নং ওয়ার্ড, উভয়থানা- রামপাল, জেলা- বাগেরহাট দেরকে ধৃত পূর্বক তাদের হেফাজত হতে আলামত ১। ০৪ টি বিভিন্ন সাইজের কাঠের তৈরী ডিঙ্গি নৌকা, ২। সর্বমোট ১২০০ ফুট মাছ ধরার জাল, ৩। মাছ মারার কীটনাশক ০৪(চার) বোতল, (প্রতিটি বোতল হইতে কিছু পরিমান কিটনাশক ব্যবহার করা হয়েছে) এবং নৌকা হইতে বিপুল পরিমান মরা মাছ উদ্ধার করেন। তন্মধ্যে সাদা রংয়ের ছোট পলিথিনে কীটনাশক মেশানা বিভিন্ন ধরনের ০৪(চার) ব্যাগ মাছ সংরক্ষণ করেন। পরবর্তীতে সাক্ষীদের মোকাবেলায় ১৮/০৭/২০২০ তারিখ সকাল ০৫.৩০ ঘটিকার সময় টর্চ লাইটের আলোতে বিধি মোতাবেক জব্দ তালিকা মূলে জব্দ করেন। এ সংক্রান্তে জেলা গোয়েন্দা শাখা, খুলনার এসআই (নিঃ)/ রাজিউল আমিন বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে দাকোপ থানায় বন আইনে মামলা দায়ের করেন।

সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সম্পদ গুলোর মধ্যে মাছ অন্যতম। সুন্দরবনের বুকের ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদ-নদী ও খালের প্রচুর পরিমানে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। জেলেরা অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় অবৈধভাবে বিভিন্ন প্রকার নিষিদ্ধ জাল ও কীটনাশক ব্যবহার করে মাছ আহরন করে থাকে। উক্ত কারণে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে যে সমস্ত নদ-নদী ও খাল রয়েছে সে সমস্ত নদ-নদী ও খালের আহরণের উপযোগী মাছ ব্যতীত সকল মাছের রেনু, পোনার ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে। কিছু কুচর্ক্রী জেলে মহল সুন্দরবনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে অবৈধ কীটনাশক ব্যবহার করে সকল প্রকার মাছের রেনু, পোনার ব্যাপক ক্ষতিসহ প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্ট করছে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্টকারী, ক্ষতিসাধনকারীদের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ, খুলনার অবস্থান ‘‘জিরো টলারেন্স’’। যারা এ সমস্ত কাজে জড়িত তাদের প্রত্যেকে আইনের আওতায় আনা হবে।